জাতীয়

১১৫৭ কোটি টাকা চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে ইসির চিঠি 

দেশের স্থানীয় সরকার, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনসহ অন্যান্য নির্বাচন আয়োজনে অতিরিক্ত ১ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া প্রশিক্ষণ খাতেও অতিরিক্ত ৭৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশন সূত্র থেকে জানা গেছে, সম্প্রতি নির্বাচনী এই অতিরিক্ত বরাদ্দ চেয়ে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারকে চিঠি দিয়েছেন ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর।  ২০২০-২০২১ অর্থবছরে পাওয়া বাজেটের সংশোধনী বাজেটে এ অতিরিক্ত টাকা চেয়েছে ইসি। 

ইসি সূত্র জানায়, এনআইডি নিবন্ধন অনুবিভাগের চাহিদার প্রেক্ষিত টেলিযোগাযোগ সরঞ্জামাদির জন্য সাত কোটি টাকা এবং  কম্পিউটার সফটওয়্যার ও ডাটাবেজ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১৫ কোটি টাকা চেয়েছে ইসি।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্বাচনী ব্যয় হিসাবে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে ৪৩৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার সংস্থান রাখা হয়েছিল, সেখানে সংশোধিত বাজেটে এক হাজার ৫৯০ কোটি ৯১ লাখ ৮২ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রশিক্ষণ খাতে ৬০ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছিল, সেখানে সংশোধিত বাজেটে ১৩৪ কোটি ৩০ লাখ টাকার বাজেট চাওয়া হয়েছে। ফলে নির্বাচনী ব্যয় খাতে অতিরিক্ত এক হাজার ১৫৭ কোটি ৫১ লাখ ৮২ হাজার টাকা এবং প্রশিক্ষণ খাতে অতিরিক্ত ৭৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা প্রয়োজন হবে।  একইসঙ্গে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের চাহিদার প্রেক্ষিত টেলিযোগাযোগ সরঞ্জামাদির জন্য বাজেটে বরাদ্দ না থাকলেও সংশোধিত বাজেটে ৭ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া কম্পিউটার সফটওয়্যার ও ডাটাবেজ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১৫ কোটি টাকা চেয়েছে ইসি।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, পৌরসভা সাধারণ নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদ সাধারণ নির্বাচন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সাধারণ নির্বাচন, উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচন এবং জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকারের শূন্য আসনের উপ-নির্বাচনসহ চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরে প্রায় চার হাজার ১০২টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

অর্থবছরের শুরুতেই বিশেষ কার্যক্রম নির্বাচনী খাতে এক হাজার ৩৬৮ কোটি ৪৭ লাখ ০৫ হাজার টাকার প্রাক্কলিত বাজেট বরাদ্দের চাহিদা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। চাহিদার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আলোচনা সাপেক্ষে চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরে নির্বাচন খাতে ৪৩৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার সংস্থান করা হয়েছে।  চলতি অর্থবছরে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন সাধারণ নির্বাচন, উপ-নির্বাচন ও পরিচালনা ও আইনশৃঙ্খলা ব্যয় বাবদ ৪৩৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার অতিরিক্ত এক হাজার ১৫৭ কোটি ৫১ লাখ ৮২ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট প্রয়োজন হবে।  নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে নির্বাচনী ব্যয়ের আর্থিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

এছাড়া নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রশিক্ষণ খাতে চলতি অর্থবছরের শুরুতেই ৩৬২ কোটি ৪৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকার প্রাক্কলিত বাজেট বরাদ্দের চাহিদা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। এ চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে চলতি ২০১০-২০২১ অর্থবছরে প্রশিক্ষণ খাতে ৬০ কোটি টাকা সংস্থান রাখা হয়েছে। এসব নির্বাচন ইভিএম ও ব্যালট পেপারের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত আনুমানিক ৬০ কোটি টাকার অতিরিক্ত ৭৪ কোটি ২৯ লাখ ৯৫ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট প্রয়োজন হবে।

এর আগে গত বছরের মে মাসে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রশিক্ষণ বিষয়ক নীতিমালা অনুসরণ করায় প্রশিক্ষণ খাতে প্রাথমিক প্রাক্কলিত চাহিদা ৩৬২ কোটি ৪৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকা কমিয়ে ১৩৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা সংশোধিত বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে।