জাতীয়

চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার হস্তান্তর

নির্মাণ শেষে চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার (সিবিএফইসি) আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করেছে চীনের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। এর ফলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাসহ বছরব্যাপী বিভিন্ন মেলা আয়োজনের সুযোগ সৃষ্টি হলো।

রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং চীনের পক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং হস্তান্তরপত্রে স্বাক্ষর করেন।

বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীনের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রদূত লি জিমিং, সম্মানিত অতিথি পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতেমা ইয়াসমিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শরিফা খান এবং প্রকল্প পরিচালক মো. রেজাউল করীম।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘চীন বাংলাদেশের বড় ব্যবসায়িক অংশীদার। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য দিন দিন বাড়ছে। চীনে রপ্তানির চেয়ে সেখান থেকে আমদানি হয় বেশি। বাংলাদেশ রপ্তানি পণ্য তৈরি করতে যন্ত্রপাতি এবং কাঁচামাল চীন থেকে আমদানি করে। চীন বর্তমানে বাংলাদেশের ৮ হাজার ২৫৬টি পণ্যের ওপর ডিউটি ফ্রি মার্কেট সুবিধা দিচ্ছে। চীনে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, পাটজাত পণ্য, চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি বাড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন এবং হাইটেক পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে বাংলাদেশে নতুন করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে আসছেন। এসব জোনে চীনারা বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন।’

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক মেলায় নিয়মিত অংশ নেয়। চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণের ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা সহজ হবে। এখন থেকে উন্নত পরিবেশে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্বলিত হলে এ বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা সম্ভব হবে। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার পাশাপাশি বছরব্যাপী এখানে বিভিন্ন মেলার আয়োজন করা সম্ভব হবে। আমাদের এক্সিবিশন সেন্টার না থাকায় বছরব্যাপী নিজস্ব রপ্তানি পণ্যের কোনো প্রদর্শনী কেন্দ্র ছিল না। এখন নিজস্ব রপ্তানি পণ্য প্রদর্শন করার সুযোগ হলো।’ 

উল্লেখ্য, পূর্বাচল নতুন শহরে ২০ একর জমির ওপর চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৩০৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এর মধ্যে চীনের অনুদান ৬২৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন এ এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণ করেছে। ৩৩ হাজার বর্গমিটারের ফ্লোর স্পেসের মধ্যে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে ২৪ হাজার ৩৭০ বর্গমিটার। এক্সিবিশন হলের আয়তন ১৫ হাজার ৪১৮ বর্গমিটার। এতে ৮০০টি স্টল আছে। দোতলা পার্কিং বিল্ডিংয়ে পার্কিং স্পেস ৭ হাজার ৯১২ বর্গমিটার। গাড়ি রাখা যাবে ৫০০টি। এক্সিবিশন বিল্ডিংয়ের সামনে খোলা জায়গায় আরও ১ হাজারটি গাড়ি রাখার সুযোগ আছে। এছাড়া, ৪৭৩ আসন বিশিষ্ট একটি মাল্টি ফাংশনাল হল, ৫০ আসন বিশিষ্ট একটি কনফারেন্স রুম, ছয়টি নেগোশিয়েশন মিটিং রুম, ৫০০ আসনের রেস্টুরেন্ট, শিশুদের খেলার স্পেস, নামাজের স্থান, দুটি অফিস রুম, মেডিক‌্যাল বুথ, ডরমেটরি/গেস্ট রুম, ১৩৯টি টয়লেট, বিল্ট ইন পাবলিক এড্রেস সিস্টেম, নিজস্ব ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, স্টোর রুম, সিএটিভি কন্ট্রোল রুম, অটোমেটেড সেন্ট্রাল এসি সিস্টেম, ইনবিল্ট ইন্টারনেট/ওয়াইফাই, আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, আলাদা রেজিস্ট্রেশন হল, আধুনিক ফোয়ারা, ইন বিল্ট পতাকা স্ট‌্যান্ড এবং রিমোট কন্ট্রোল/ইলেক্ট্রনিক প্রবেশপথ আছে।