জাতীয়

তরঙ্গ নিলাম: সরকারের আয় হবে ৩ হাজার কোটি টাকা

১৮০০ ও ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডের তরঙ্গ নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিলামে মোট প্রস্তাবিত ২৭.৪ মেগাহার্জ (১৮০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডে ৭.৪ এবং ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডে ২০) তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ থেকে সরকারের আয় হবে ভ্যাটসহ প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা।

সোমবার (৮ মার্চ) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) আয়োজনে এ নিলাম হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন নিলাম সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বক্তব্য দেন।

সকাল ১১টায় দেশের চার মোবাইল অপারেটরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শুরু হয় টেলিযোগাযোগ খাতের বহুল আলোচিত এ নিলাম। এবারের নিলামে ভিত্তিমূল্য ধরা হয় ২০১৮ সালের নিলামের বিক্রয়মূল্য অনুযায়ী। ১৮০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডের ১ মেগাহার্জ তরঙ্গ মূল্য ১৫ বছরের জন্য ৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হারে এবং ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডের ১ মেগাহার্জ তরঙ্গ মূল্য ১৫ বছরের জন্য ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হারে।

২০১৮ সালের নিলামে অপারেটরের চাহিদা অনুযায়ী ২-জি বা ৩-জি অথবা ৪-জি লাইসেন্সের মেয়াদে তরঙ্গ বরাদ্দ নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছিল। এবারের নিলামে প্রাপ্ত তরঙ্গ বরাদ্দের তারিখ থেকে ৫.৫৯ বছর মেয়াদকালের জন্য প্রযোজ্য চার্জের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভ্যাট যোগ করে প্রাপ্ত মোট চার্জের ২৫ শতাংশ অগ্রিম আগামী ২২ মার্চের মধ্যে পরিশোধ সাপেক্ষে সাময়িক তরঙ্গ বরাদ্দপত্র জারি করা হবে। তরঙ্গ বরাদ্দপত্র জারির তারিখ থেকে প্রতি এক বছর অন্তর বার্ষিক ১৫ শতাংশ হারে বাকি ৭৫ শতাংশ চার্জ পাঁচটি কিস্তিতে পাঁচ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।

কমিশনের স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার এ কে এম শহীদুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রায় ১২ ঘণ্টাব্যাপী নিলাম অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোন ১৮০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড থেকে ৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দরে ০.৪ মেগাহার্জ, ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড থেকে ২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দরে ৫ মেগাহার্জ এবং ৪৬.৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দরে ৫ মেগাহার্জ তরঙ্গ বরাদ্দ পেয়েছে। ফলে, ১৮০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডে গ্রামীণফোনের বর্তমান তরঙ্গ ১৯.৬ মেগাহার্জ থেকে ২০.০ মেগাহার্জে এবং ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডে গ্রামীণফোনের বর্তমান তরঙ্গ ১০ মেগাহার্জ থেকে ২০ মেগাহার্জে উন্নীত হলো।

রবি ১৮০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড থেকে ২.৬ মেগাহার্জ এবং ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড থেকে ২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দরে ৫ মেগাহার্জ তরঙ্গ বরাদ্দ পেয়েছে। ফলে, ১৮০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডে রবির বর্তমান তরঙ্গ ১৭.৪ মেগাহার্জ থেকে ২০.০ মেগাহার্জে এবং ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডে রবির বর্তমান তরঙ্গ ১০ মেগাহার্জ থেকে ১৫ মেগাহার্জে উন্নীত হলো।

বাংলালিংক ১৮০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড থেকে ৪.৪ মেগাহার্জ এবং ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড থেকে ৫ মেগাহার্জ তরঙ্গ বরাদ্দ পেয়েছে। সুতরাং, ১৮০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডে বাংলালিংকের বর্তমান তরঙ্গ ১৫.৬ মেগাহার্জ থেকে ২০.০ মেগাহার্জে এবং ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডে বাংলালিংকের বর্তমান তরঙ্গ ১০ মেগাহার্জ হতে ১৫.০ মেগাহার্জে উন্নীত হলো। 

টেলিটক ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডে অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক নিলামে অংশ নিয়েও শেষ পর্যন্ত কোনো তরঙ্গ নিতে পারেনি। ফলে, ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডে টেলিটকের বর্তমান তরঙ্গ ১০ মেগাহার্জ ব্যবহার করেই তাদের সেবা দিতে হবে। 

বরাদ্দকৃত তরঙ্গে ৯ এপ্রিল থেকে সেবা দিতে সক্ষম হবে অপারেটরগুলো। বিটিআরসি আশা করে, তরঙ্গ বরাদ্দ করায় মোবাইল টেলিযোগাযোগের মান বাড়বে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে মোবাইল প্রযুক্তির শুরুর দিকে ১৯৯৬ সালে তিনটি অপারেটরকে বিনামূল্যে তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।