জাতীয়

ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর ভয়ের কোনো কারণ নেই: আইজিপি

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর ভয়ের কোনো কারণ নেই। রাষ্ট্র, আইন ও জনগণ আপনাদের পাশে আছে। আপনারা (ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী) মামলা করুন, অবশ্যই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া  হবে। 

বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩২ লাখ লোক বসবাস করে । তারা তাদের সন্তানদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য মাদ্রাসা করেছে।  মাদ্রাসাগুলোতে ১৩ হাজার ছাত্র লেখাপড়া করছে। তাদের প্রতিদিন এক কোটি টাকা খরচ হয়।  এ টাকার যোগান ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী।  কিন্তু এখন আপনাদের চিন্তা করতে হবে আপনাদের ভূমি অফিস ও রেকর্ডরুম আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যার ক্ষতি আগামী ৫০ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীকে বহন করতে হবে।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন শেষে প্রেসক্লাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও আহত সাংবাদিকের দেখতে গিয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি আরও বলেন,  ইসলামী শিক্ষার নামে আমাদের আলেম সমাজ এখন দুই ভাগে বিভক্ত।  এক  রুহানি হুজুর, আধ্যাত্মিক শক্তি সম্পন্ন। অপরটি রাজনৈতিক।  রাজনৈতিক আলেম কারা কারা তাদের বিষয়ে খোঁজখবর রাখতে হবে।  একইসঙ্গে সেদিনের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে থাকবে তার সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের কাছে সরবরাহ করলেও যারা এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের সহজেই আইনের আওতায় আনা যাবে।

তিনি বলেন, আপনারা মনে রাখবেন শুধু  ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী নয়, সমগ্র বাংলাদেশে ১৮ কোটি মানুষ আপনাদের সঙ্গে আছে। আর  যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড করছে তাদের যেকোনো মূল্যেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিহত করবে।

এ সময় র‌্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, এসবির প্রধান মনিরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, পুলিশের ডিআইজি অপারেশনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সার্কিট হাউসে  সংবাদ সম্মেলনে পুলিশপ্রধান বলেন, পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫৭৪টি মাদ্রাসা রয়েছে। এসব মাদ্রাসায় প্রায় ১ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। যারা অতি দরিদ্র পরিবারের।  তাদের ধর্মের দোহাই দিয়ে কোমলমতি শিশুদের ব্যবহার করছে।  তারা আসলে  আধ্যাত্মিক কোনো ব্যক্তিত্ব নয়। তারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে এসব করছে।  এগুলো করে ধর্মের আড়ালে নিজেদের বা রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে।  তবে তারা যেন সে ধরনের কর্মকাণ্ড আগামীতে করতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন ২৬, ২৭ ও ২৮ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যে তাণ্ডবলীলা চালানো হয়েছে সেখানে পুলিশের কোনো গাফিলতি থাকলে অবশ্যই তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  আমরা এ ঘটনায় একাধিক তদন্ত কমিটিও করেছি। তদন্তে যাদের হামলা, সহিংসতা ও নাশকতায় সংশ্লিষ্টতা থাকবে অবশ্যই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। সাংবাদিকদের অপর প্রশ্নে তিনি আরও বলেন, অতীতে হেফাজত ইসলামের  এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে।  আর তারা যেসব তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে সেখানে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি করার কথা ছিল।  সেভাবেই তাদের মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত ছিল।