জাতীয়

ট্রাক-পিকআপ দেখলেই থামানোর চেষ্টা যাত্রীদের 

দেশে চলছে সাত দিনের ‘কঠোর লকডাউন’। আর এই লকডাউনের মধ্যে আজও ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছেন অনেকে। লকডাউনের কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় শুরু থেকেই প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস বা মোটরসাইকেলে করে যাত্রীরা ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। কিন্তু এসব পরিবহনের ভাড়া বেশি হওয়ায় এখন অনেকেই ট্রাক বা পিকআপের জন্য অপেক্ষা করছেন। ট্রাক বা পিকআপ দেখলে যাত্রীরা হাত উঠিয়ে থামানোর চেষ্টা করছেন। 

রোববার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর গাবতলী, আমিনবাজার এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। 

গাবতলী গরুর হাট সংলগ্ন এলাকায় দেখা গেছে পুলিশের কড়া নজরদারি। একটু পরপর চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। পুলিশের নজর এড়াতে যাত্রীরা গাবতলী থেকে সামনে গিয়ে আমিনবাজার ব্রিজের ওপরে গিয়ে দাঁড়িয়ে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল পিকআপ বা ট্রাকের জন্য অপেক্ষা করছেন।

আমিনবাজার ব্রিজের ওপরে দাঁড়িয়ে থাকা এক যাত্রী মোহাম্মদ আব্বাস আহমেদ ট্রাক থামানোর চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘আমি যাব খুলনায়। করোনার কারণে দেশে লকডাউন চলছে। শুনেছি লকডাউন আরও বাড়তে পারে। তাই ঢাকায় থেকে কী করব। সামনে ঈদ। এজন্য এখনই ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছি। গাবতলী এসে কয়েকটি প্রাইভেটকার পেলাম। ঢাকা থেকে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত জনপ্রতি যাচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। আমার কাছে অনেক বেশি মনে হচ্ছে। এছাড়া, মোটরসাইকেলে জন প্রতি এক হাজার থেকে বারোশো টাকা চাচ্ছে। এতো টাকা দিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য আমার নেই। তাই ট্রাক বা পিকআপ জন্য অপেক্ষা করছি। এইসব পরিবহনে কিছুটা কম ভাড়ায় যাওয়া যাবে।’

আমিনবাজারে অপেক্ষা করা ফরহানা নুপুর নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘লকডাউনের কারণে গণপরিবহন চলছে না। এদিকে সামনে ঈদ। শুনছি ঈদ পর্যন্ত লকডাউন থাকতে পারে। তাই আগেভাগেই বাড়ি চলে যাচ্ছি। বাস চলছে না এজন্য আমিনবাজারের এখান থেকে ভেঙে ভেঙে আরিচা ঘাট পর্যন্ত যাওয়ার চেষ্টা করছি। আমিনবাজার থেকে অটোরিকশায় করে সাভার যাবো। সাভার থেকে আবারও অটোরিকশা-লেগুনা পাওয়া যায় শুনেছি। এসব পরিবহনে গেলে ভাড়া কিছুটা কম।’  

তিনি বলেন, ‘বাস না চলায় প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল ড্রাইভাররা এক প্রকার ডাকাতি শুরু করেছে। আমাদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তারা কয়েক গুণ বেশি ভাড়া চাচ্ছে। তারা ভালো করেই জানে যে আমাদের বাড়ি যেতেই হবে। এই সুযোগ নিয়ে আমাদের মতো সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।’  

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পুলিশের চেকপোস্ট থাকায় গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকা এবং আমিনবাজার ব্রিজ এর আগ পর্যন্ত কোনো ধরনের পরিবহন যাত্রী উঠা নামা করছে না। চালকরা জানান, পুলিশ ধরতে পারলে দুই থেকে চার হাজার টাকার মামলা দিচ্ছে।  এজন্য আমিন বাজার ব্রিজের ওপর থেকে শুরু করে আমিনবাজার ব্রিজের ওপর পর্যন্ত দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কারের। পাশাপাশি রয়েছে রিকশা ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা।’