জাতীয়

‘নারী উদ্যোক্তারা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন’

দেশের নারী উদ্যোক্তাদের পণ্যের গুণমান ভালো হওয়া সত্বেও পাশের দেশের নারী উদ্যোক্তাদের তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে। এর কারণ হিসেবে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিডব্লিউসিসিআিই)।

এ নিয়ে শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার। গবেষণায় মোট ১২৫ জন স্টেকহোল্ডারের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এছাড়াও দেশের সফল নারী উদ্যোক্তাদের কেস স্টাডি সংগ্রহ করা হয়।

এ উপলক্ষে ‘বাংলাদেশে নারী উদ্যোক্তাদের আমদানি রপ্তানি বিষয়ে ন্যাশনাল পলিসি ডায়লগ’ আয়োজন (ভার্চুয়াল) করেছে বাণিজ্য সংগঠনটি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিডব্লিউসিসিআই সভাপতি সেলিমা আহমাদ।   প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। 

বক্তব্যে সেলিমা আহমাদ বলেন, পাশের দেশগুলোর সঙ্গে আমদানি ও রপ্তানি অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের দেশের নারী উদ্যোক্তারা  বেশকিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন।  তারা খুব কম দামে অনেক পণ্য গুণগতমানসহ তৈরি করা সত্বেও, আন্তর্জাতিক বাজারে এমনকি প্রতিবেশী দেশগুলো যেমন- ভারত, নেপাল, ভুটান এবং মিয়ানমারে তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারছেন না এবং সেসব দেশের নারী উদ্যোক্তাদের তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে।

নারী উদ্যোক্তাদের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তিনি বলেন, পুঁজির অভাব, অপর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা ও সক্ষমতার অভাব, মাউন্টিং কেয়ার ওয়ার্ক, জেন্ডার সংবেদনশীলতার অনুপস্থিতি, অবকাঠামোগত অপ্রতুলতা ও পরীক্ষাগারের সুযোগ-সুবিধার অভাব, পরিবহন ব্যয় বেশি, স্কেলিং ব্যবসায় চ্যালেঞ্জ, অভিযোগ নিরসন ব্যবস্থা নেই এবং তথ্য ও ডিজিটাল প্রযুক্তির স্বল্পতা বিশেষভাবে উল্লেখ্যযোগ্য।

 প্রধান অতিথি এম এ মান্নান বলেন, মহামারির এই সময়ে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এটি একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।  বর্তমান সরকার নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের উপর অত্যন্ত জোর দিচ্ছেন এবং এই দিক দিয়ে নারীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবদিক দিয়ে নারীদের সহযোগিতা করার লক্ষ্যে সরকার একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা আপনাদের সব বিষয়ে পাশে আছি।

নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের চ্যালেঞ্জগুলোর জন্য উইমেন চেম্বারের সুপারিশ বৈদেশিক বাণিজ্য, শিল্প, অর্থনৈতিক ও অন্যান্য নীতিমালা গুলিতে জেন্ডার স্পেসিফিক বিষয় অর্থাৎ নারীদের বিষয় অন্তর্ভুক্তকরণ; নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশ গ্রহণের ফ্রি হ্রাস করণ।  আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশ গ্রহণের জন্য সরকারিভাবে সাবসিডি ও প্রণোদনা দেওয়া; নারী উদ্যোক্তাদের আয়কর ট্যাক্স বা মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) হ্রাস করণ; ট্যাক্স প্রদান সহজকরণ এবং দেশীয় উৎপাদনকারীদের ভ্যাট ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ করা এবং যা আমদানি ও রপ্তানিকারী উদ্যোক্তাদের কভার করবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, ব্যাংক, বিমা, আমদানি-রপ্তানি কন্ট্রোলার অফিস, বর্ডার এবং শুল্ক অফিসসহ সব অফিস জেন্ডার সংবেদনশীল করা এবং নারী উদ্যোক্তাদের অভিযোগ লিপিবদ্ধ করা ও তার ত্বরিত জবাব দেওয়ার ব্যবস্থা করা এবং এসকল অফিসে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য হেল্প ডেক্স বা নারী অফিসার নিয়োগ দেওয়া সুপারিশ করা হয়।