জাতীয়

ফ্রিল্যান্সারদের ১০ শতাংশ রপ্তানি ভর্তুকি দেওয়ার সুপারিশ

আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে বাংলাদেশ থেকে ফ্রিল্যান্সারদের আইটি খাতে সেবা রপ্তানির বিপরীতে ১০ শতাংশ রপ্তানি ভর্তুকি দেওয়ার সুপারিশ করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এতে দেশে বৈধপথে রেমিট্যান্স আসার হার বাড়বে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে লেখা এক চিঠিতে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী এ সুপারিশ করেছেন বলে অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

প্রতিমন্ত্রী তার চিঠিতে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ডিজিটাল বাংলাদেশ নিনির্মাণে ১২ বছরে আইসিটি খাতে বহুমুখী সংস্কার এবং বিপল পরিমাণ বিনিয়োগের ফলে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে ২০৩০ সালের মধ্যে আইসিটি খাতে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা আমাদের তৈরি পোশাক খাতকে ছাড়িয়ে যাবে। শুধু বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন নয়, ইতোমধ্যে কয়েকটি আইসিটি কোম্পানি আন্তর্জাতিক সম্মান (সিএমএমআই) অর্জন করেছে। দেশের দ্রুত বর্ধনশীল আইসিটি খাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হচ্ছে ফ্রিল্যান্সার উদ্যোক্তাদের দ্বারা অর্জিত রপ্তানি আয় যা, পরোক্ষভাবে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। দেশের তরুণ ফ্রিল্যান্স উদ্যোক্তাদেও বিস্ময়কর আবির্ভাব ঘটেছে যার কারণে বাংলাদেশ বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে এই সাবসেক্টরে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার জানামতে বর্তমানে প্রায় ৫ লাখ উদ্যোক্তা সক্রিয় আছে। এসব উদ্যোক্তারা বর্তমানে বার্ষিক ১০ কোটি ডলার আয় করে থাকে।  আর এ সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।  আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী ফ্রিল্যান্সার উদ্যোক্তাদের একই প্ল্যাটফর্মে এনে তাদের পেশার স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে আইডি কার্ড প্রাদন অনুষ্ঠান ভার্চুয়ালী উদ্বোধন করেন। এই আইডি কার্ড দিযে ফ্রিল্যান্সারদের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার উৎসের আইনগত বৈধতা ও পরিমাণ যাচাই করা সম্ভব হবে। 

ফ্রিল্যান্সারদের মতো বৃহৎ প্রশিক্ষিত জনশক্তিকে অর্থনৈতিক শক্তিতে রূপান্তরের মাধ্যমে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে তাদের আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া যুক্তিসঙ্গত হবে বলে প্রতিমন্ত্রী মনে করেন।

অর্থমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি প্রবাসীদের বিশেষ আর্থিক সুবিধা ছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাস্তব বিবেচনায় সম্প্রতি ২ শতাংশ হারে প্রবাসীদের নগদ সহায়তা  দিচ্ছে।  এ প্রণোদনা পাওয়ার ফলে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বেশি করে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাচ্ছে, যা আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আইসিটি খাতে রপ্তানি বিকাশে অর্থমন্ত্রণলয়ের সুদূও প্রসারী উদ্যোগের ফলে যৌক্তিক ভাবেই ২০১৮ সালের গোড়ার দিকে সফওয়্যার, আইটিইএস ও হার্ডওয়্যার এর আওতাভুক্ত পণ্য ও সেবা খাতে ১০ শতাংশ হারে রপ্তানিকারককে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে যা বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে ৩ নম্বর সার্কুলারের মাধ্যমে বস্তাবায়িত হয়েছে।  কিন্তু ঐ সার্কুলারে রপ্তানি ভর্তুকি প্রাপ্তব্য তালিকায় এমন কিছু সেবা/পণ্যের উল্লেখ রয়েছে যা ফ্রিল্যান্সারদের কর্তৃক সম্পাদিত হওয়া সত্ত্বেও ব্যক্তি পর্যায়ে এই ভর্তুকির সুবিধা প্রাপ্যতা রাখা হয়নি। ফ্রিল্যান্সারদের এ ভর্তুকির আওতায় আনা হলে তাদের রপ্তানি আয়ের পুরো অর্থ বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আসবে এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব রাখবে।

এ অবস্থায়, বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশক মুদ্রার উপর ১০ শতাংশ হারে রপ্তানি ভর্তুকি সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার সুপারিশ করেছেন জুনাইদ আহমেদ পলক।