জাতীয়

ঈদে বাড়িফেরা:  ঝুঁকি বেশি ভাড়াও বেশি

রাত পোহালেই শুক্রবার (১৪ মে) ঈদুল ফিতর।  প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে হবে।  করোনা সংক্রমণ রোধে সারা দেশে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ।  তবে ঈদযাত্রায় মানুষ ছুটছে আগের মতোই। বাস বন্ধ থাকায় কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়েই প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে যাত্রা করতে হচ্ছে বাড়ির পথে।  সামর্থ্য না থাকায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন নিম্ন-মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ। এরপরেও  কয়েকগুন বেশি ভাড়া দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার (১৩ মে) রাজধানীর সায়েদাবাদ টার্মিনাল, রায়েরবাগ, শনিরআখড়া বাসস্ট্যান্ড ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

সকাল থেকে ঢাকা-মাওয়া সড়কে গাড়ির চাপ লক্ষ্য করা গেছে। গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকলেও অনেকে মোটারসাইকেলে, প্রাইভেটকার, ট্রাক, লরি ও পিকআপ ভ্যানে যাত্রী করে বাড়ি যাচ্ছেন। অধিকাংশ মোটরসাইকেলেই ঝুঁকি নিয়ে মালামালসহ তিনজন যাত্রী চলাচল করতে দেখা গেছে।

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ১৮০০ টাকা থেকে ২৭০০ টাকা, লক্ষ্মীপুরের হায়দারগঞ্জ ১৬০০টাকা থেকে ২৪০০ টাকা, কুমিল্লায় ৯০০ টাকা থেকে ১২০০ ভাড়া হাকাচ্ছেন প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস চালকরা।

দূরপাল্লার বাস চলাচল না করায় কয়েকগুণ বেশি ভাড়া নিচ্ছে প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাসগুলো। আগে যেখানে ভাড়া ছিল ৪০০-৫০০ টাকা, তা এখন বাড়িয়ে ১৫০০-২২০০ টাকা ভাড়া নিচ্ছেন চালকরা। যারা অল্প আয়ের মানুষ তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে, ট্রাক, লরি ও পিকআপ ভ্যানে যাত্রী করে বাড়ি যাচ্ছেন।

চট্টগ্রামের বাসিন্দা বোরহান মিয়া বলেন, করোনায় চাকরি আছে বেতন নাই।  ঢাকা বসে কি খাবো।  তাই বাড়ি যাচ্ছি।  অন্যান্য সময় বাসে চট্টগ্রাম ৪০০-৫০০ টাকায় ৩০০ টাকা নিলেও এখন প্রাইভেটকারে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ১৮০০ টাকা থেকে ২৭০০ টাকা হাজার টাকা ভাড়া দাবি করছে।  বাড়ি তাই দামাদামি করে ২২০০ টাকায় উঠেছি।  আর যারা অল্প আয়ের মানুষ তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছে।  

একটি প্রাইভেট ফার্মে  কর্মরত  আবুল কাশেম  স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে যাবেন লক্ষ্মীপুর যাবেন। তিনি বলেন, ভোরে সাড়ে ৪টায়  সায়েদাবাদ এসেছি।  প্রাইভেটকারে ভাড়া অনেক বেশি।   লক্ষ্মীপুরে জনপ্রতি ভাড়া হায়দারগঞ্জ ১৬০০টাকা থেকে ২৪০০ টাকা যাচ্ছে। তাও গাদাগাদি করে নিচ্ছে। আগে বাস চালকদের কাছে, এখন প্রাইভেটকার চালকদের কাছে আমরা জিম্মি।  কি আর করার ২০০০ টাকা ভাড়া  মিটিয়ে  ঈদ করতে মায়ের কাছে যাচ্ছি।

সায়েদাবাদে কুমিল্লার চৌদ্ধগ্রাম উপজেলার গৃহবধূ নুরী বেগম বলেন, আমার ছেলে যাত্রাবাড়ীর একটি একটি হাফেজি ও ইয়াতিম খানায় থেকে পড়ে।  ছেলেকে ঢাকা থেকে আনতে ঢাকা-কুমিল্লা আসতে প্রাইভেটকারে ভাড়া বেশি চাওয়ায় পিকআপ ৬০০ টাকা দিয়ে ভ্যানেই রওনা হয়েছে।

কুমিল্লার দাউদকান্দির বাসিন্দা সুলতান হোসেন বলেন, মামা হাসপাতালে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি।  তাকে দেখতে আমরা দুই ভাই এসেছিলাম।  মোটরসাইকেলে ১২০০ টাকা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।

সুলতান নামের মাইক্রোবাস চালকরা বলেন, ঈদকে সামনে রেখে সড়কে প্রাইভেটকার চালাতে চাঁদা দিতে হয়। প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস ধরে পুলিশ মামলা দেয়।  এ কারণে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নিতে হচ্ছে।  

সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে দায়িত্বরত যাত্রাবাড়ী থানার এএসআই  সবুজ বলেন, ঢাকা থেকে কোন বাস ছেড়ে যাচ্ছে না।  রাস্তায় অনেক চেকপোস্ট আছে। মাইক্রোবাসের বিষয়ে সরকারি বিধি-নিষেধ না থাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে। আজ চার যাত্রী অভিযোগ করেছেন এবং দুই প্রাইভেট চালকের নামে মামলা  দিয়েছি।