বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘আগামী ২০২৫ সালে ১৪০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে চা শিল্পের রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। চা উৎপাদন বেড়েই চলছে। একই সঙ্গে বাড়ছে চাহিদা। বিদেশেও বাংলাদেশের চায়ের বিপুল চাহিদা আছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে চা তেমন রপ্তানি করা যাচ্ছে না। চায়ের উৎপাদন বাড়িয়ে রপ্তানির চেষ্টা করা হচ্ছে।’
রোববার (৬ জুন) ‘বাংলাদেশের চা শিল্প: সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। প্রথম জাতীয় চা দিবস উপলক্ষে জুম প্ল্যাটফর্মে এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ চা বোর্ড।
ড. মঈদউদ্দীন আহমেদের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন—বাংলাদেশীয় চা সংসদের সভাপতি এম শাহ আলম, টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শাহ মঈনুদ্দীন হাসান, পঞ্চগড় টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিরুল হকসহ চা শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং গণমাধ্যমকর্মীরা।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে চায়ের উৎপাদন বাড়াতে উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। সরকার প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। চায়ের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার জন্য কাজ করা হচ্ছে। চা শিল্পে বঙ্গবন্ধুর স্পর্শ আছে। তিনি চা শিল্পের উন্নয়নের জন্য অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন। চা শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের কল্যাণে তিনি অনেক পদক্ষেপ নিয়েছেন। বর্তমান সরকারও এ বিষয়ে সচেতন আছে। চা শিল্পের উন্নয়নে কাজের ধারা অব্যাহত রেখেছে। নতুন চায়ের বাগান বাড়ানো, নতুন জাত উদ্ভাবন, উৎপাদন বাড়ানো এবং ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করে যথাযথ বাজারজাত করার বিষয়ে সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘২০২৫ সালে চায়ের সম্ভাব্য অভ্যন্তরীণ চাহিদা হবে ১২৯ মিলিয়ন কেজি। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ১১ মিলিয়ন কেজি চা রপ্তানি করা সম্ভব হবে। চা বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি পণ্য হবে বলে আশা করা যায়। আমাদের চা উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা আছে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ৯৬.০৭ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। বাংলাদেশ ২০২০ সালে ২২টি দেশে ২.১৭ মিলিয়ন কেজি চা রপ্তানি করেছে, যা ২০১৯ সালের রপ্তানির তুলনায় প্রায় ২৬০ শতাংশ বেশি। দেশের উত্তরাঞ্চলে চা উৎপাদনে আশাব্যঞ্জক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। সেখানে দিন দিন চায়ের উৎপাদন বাড়ছে। সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালালে চা শিল্পের রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করা সম্ভব।