জাতীয়

নেপাল-ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি জুলাইয়ে

দেশের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে নেপাল ও ভুটান থেকে ৭০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে আগামী জুলাই মাসে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

সম্প্রতি সরকার দেশে ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ প্রসঙ্গে রোববার (২৭ জুন) সচিবালয়ে বিদ্যুৎ বিভাগে সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্লিখিত তথ্য জানান।

কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সংকট তৈরি হবে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করলে কোনো সংকট তৈরি হবে না। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো স্থাপনে নানা কারণে বিলম্ব হচ্ছিল। তাই, বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সেভাবেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক গ্রিড ব্যালান্সের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চূড়ান্ত ধাপে আছি। এখন আর কোনো সংকট নেই।’

অনেকে সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করছেন, এ তথ‌্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখনও সৌর বিদ্যুতের দাম বেশি। আমরা চাই, সবার জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে। যত দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে, দেশ তত দ্রুত উন্নত হবে।’

সময়মতো উৎপাদনে আসতে না পারায় সরকার যে ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাতিল করেছে, সেগুলো হলো—পটুয়াখালী ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, উত্তরবঙ্গ ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাওয়া ৫২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঢাকা ২৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, চট্টগ্রাম ২৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, খুলনা ৫৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, মহেশখালী ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং সিপিজিসিবিএল-সুমিতোমো ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র।

এর আগে দেশের ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর পরিবর্তে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ব্যবহার বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সূত্র জানায়, পায়রায় কয়লাভিত্তিক ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে ৬০০ মেগাওয়াট। এটি বাংলাদেশ-চীনের যৌথ প্রকল্প। এছাড়া, রামপালের ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, চট্টগ্রামের ১২২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুকেন্দ্র, বরগুনার ৩০৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ীর ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং কক্সবাজারের ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মাঠ পর্যায়ের কাজ চলছে।

সূত্র জানায়, পায়রার আগে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ার ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দেশের একমাত্র কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল। মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রে ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।