জাতীয়

ঈদযাত্রায় উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি

১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে শেষে হয়েছে কঠোর লকডাউন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মানুষ গ্রামে যেতে পারবে কি না তা নিয়ে শঙ্কায় ছিল। ঈদুল আজহা উদযাপন, জনসাধারণের যাতায়াত, ঈদ পূর্ববর্তী ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা, দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে বিধিনিষেধ ১৫ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত শিথিল করা হয়েছে। চলছে সবধরনের গণপরিবহন, ট্রেন, লঞ্চ। এক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে ৫টি শর্তও দেওয়া হয়। তবে অধিকাংশ শর্তই মানা হচ্ছে না। 

গণপরিবহনের চলার সুবিধার্থে যাত্রীদের যাত্রা কিছুটা স্বস্তি হলেও উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) সকালে রাজধানীর সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কিছুটা ঝক্কি-ঝামেলা এড়াতে অনেকে একটু আগেই পরিবার নিয়ে ঢাকা ছাড়ছেন। সকাল সকাল তারা বাসস্ট্যান্ডে এসে হাজির হয়েছেন। কাউন্টারে এসে টিকিট কাটছেন। অনেকে আবার অনলাইনেও টিকিট কেটেছেন।  সময়মতো বাসও ছেড়ে যাচ্ছে। যাত্রীদের কাউন্টারে এসে বসে থাকতে দেখা যায়।  কেউ দাঁড়িয়ে আছেন। তবে সামাজিক দূরত্ব মানার ব্যাপারে তারা ছিলেন উদাসীন। বাসের স্টাফ বা যাত্রীদের অনেককে মাস্ক পড়তে দেখা যায়নি। গাড়িতে ওঠার আগে যাত্রীদের জন্য স্যানিটাইজারের ব্যবস্থাও রাখা হয়নি।  যাত্রীরা গাড়িতে ওঠার সময় স্টাফরা গেটেই দাঁড়িয়ে থাকেন। তবে এক আসন ফাঁকা রেখে চলবে অধিকাংশ বাস। ভাড়া নেওয়া হচ্ছে সরকার নির্ধারিত ৬০ শতাংশ বেশি। তবে কিছু কিছু বাসে দেখা যায়, দুই সিটে দুজন বসে যাচ্ছেন।  এক্ষেত্রে তাদের ৬০ শতাংশ হারে বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে।

এদিকে, বাস কাউন্টারের কর্মচারীরা বলছেন, লকডাউনের আগে যাত্রীর সংখ্যা যেমন ছিল এখনো তেমনি আছে। যাত্রীর চাপ নেই। তবে ঈদের দুই দিন আগে যাত্রীর সংখ্যা কিছুট বাড়তে পারে জানান তারা।

ছেলের স্কুল এবং নিজের কর্মস্থান বন্ধ থাকায় ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জে যাচ্ছেন জাহিদুর রহমানের পরিবার। আগেই কেটে রেখেছেন বাসের টিকিট। এসে নির্ধারিত সময়ে গাড়িও পেয়েছেন। 

তিনি বলেন, ছেলের স্কুল বন্ধ। বাড়ি যাওয়ার বাইনা ধরেছে।  নিজেরও অফিস বন্ধ। পরে ভিড় বাড়তে পারে। এই আশঙ্কায় একটু আগেই চলে যাচ্ছি।

গণপরিবহনের ক্ষেত্রে শুধু এক আসন ফাঁকা রাখার বিষয়টি লক্ষ্য করা গেছে। অন্য বিষয়ে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। যাত্রীদের জন্য রাখা হয়নি স্যানিটাইজার। যাত্রীরা মাস্ক না পড়লেও তাদের এ বিষয়ে কিছু বলছে না কর্তৃপক্ষ। বরং যাত্রী গাড়িতে ওঠার সময় অনেক স্টাফকে গেটে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

যাত্রীরা গাড়িতে ওঠার সময় শাওন নামে শ্যামলী পরিবহনের এক স্টাফকে গেটে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, এক সিট ফাঁকা রেখেই তো বাস চলছে। যাত্রীরাও মাস্ক পড়ছে। স্যানিটাইজারের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন,‘কোম্পানি না দিলে আমরা কেমনে দেবো।’

আল মোবারাকা পরিবহনের এক স্টাফ জানান, যাত্রীদের তেমন চাপ নেই।  গার্মেন্টস ছুটি হলে সোমবার থেকে হয়তো যাত্রীর চাপ কিছুটা বাড়বে। 

স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কি না এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা যাত্রীদের মাস্ক পড়ে গাড়িতে উঠতে বলছি। গাড়িও ধোয়া-মোছা করেছি। মোটামুটি মানাই হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি।  বলে-কয়ে আর কতক্ষণ মানানো যায়।

এদিকে, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে মাওয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে বাসগুলোতে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। ঠাসাঠাসি করে যাত্রীদের গাড়িতে উঠতে দেখা যায়।