বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র নতুন সৈনিকদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, শৃঙ্খলা হচ্ছে সৈনিকের মূল পরিচিতি। আদেশ ও কর্তব্য পালনে যে কখনো পিছপা হয় না সে-ই প্রকৃত সৈনিক। দেশপ্রেম, সততা, বুদ্ধিমত্তা, নির্ভরযোগ্যতা, আনুগত্য, তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি।
শনিবার বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র ফুলবাড়ী ব্যাটালিয়ন এর ৯৬তম রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ ও শপথ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজিবি’র সার্বিক উন্নয়নে বর্তমান সরকারের বাস্তবায়িত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিজিবি’র উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকবে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের চারটি মূলনীতি- মনোবল, ভ্রাতৃত্ববোধ, শৃঙ্খলা ও দক্ষতায় উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত হয়ে তাদের উপর অর্পিত যেকোন দায়িত্ব সুন্দর ও সুচারুভাবে পালন করার নির্দেশনা প্রদান করেন নৌ প্রতিমন্ত্রী।
নবীন সৈনিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে সীমান্ত প্রহরার মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষা করা। এই মহান দায়িত্ব পালনে সৈনিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি নবীন সৈনিকদের এসব গুণাবলী অর্জনের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, তোমাদের সততা, নিষ্ঠা ও পেশাগত দক্ষতার উপরই নির্ভর করবে, তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্বের সফলতা তথা এ বাহিনীর সম্মান ও গৌরব।
ভাষণের শুরুতে নৌ প্রতিমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। একইসাথে তিনি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী সকলকে, বিশেষ করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ, শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নুর মোহাম্মদ শেখ এবং মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদানের জন্য এ বাহিনীর ৮ জন বীরউত্তম, ৩২ জন বীর বিক্রম এবং ৭৭ জন বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিতদেরও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি বিজিবি’র নবীন সৈনিকদের প্রদর্শিত কুচকাওয়াজের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
ফুলবাড়ীর মনোরম পরিবেশে অবস্থিত ফুলবাড়ী ব্যাটালিয়ন (২৯ বিজিবি)’র প্রশিক্ষণ মাঠে সকাল সাড়ে ৯টায় নবীন সৈনিকদের শপথ গ্রহণ ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথি নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী কুচকাওয়াজ মাঠে উপস্থিত হলে তাকে অভ্যর্থনা জানান দিনাজপুর সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল মোহাম্মদ মোবারক হোসেন ভূঁইয়া এবং ফুলবাড়ী ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মো: শরীফ উল্লাহ আবেদ।
দিনাজপুর জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তারা সমাপনী কুচকাওয়াজ উপভোগ করেন। প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজের প্যারেড কমান্ডার হিসেবে মনোজ্ঞ প্যারেড পরিচালনা করেন ৯৬তম ব্যাচের ফুলবাড়ী রিক্রুট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অফিসার ইনচার্জ মেজর মো: নঈম রেজভী। প্যারেড এ্যাডজুডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী পরিচালক মো: মাহতাব উদ্দিন।
৯৬তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ গত ৩১ জানুয়ারি থেকে ফুলবাড়ী রিক্রুট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শুরু হয়। উক্ত ব্যাচে প্রশিক্ষণ নেয়া মোট ২১৯ জন রিক্রুট দীর্ঘ ২৪ সপ্তাহের অত্যন্ত কঠোর ও কষ্টসাধ্য এ প্রশিক্ষণ সফলভাবে শেষ করে আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ ও সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে তাদের সৈনিক জীবনের শুভ সূচনা করল।
অনুষ্ঠান শেষে নৌ প্রতিমন্ত্রী ৯৬তম রিক্রুট ব্যাচের ফুলবাড়ী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সববিষয়ে সেরা রিক্রুট হিসেবে প্রথম স্থান অধিকারী মো: সেলিম রেজা এবং অন্যান্য বিষয়ে সেরা রিক্রুটদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।