জাতীয়

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা শুনতে সাত বিচারপতি বিব্রতবোধ করেছিলেন: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আইনের শাসনের প্রতি আজীবন শ্রদ্ধাশীল ছিলেন।  জনগণের পক্ষে কথা বলার জন্য তিনি প্রায় ১৩ বছর জেল খেটেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।  অথচ এদেশের মাটিতে, এদেশেরই কিছু কুলাঙ্গার তাকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে।  আরও আশ্চর্যজনক বিষয়-এ হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্সে জন্য হাইকোর্ট গেলে হাইকোর্টের সাতজন বিচারপতি বিব্রতবোধ করে এ মামলার শুনানি করতে অপারগতা প্রকাশ করেছিলেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আয়োজিত এক শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।

আনিসুল হক বলেন, জিয়াউর রহমান যদি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হতেন তাহলে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত না করে বাতিল করতেন ও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করতেন। কিন্তু জিয়াউর রহমান তা না করে খুনিদের বিদেশি  মিশনে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন।  আর এরশাদ খুনিদের ফ্রিডম পার্টি গঠনের অনুমতি দেন।  খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিনা ভোটে নির্বাচন করে বঙ্গবন্ধুর খুনিকে জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসান।  জগগণের মুখে চপেটাঘাত করার জন্য এসব করা হয়।

বঙ্গবন্ধু বন্দুকের নল দেখিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন না উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাজনীতি করে জনগণকে নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করেছেন এবং অধিকার আদায়ের পদ্ধতি শিখিয়েছেন। এরপর জনগণ যখন তাকে যখন মেন্ডেট দিয়েছেন তখনই তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এবং বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রয়োজনে যা কিছু প্রয়োজন বঙ্গবন্ধু তা করে দিয়েছেন। আজকে বাংলাদেশ যে আইনি কাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে আছে তা বঙ্গবন্ধুর তৈরি করে দেওয়া। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর ২১ বছর এই আইনি কাঠামো পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো রাস্তায় ঘোরাফেরা করছে। এদের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়েছেন আমরা বাঙালি। তিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, সংবিধান দিয়েছেন। বিনিময়ে আমরা তাকে হত্যা করেছি।  আমরা এ কলঙ্ক কোনদিন মোচন করতে পারব না।

বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আলী আকবর, নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শহীদুল আলম ঝিনুক, আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম  সচিব বিকাশ কুমার সাহা ও যুগ্ম  সচিব উম্মে কুলসুম, ইনস্টিটিউটের পরিচালক মো. গোলাম কিবরিয়া বঙ্গবন্ধুর জীবন আলেখ্য নিয়ে আলোচনা করেন