জাতীয়

আইনি প্রক্রিয়া চলছে, খুনি রাশেদকে ফেরাতে আশাবাদী ড. মোমেন

যুক্তরাষ্ট্র সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি এ এম রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দেবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। 

তিনি বলেন, রাশেদ চৌধুরীকে ফেরানোর বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়াগুলো শেষ করা হচ্ছে।

হোটেল লোটে নিউইয়র্ক প্যালেসে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসূচির ওপর মিডিয়া ব্রিফিংকালে এমন আশার কথা ব্যক্ত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনব। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত এক আসামিকে ফেরত দেয়। এবারও সেই প্রক্রিয়ায় তাকে ফিরিয়ে আনব।’

ব্রিফিংয়ে উপস্থিত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বিএনপি ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্র জামায়াত বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। দেশে জনসমর্থন না পেয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে তারা বিদেশে অপপ্রচারের পথ বেছে নিয়েছে। কিন্তু তাদের এ প্রচেষ্টা অতীতে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমানেও ব্যর্থ হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। তাদের মোকাবিলার জন্য আমাদের কাছে অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে।  বাংলাদেশ সরকার গণতন্ত্রকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে জাতিসংঘের আইন ও নীতিমালার অনুমোদন দিয়েছে।’

ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সরকারের হাতে থাকা তথ্য মতে, খুনি রাশেদ চৌধুরী ব্রাজিল থেকে ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। ২০০৪ সালে দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন তিনি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এলে রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দিতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করে। কিন্তু ফাঁসির আসামি হওয়ায় তাকে ফেরত দিতে অনীহা দেখায় যুক্তরাষ্ট্র।

রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দেওয়ার জন্য ২০১৮ সালে দুবার এবং ২০২০ সালে আরও একবার সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গেও একাধিক বৈঠকে রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর দাবি তোলেন।

২০১৯ সালে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের ভারপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যালিস ওয়েলসের সঙ্গে এক বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাশেদ চৌধুরীর বিচারের নথিপত্র চেয়েছে ওয়াশিংটন।

ঢাকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে গত বছরের মাঝামাঝিতে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকা রাশেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক আশ্রয়ের বিষয়টি পর্যালোচনার উদ্যোগ নেয় দেশটির বিচার বিভাগ।  এর মধ্যেই দেশটির ক্ষমতার পালাবদল হয়ে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হন।  সর্বশেষ, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। দেশে ফিরে মোমেন জানান, রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকারের সঙ্গে আলাপ করেছেন।