জাতীয়

নারী উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সুপারিশ

দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে (এসএমই) নারীদের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এতে বিনিয়োগে নারীরা তেমন আগ্রহী না। চলতি বছরের আগস্টে এসএমই খাতে নারীদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে এই শিল্পের বিকাশ ও করোনার প্রভাব মোকাবিলায় ২.৩ বিলিয়ন ডলারের বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করলেও তা গ্রহণে নারীরা তেমন আগ্রহী নয়।

সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, মাত্র ৫.৫৯ শতাংশ নারী এখন পর্যন্ত এই ঋণ গ্রহণ করেছেন। এই প্রেক্ষাপটে এই শিল্পে নারীদের আগ্রহী করে তুলতে বেশ কয়েকটি বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। এগুলো হচ্ছে-নারীদের ব্যবসা সম্প্রসারণে প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সহজ ঋণ প্রাপ্তি, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে নারীদের স্বাস্থ্য খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এই খাতে সেবা, উদ্যোগ ও বিনিয়োগ বাড়ানো। 

বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত ‘বিনিয়োগের মাধ্যমে নারীদের অন্তর্ভুক্তি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন। 

এতে বক্তব্য রাখেন প্রভা হেলথের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিলভানা সিনহা, দি লিগ্যাল সার্কেল এর প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং পার্টনার আনিতা গাজী রহমান, বাংলাদেশ এনজেলস এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নির্ঝর রহমান, লাইটক্যাসল পার্টনার এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিজন ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রুটস অব ইমপ্যাক্ট এর ম্যার্কেটিং অ্যান্ড ক্যাপাসিটি বিল্ডিং এর লিড ম্যাক্সিম চেং।

সিলভানা সিনহা হেলথকেয়ার ব্যবসা-উদ্যোগের ক্ষেত্রে তার চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেন। তিনি  বলেন, একজন নারী উদ্যোক্তা হওয়ার ক্ষেত্রে শুধু বিনিয়োগের ক্ষেত্র ও প্রবেশগম্যতাই যথেষ্ঠ না। ব্যবসার ধরণ অনুযায়ী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জিং বিষয়গুলিও জানা দরকার। তবে সবচেয়ে বেশি জরুরি, কোন ক্ষেত্রে সঠিকভাবে বিনিয়োগ করলে সফল হওয়া যাবে তা জানা। 

আনিতা গাজী রহমান বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে নানা শিক্ষণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে নারীদের বিনিয়োগে সমাজের ইতিবাচক প্রভাবগুলোও বিবেচনা করা জরুরি।

বিজন ইসলাম বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জেন্ডারভিত্তিক বিনিয়োগের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, জেন্ডার মানে শুধু নারীদের কথা না। বরং নারী-পুরুষ উভয় জনগোষ্ঠীকেও বুঝানো হচ্ছে। এদের মধ্যে যেসব পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী আছে, তাদের আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে যাতে প্রবেশগম্যতা থাকে সেটাও ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা, উল্লিখিত সুপারিশের পাশাপাশি নারীদের ব্যবসা বিনিয়োগে আগ্রহ করার ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতে ঋণ বাড়ানো, ট্রেড লাইসেন্স সহজ করা ও ফি কমানো, নতুন ব্যবসার কৌশল, ঝুঁকি ও সম্ভাবনা নিয়ে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ, বৃহৎ শিল্পের সহায়ক হিসেবে এসএমই খাতের যোগসূত্র স্থাপন, এসএমই খাতে যথাযথ ও বাস্তবসম্মত নীতি প্রণয়ন, বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর প্রশিক্ষণ প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বা এসএমই খাত আয় বর্ধন, কর্মসংস্থান সুযোগের কারণে এটি দেশের বড় সম্ভাবনা খাত। বর্তমানে দেশের জিডিপির ২০ থেকে ২৫ শতাংশ এই খাত থেকে আসে।-সংবাদ বিজ্ঞপ্তি