জাতীয়

পণ্যের মান বাড়াতে গবেষণার তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

পণ্যের মান বাড়াতে গবেষণা করার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমি গবেষণাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেই। আমার মনে হয়, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমাদের আরও গবেষণা দরকার।’

শনিবার (১ জুনায়ারি) ২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর পূর্বাচলে নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পণ্যের চাহিদা এবং মান বিশেষভাবে নিরুপণ করা এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে পণ্যের মান ধরে রাখার বিষয়ে প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিল্প মালিক এবং উদ্যোক্তদের আমি অনুরোধ করব, নিজের দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য আপনাদেরকেই উদ্যোগ নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘পণ্যের মান ধরে রেখে আপনারা (ব্যবসায়ীরা) যেন আপনাদের বাজার ঠিক রাখতে পারেন, আরও উন্নত করতে পারেন, সেদিকে অবশ্যই দৃষ্টি দেবেন। নিজস্ব ব্র্যান্ড সৃষ্টি করে আপনাদের এগিয়ে যেতে হবে।’

সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘এখন প্রযুক্তির যুগ। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সামনে রেখে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি, যাতে আমরা কোনোভাবেই পিছিয়ে না থাকি। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

করোনার মাঝেও অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ায় শিল্প উদ্যোক্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে কৃতিত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘করোনার মাঝেও আমাদের অর্থনীতি কিন্তু একেবারে কখনো স্থবির হয়নি। স্বল্প মাত্রায় হলেও আমরা সব চালু রাখতে সক্ষম হয়েছি, যেখানে পৃথিবীর বহু দেশ সমস্যায় পড়েছে। করোনা-পূর্ববর্তী সময়ে সরকার প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশে তুলতে সক্ষম হয়েছিল।’ ভবিষ্যতে প্রবৃদ্ধি আরও বাড়ানোর আশ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

বর্তমান কূটনীতি বাণিজ্যিক কূটনীতি, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ প্রত্যেক দূতাবাসকে সেভাবেই কাজ করার নির্দেশ দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে আরও সহজভাবে করতে পারি, সেজন্য দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং সমন্বিত অর্থনৈতিক চুক্তি সম্পাদনের লক্ষ্যে ২৩ দেশের বিষয়ে সমীক্ষা করেছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের অর্জনকে ধরে রেখে যদি সামনে কোনো চ্যালেঞ্জ আসে সেটাও যেন আমরা মোকাবিলা করতে পারি, সে বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে আমরা কাজ করছি।’

রপ্তানিকে উৎসাহিত করতে ২০২২ সালে ‘আইসিটি পণ্য ও সেবা’কে ২০২২ সালের ‘জাতীয় বর্ষ পণ্য’ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি জানান, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ আইসিটি পণ্য ও সেবা রপ্তানি করে ৪৩ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার আয় করেছে। 

প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন, মাসব্যাপী এ মেলা উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, রপ্তানিকারক, ক্রেতা ও দর্শকদের মাঝে আমাদের সক্ষমতার বার্তা আরও জোরালোভাবে পৌঁছে দেবে।

গত বছর করোনা মহামারির কারণে মেলার আয়োজন করা সম্ভব না হলেও এবার প্রথম বারের মতো স্থায়ী ভেন্যুতে ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা’ (ডিআইটিএফ)-২০২২ হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সভাপতিত্ব করেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, এফবিসিসিআইর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এবং ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান এবং সিইও এ এইচ এম আহসান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ড এবং বাণিজ্যমেলার ওপর তথ্যচিত্র দেখানো হয়।