রাত পোহালেই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। পুরো শহরে নির্বাচনি আমেজ থাকলেও করোনার এই সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই মানুষের মধ্যে। অনেকেই পরছেন না মাস্ক।
সাইনবোর্ড (নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড) থেকে শুরু করে জালকুড়ি, শিবুমার্কেট, জেলা পরিষদ, চাষাঢ়া, কলেজ রোড, জামতলী, মাসদাইর, কালির বাজার, বাবুরাইল, খানপুর, বন্দর, আমিন আ/এ, সোনাকান্দা, শান্তিনগরসহ বিভিন্ন এলাকার জনগণের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার সবাই ভোট দেবেন। আশা করছেন, এবার সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারবেন।
ভোটের ব্যাপারে সবার যতোটা আগ্রহ, ঠিক ততটাই অনাগ্রহ দেখা গেছে স্বাস্থ্যবিধি মানা, মাস্ক পরা কিংবা করোনা বিষয়ে। অনেকে আবার মনে করছেন, করোনা ‘বড়লোকের অসুখ’। এতে গরিবের কিছু হবে না।
বন্দর খেয়াঘাটের নৌকার মাঝি গোপাল তো বলেই বসলেন, ‘করোনা আমগোরে ধরবো না। ওইডা বড়লোকের রোগ। মাস্ক পরন লাগবো না।’
কেবল গোপাল নয়, শহরের শিক্ষিত, সচেতন জনগণ নির্বাচনি আলাপে ব্যস্ত। তাদের বেশিরভাগের মুখে মাস্ক নেই। তারা মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। যে কজনের আছে, তারাও সেটা থুতনিতে ঝুলিয়ে চলাফেরা করছেন।
এ ব্যাপারে প্রশাসন বা আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের এক কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এসব নিয়ে ভাবার বা উদ্যোগ নেওয়ার চিন্তা আপাতত মাথায় নেই। এখন সিটি করপোরেশন নির্বাচন কী করে সুষ্ঠুভাবে করা যায়, সে ব্যাপারে আমরা ব্যস্ত।’
তবে নির্বাচন শেষে মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ে তারা অভিযান চালাবেন বলে জানান তিনি।
চাষাঢ়া শহীদ মিনারের পশ্চিম পাশে বেশ কয়েকটি চায়ের দোকান। সজল, জাহাঙীর, পান্না, আরিফসহ সবার দোকানে দুধ চা, রঙ চা, তেতুল চা, মাল্টা চা, জলপাই চাসহ বিভিন্ন রকমের চা বিক্রি করা হয়। বিভিন্ন ধরনের চায়ের স্বাদ নিতে এসব দোকানে সবসময় মানুষের ভিড় লেগে থাকে। যদিও দোকানি বা চা খেতে আসা প্রায় কারো মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি।
চা দোকানি জাহাঙীর বলেন, ‘আমি একা মাস্ক পরে কী লাভ? পুরা শহরের মানুষ মাস্ক পরে না। আর মাস্ক পরে দোকানদারী করা যায় না।’
জাহাঙীরের দোকানে চা খেতে আসা তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী রিশাদ বলেন, ‘প্রশাসনের এ ব্যাপারে কঠোর হওয়া উচিৎ। লোকজন মাস্ক পরার ব্যাপারে একদম গা ছাড়া। তাদেরকে মাস্ক পরতে বাধ্য করা উচিত।’
নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরিফ উদ্দিন সবুজ বলেন, ‘শহরের মানুষ একদম মাস্ক পরছেন না, স্বাস্থবিধিরও তোয়াক্কা করছেন না। এই নির্বাচনের পরে দেখা যাবে হাজার হাজার মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। সবাইকে সচেতন আর সতর্ক হতে হবে। প্রশাসনকেও কঠোর ভূমিকা নিতে হবে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।’