জাতীয়

প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ

করোনা মহামারির কারণে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে সর্বস্তরের মান‌ুষের জন্য ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে দুই বছর পর এবার জামাতের জন্য সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।

ঈদের দিন (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের প্রধান জামাত জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হবে। এখানে একসঙ্গে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবেন বলে জানা গেছে। 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার এ ঈদগাহ ময়দানে ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুতের কাজ পিয়ারো সরদার অ্যান্ড সন্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান করছে বলে ডিএসসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

প্রায় ৩০ হাজার বর্গমিটার এলাকার মধ্যে ২৫ হাজারেরও কিছু বেশি বর্গমিটার এলাকাজুড়ে প্যান্ডেল করা হয়েছে। সাড়ে ৩৪ হাজারের বেশি সাধারণ নাগরিকের পাশাপাশি ২৫০ জন ভিআইপি পুরুষ এবং ৮০জন ভিআইপি নারীর জন্যও আলাদাভাবে এখানে নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সোমবার (২ মে) সরেজমিন জাতীয় ঈদগাহ ময়দান ঘুরে দেখা গেছে, সার্বিকভাবে নামাজ পড়ার জন্য প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। নামাজের সারিগুলোতে টেবিল ফ্যান বসানো হয়েছে। কাজ শেষ হয়েছে বাঁশ দিয়ে প্যান্ডেল তৈরির।  নামাজের কাতারে বসানো হয়েছে আলাদা কাপড়।

যেকোনো সময় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, তাই নামাজের আগে পরে বৃষ্টি এলেও যেন মুসল্লিদের কোনো সমস্যা না হয়, সেজন্য প্যান্ডেলের ওপরে ত্রিপল লাগানো হয়েছে। বলা যায়, জামাত আয়োজনের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক জানান, ৫ এপ্রিল থেকে ময়দানের কাজ শুরু হয়েছে।  বাঁশ পোতা, কাপড় লাগানো, ত্রিপল লাগানো, বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়াসহ সার্বিক কাজের জন্য প্রতিদিন ১৫০ জনের বেশি শ্রমিক কাজ করেছেন। গতকাল (রোববার) রাতে সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।

ডিএসসিসি জানিয়েছে, জাতীয় ঈদগাহে মুসল্লিদের জন্য অজুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে ১৪০ জন মুসল্লি একসাথে অজু করতে পারবেন। ১০টি এয়ার কুলারের পাশাপাশি পুরো মাঠজুড়ে ৫৫০টি সিলিং ফ্যান, ১৫০টি স্ট্যান্ড ফ্যান, ৪০টি মেটাল লাইট ও ৭০০টি টিউবলাইট লাগানো হয়েছে। এছাড়াও মুসল্লিদের জন্য ভ্রাম্যমাণ টয়লেট, প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা, বৃষ্টি হলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা এবং ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।

শনিবার (৩০ এপ্রিল) জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের সার্বিক প্রস্তুতি দেখার জন্য এসেছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। পরিদর্শন শেষে দক্ষিণের মেয়র বলেছেন, ‘জাতীয় ঈদগাহ ময়দান সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে।  আমি ঢাকাবাসীকে জাতীয় ঈদগাহে নামাজ আদায়ের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’

রোববার (১ মে) ঈদগাহ ময়দানের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখতে এসে র‍্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, ‘অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় র‍্যাব সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে। ঈদুল ফিতরের সময় সারা দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‍্যাব তাদের নজরদারি বাড়িয়েছে। নিরাপত্তা জোরদারে দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় পর্যাপ্তসংখ্যক র‍্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। জাতীয় ঈদগাহ ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহসহ বিভিন্ন স্থানে র‍্যাবের বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড দ্বারা সুইপিং করা হবে।’

একইদিনে ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘জাতীয় ঈদগাহে চার স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ২৪ ঘণ্টা দায়িত্বে রয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদস্যরা।’

ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘ঈদ জামাতে আসা মুসল্লিরা কেবল জায়নামাজ ও ছাতা সঙ্গে নিয়ে আসতে পারবেন। এর বাইরে কোনোকিছু সঙ্গে নিয়ে ঈদগাহে আসতে পারবেন না। প্রত্যেক মুসল্লিকে তল্লাশি শেষে আর্চওয়ে গেট দিয়ে ঈদগাহে প্রবেশ করতে হবে। তাই মুসল্লিদের নির্ধারিত সময়ের আগে আসার অনুরোধ জানানো হয়েছে।’