জাতীয়

কাজী নজরুলকে বাংলাদেশে আনার সুবর্ণজয়ন্তীতে স্মারক ডাকটিকিট

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে বাংলাদেশে আনার সুবর্ণজয়ন্তী আজ (২৪ মে)। ১৯৭২ সালের এই দিনে কবির ৭৩তম জন্মদিনের এক দিন আগে সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে বাংলাদেশে আনেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ উপলক্ষে ডাক অধিদপ্তর ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট, ১০ টাকা মূল্যমানের একটি উদ্বোধনী খাম, ৫ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটা কার্ড ও একটি বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করেছে। 

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার মঙ্গলবার (২৪ মে) কবির স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে স্মারক ডাকটিকিট ও উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন এবং ডাটা কার্ড ও বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করেন।

মঙ্গলবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে বাংলাদেশে আনার সুব জয়ন্তীর তাৎপর্য তুলে ধরে বিবৃতি দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘বাংলা ও বাঙালির সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক অধিকার আদায়ের প্রশ্নে যে দুটি মহাপ্রাণের নাম অপরিহার্যভাবে চলে আসে, তারা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও কাজী নজরুল ইসলাম। কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বিদ্রোহী কবি। আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন রাজনীতির কবি। দুজনই স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা, একজন বাংলাদেশের অন‌্যজন ভারতবর্ষের। একজন গণমানুষের কথা কবিতা আকারে বলে কারাবরণ করেছেন, আরেকজন কারাবরণ করেছেন গণমানুষের জন্য লড়াই করে। একজন মহান নেতা, অন‌্যজন মহান কবি। দুজনই অগ্নিঝরা কথা বলেছেন গানে-ভাষণে। জাতি-ধর্ম ভেদাভেদের বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনের দৃঢ় অঙ্গীকারাবদ্ধ ছিলেন এই দুই মহান নেতা। বিদ্রোহী কবি উচ্চারণ করেন ‘মোরা এক বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান/মুসলিম তার নয়ন-মণি হিন্দু তাহার প্রাণ।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের জাতীয় কবি ১৯৭২ সালের ২৪ মে ৭৩তম জন্মদিনের এক দিন আগে ঢাকায় পৌঁছান। বঙ্গবন্ধু স্বয়ং কবির জন্য একটি বাংলো পছন্দ করে দেন এবং এর নামকরণ করেন ‘কবি ভবন’। কবি ধানমন্ডির বাসভবনে পৌঁছানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ বঙ্গবন্ধু কবিকে সম্মান জানানোর জন্য ধানমন্ডির কবি ভবনে আসেন। পরে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে জাতীয় কবিকে বাংলাদেশের জাতীয়তা দেওয়া হয় এবং তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানোর জন্য ‘কবি ভবনে’ জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।’

অনুষ্ঠানে কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সেলিমা সুলতানা, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নূরুল হুদা, ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পরে মন্ত্রী এ উপলক্ষে আয়োজিত বইমেলা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন এবং ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে নজরুলের আগমন’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।