জাতীয়

‘ডেটার ব্যবহার থেকেই বুঝা যায় ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতি’

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সাথে তাল মিলিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য আমরা একজন দক্ষ মানুষের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছিলেন, এবং তা বাস্তবে অর্জন করতে পেরেছেন। দেশে ডেটার ব্যবহার থেকেই বুঝা যায় ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতি।

শনিবার (২৮ মে) ৬ষ্ঠ বারের মতো ইন্টারনেট বিশ্বের অংশীজনের অংশগ্রহণে বাংলাদেশ স্কুল অব ইন্টারনেট গভর্নেন্স (বিডিসিগ) এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে  টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরী কমিশনের (বিটিআরসি) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ নাসিম পারভেজ, এনডিসি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সর্বশেষ মে মাসে দেশে ব্যান্ডউইথের ব্যবহার তিন হাজার ৮৫৩ জিবিপিএস ছুঁয়েছে। এটি একটি বিরাট মাইলফলক। তিন বছর আগেও এর পরিমাণ ছিল এক হাজার মাত্র।

ডিজিটাল বাংলাদেশ সহায়ক হাজারো এপ্লিকেশন তৈরি করা হয়েছে, মোবাইলে অনলাইন ব্যবহারের সংখ্যা বেড়েছে, এসব কিছুই হচ্ছে ডেটার মাধ্যমে। ডেটার ব্যবহার যত বাড়বে ব্যান্ডউইথের ব্যবহারও তত বাড়বে।

তিনি আরও বলেন, যদিও সাধারণভাবে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৫৮ শতাংশ দেশের মোট ব্যান্ডউইথের।

ডিজি বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে এবং প্রান্তিক ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করতেছে কমিশন। বিটিআরসি টেলিযোগাযোগ সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় ব্রডব্যান্ড সংযোগ স্থাপন সুবিধাবঞ্চিত প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন, টেলিযোগাযোগের সম্প্রসারণ, মোবাইল প্রযুক্তি এবং প্রত্যন্ত, উপকূলীয় অঞ্চলে ইন্টারনেট-ভিত্তিক ডিজিটাল ডাক পরিষেবার প্রকল্পগুলি বাস্তবায়ন করছে। হাওর ও পার্বত্য এলাকা, দ্বীপ এলাকায় স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক প্রকল্প, হাওর ও দ্বীপসমুহে হাই-স্পিড মোবাইল ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক স্থাপন, হাওর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য টেলিযোগাযোগ সম্প্রসারণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরী কমিশন ও বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের যৌথ উদ্যোগে তিনদিন ব্যাপী বিডিসিগ অনুষ্ঠিত হলো।

সমাপনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনএনআরসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বিআইজিএফ-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা  এএইচএম বজলুর রহমান। তিনি  বলেন, বিআইজিএফ,  ডিজিটাল বাংলাদেশের কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য সরকারের সাথে কাজ করছে। বিআইজিএফ জ্ঞান সৃষ্টি, জ্ঞান সংরক্ষণ,  জ্ঞান প্রচার এবং জ্ঞান ব্যবহার-এর জন্য  সরকারের সাথে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নীতিগত পরিবর্তনসহ  বিভিন্ন বিষয়ে  সংলাপ ও আলোচনা সভা পরিচালনা করে । এছাড়া বিডিএসআইজি স্টেকহোল্ডারদের সক্ষমতা জোরদার করার জন্যও কাজ করে যাচ্ছে। তিনি ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি থেকে আইজিএফ এর কার্যক্রম ও এর পথপরিক্রমা নিয়ে আলোচনা করেন।

বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের মহাসচিব মোহাম্মদ আব্দুল হক অনু অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানান এবং বিডিসিগ-এর উপর সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা দেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের সার্টিফিকেট বিতরণ করা হয়।

এর আগে ২৬ মে বিকেল ৩টায় শুরু হওয়া বিডিসিগ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের-এর সভাপতি  হাসানুল হক ইনু, এমপি এবং তিনদিনব্যাপী ৬ষ্ঠ বিডিসিগ এর উদ্বোধন করেন।  তিনি বলেন ইন্টারনেট আমাদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে তবে ইন্টারনেট সাশ্রয়ী মূল্যের হওয়া উচিত এবং সবার জন্য সমানভাবে তা নিশ্চিত করা উচিত। ডিজিটাল ব্যবধান কমাতে বিনামূল্যে ইন্টারনেট সম্ভব হলে ডিজিটাল ডিভাইড এর মূল্য কমাতে হবে। আমাদের অবকাঠামো তৈরি করতে হবে অন্যান্য ডিভাইস সবার জন্য সহজলভ্য করা উচিত। সবার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি জরুরি বিষয়। জনসাধারণের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের হার প্রদানের জন্য টেলিকম কোম্পানিগুলির জন্য ভ্যাট এবং ট্যাক্স হ্রাস করুন। স্মার্টফোনের দাম কমানো, প্রধানমন্ত্রীর অফিসের জন্য ডিজিটাল সেল, সবার জন্য ডিজিটাল সাক্ষরতা এবং জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা কমিটি গঠন। বাংলাদেশের জনগণের জন্য ইন্টারনেটকে একটি মৌলিক মানবাধিকার হিসাবে বিবেচনা করার আহবান জানান।