জাতীয়

দীঘার হাসি অমলিন থাকুক

মেয়ের বাবাদের আমি ভাগ্যবান বলি। তেমনই এক ভাগ্যবান বাবার গল্প বলছিলেন আমাদের রিপোর্টার মনিরুল ইসলাম মিন্টু। ভাগ্যবান এই বাবার নাম আবুল কালাম আজাদ। জানলাম তিনি শুধু ভাগ্যবান নন, ডাবল ভাগ্যবান। কারণ, আবুল কালাম আজাদের দুই মেয়ে।

আবুল কালাম আজাদ কুষ্টিয়ায় ছোট একটা চাকরি করতেন। বেতন সাকুল্যে ১০ হাজার টাকা। সংসারে টাকার অভাব থাকলেও সুখের অভাব ছিল না। দুই মেয়ে নিয়ে ভবিষ্যতের সুখের স্বপ্ন দেখেই কাটছিল দিন। দ্রুত বাবার সাথে সংসারের হাল ধরতে বড় মেয়ে ফাহি আক্তার মেঘা নার্সিং-এ ভর্তি হয়েছে। ছোট মেয়ে নুসরাত নওরীন দীঘার স্বপ্ন আরও বড়- ডাক্তার হওয়ার। সেই স্বপ্ন  পূরণ করার মত মেধাও দীঘার আছে। ক্লাস ফাইভে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিসহ জিপিএ-৫ পেয়েছিল। এখন পড়ছে অষ্টম শ্রেণিতে। ভালো ছাত্রী হিসেবে সবার ভালোবাসা পেয়েছে দীঘা। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর দীঘার এখন দিন কাটে ডাক্তারদের সাথেই।

তবে আবুল কালাম আজাদের সুখের স্বর্গে গ্রহণ লেগেছে। দুর্ভাগ্যের আঁধারে ঢেকে গেছে আবুল কালাম আজাদের ডাবল ভাগ্য।

দীঘার রক্তে বাসা বেধেছে কর্কট রোড। ব্লাড ক্যান্সার কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে দীঘার স্বপ্ন, আবুল কালাম আজাদদের সুখ। আবুল কালাম আজাদ রাজা নন। কিন্তু সব বাবার কাছেই তার মেয়ে রাজকন্যা। সেই রাজকন্যা দীঘাকে বাঁচাতে এখন লড়াই চালাচ্ছেন আজাদ। সেই লড়াইয়ের প্রথম ধাক্কাতেই গো-হারা হেরে বসে আছেন। মেয়েকে নিয়ে ডাক্তার-হাসপাতাল করতে করতে হারিয়েছেন চাকরিটি। সামনে ব্যয়ের পাহাড়। কিন্তু আয়ের একমাত্র পথটিও রুদ্ধ। অকুল পাথার বোধহয় একেই বলে।

পেশার কারণে নানা মানুষের দুর্ভোগ, দুর্ঘটনার কথা শুনতে হয়। মন খারাপ হয়। কিছু করতে না পারলে নিজেকে অসহায় লাগে। দুদিন পর আবার ভুলে যাই। জানি, একা আমি কিছু করতে পারবো না। কিন্তু ফুটফুটে দীঘার ছবিটা কিছুতেই মন থেকে সরাতে পারছি না। আমি একা হয়তো পারবো না, মিন্টু পারবেন না, আবুল কালাম আজাদ পারবেন না। কিন্তু আমরা সবাই মিলে চাইলে দীঘার মুখের হাসি ধরে রাখতে পারি। দুর্ভাগ্যের গ্রহণ সরিয়ে ডাবল ভাগ্যবান আবুল কালাম আজাদের পরিবারে আবার উপচেপড়া সুখের আয়োজন করতে পারি। আমাদের সবার বিন্দু বিন্দু সাহায্যই হয়তো দীঘাকে বাঁচিয়ে দিতে পারে।

দীঘা এখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কেবিন ব্লকে ৪১৮ নম্বর রুমে ভর্তি। হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এ বি এম ইউনুস তার চিকিৎসা করছেন। আর আবুল কালাম আজাদ ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে।

সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা: মোছা. মদিনা খাতুন, সঞ্চয়ী হিসাব নং- 1918031101874 বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, হলুদবাড়িয়া শাখা, কুষ্টিয়া।

বিকাশ বা নগদেও টাকা পাঠাতে পারবেন 01748-302621 (বিকাশ নম্বর), 01728-286070 (নগদ নম্বর)।