জাতীয়

‘বিএনপির ঈদ-শীত-পরীক্ষা-বর্ষার পর আন্দোলন ১৩ বছর ধরে শুনছি’

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপির ঈদের পরে আন্দোলন, শীতের পরে আন্দোলন; পরীক্ষার পরে, বর্ষার পরে আন্দোলন- এটি আমরা গত ১৩ বছর ধরে শুনে আসছি। এখন এটা কি এই ঈদের পরে, না কোন ঈদের পরে- সেটা আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বের করতে হবে। আসলে এ সমস্ত কথা বলে তারা নিজেদের ক্রমাগত হাস্যাস্পদ করছে। সে কারণেই জনগণ তাদের আন্দোলনে কখনও সাড়া দেয়নি।’

রোববার (৩ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকরা ঈদের পরে বিএনপি চরমভাবে আন্দোলনে নামবে- এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ বিএনপির ওপর নানা কারণে বিরক্ত। কারণ তারা জনগণের বিষয় নিয়ে আন্দোলন করে না। জনগণের বিষয় নিয়ে কথা বলে না। তারা কথা বলে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য আর তারেক জিয়ার শাস্তি নিয়ে। জনগণের ওপর তারা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। যেটি দেখে রাজনীতিবিদ হিসেবে আমারও কষ্ট লাগে।’

এর আগে মন্ত্রী বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের সাথে আলোচনা সভায় মিলিত হন। ফোরামের উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা বজায় রেখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমাদের কাজ করে যেতে হবে। 

ফোরামের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রতন বলেন, প্রিন্টিং প্রেসেস অ‌্যান্ড পাবলিকেশন্স এক্ট অনুযায়ী সংবাদপত্রের অনলাইন বা অনলাইন নিউজ পোর্টালে টক শো বা সংবাদ বুলেটিন সম্প্রচারের কোনও সুযোগ নেই। 

ফোরামের নেতৃবৃন্দ এসময় নামসর্বস্ব ও অনিয়মিত পত্রিকায় সরকারি বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র প্রদান বন্ধ এবং মিডিয়া তালিকাভুক্তি বাতিল, বিজ্ঞাপনের বকেয়া বিল পরিশোধ, সংবাদপত্রগুলোর প্রচার সংখ্যা নির্ধারণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো; অপেশাদার সাংবাদিককে পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব না দেওয়া, সম্পাদক ফোরামের সদস্যদের ভিআইপি মর্যাদা প্রদান ও বিভিন্ন কমিটিতে অন্তর্ভুক্তি ও পত্রিকার ডিক্লারেশন দেওয়ার ক্ষমতা তথ্য মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করাসহ ১০ দফা দাবি সম্বলিত একটি পত্র মন্ত্রীকে হস্তান্তর করেন। 

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আইনানুযায়ী টক শো এবং সংবাদ বুলেটিন প্রচার করা যে, পত্রিকার অনলাইন বা অনলাইন পত্রিকার কাজ নয়- সে বিষয়ে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর মালিকদের সংগঠন-এটকোর সাথে একমত পোষণ করেছেন সেজন্য আপনাদের ধন্যবাদ। এতে করে আমাদের পক্ষে অন্যদের সাথে কথা বলা সহজ হবে এবং বিষয়টি সহজে উপস্থাপন করা যাবে। অনলাইনে সংবাদের সাথে ছোট্ট ভিডিও ক্লিপ যেতে পারে, কিন্তু আইনানুযায়ী সংবাদ বুলেটিন কিংবা টক শো’র আয়োজন করা যায় না।’ 

সম্পাদক ফোরাম উত্থাপিত অপর বিষয়গুলো নিয়ে প্রেস কাউন্সিল ইতোমধ্যেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জানিয়ে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে কর্মরত সাংবাদিকদের একটি ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি হলে তালিকায় সাংবাদিক হিসেবে কার নাম আছে, আর কার নাম নেই সেটি বোঝা যাবে। সবাই সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেওয়া তখন কঠিন হয়ে যাবে। 

ড. হাছান এসময় পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের বকেয়া বিল দ্রুত পরিশোধের জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবেন উল্লেখ করে বলেন, ‘সব সমস্যার সমাধান দিতে পারবো সেটি আমি বলবো না, কিন্তু আমার আন্তরিকতার কোনও অভাব নেই। আপনাদের সহযোগিতায় ইতোমধ্যেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছে, বাকিগুলোও হবে।’  

ফোরামের সদস্য সচিব ফারুক আহমেদ তালুকদার এবং উপদেষ্টাদের মধ্যে আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, শরিফ সাহাবুদ্দিন, বেলায়েত হোসেন ও সদস্যদের মধ্যে দুলাল আহমেদ চৌধুরী, মীর মনিরুজ্জামান, মফিজুর রহমান খান বাবু, রিমন মাহফুজ, নাজমুল আলম তৌফিক, জগদীশ চন্দ্র সরকার প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।