জাতীয়

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক পাচ্ছেন ৫ নারী

মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা জানিয়েছেন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মদিন ৮ আগস্টকে ‘ক’ শ্রেণির জাতীয় দিবস ঘোষণা করেছে সরকার। বঙ্গমাতার অবদানকে চিরস্মরণীয় করার লক্ষ্যে প্রতি বছর আটটি ক্ষেত্রে নারীদের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত সর্বোচ্চ জাতীয় পদক ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব’ পদক দেওয়া হবে।

তিনি জানান, এ বছর রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সমাজসেবা এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের  স্বীকৃতি হিসেবে পাঁচ বিশিষ্ট নারীকে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক ২০২২’ দেওয়া হবে। রাজনীতিতে সিলেটের সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, অর্থনীতিতে কুমিল্লার সেলিমা আহমাদ এমপি, শিক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ, সমাজসেবায় কিশোরগঞ্জের মোছা. আছিয়া আলম এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে গোপালগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা আশালতা বৈদ্যকে (মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার) বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক দেবে সরকার।

শনিবার (৬ আগস্ট) ঢাকায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সম্মেলন কক্ষে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন’ ও ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক’ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৮ আগস্ট সকাল ১০টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন’ ও ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক প্রদান’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। অনলাইনে সংযুক্ত থাকবেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব নিজের জীবনের কঠিন দুঃসময়েও অসহায় মানুষদের আর্থিক সহায়তা করেছেন এবং তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সাহস যুগিয়েছেন। বঙ্গমাতার এই মহানুভবতাকে স্মরণ করে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় বঙ্গমাতার জন্মদিনে অস্বচ্ছল নারীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সেলাই মেশিন ও আর্থিক অনুদান দিচ্ছে। এবারও বন্যাকবলিত পাঁচ জেলাসহ সারা দেশে অস্বচ্ছল নারীদের প্রায় ৫ হাজার সেলাই মেশিন এবং ৫০ লাখ টাকা দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা ‘শেখ ফজিলাতুন নেছা আমার মা’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হবে। 

সংবাদ সম্মেলন প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য ‘মহীয়সী বঙ্গমাতার চেতনা, অদম্য বাংলাদেশের প্রেরণা’। অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতার জীবনভিত্তিক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক।

সংবাদ সম্মেলনে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান চেমন আরা তৈয়ব, শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন, অতিরিক্ত সচিব মো. মুহিবুজ্জামান, জাতীয় মহিলা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সাকিউন নাহার বেগমসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সারা দেশে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সমন্বয় করে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর-সংস্থা বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উদযাপনে আলোচনা সভার আয়োজন করবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনগুলো বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদযাপন করবে। এর মাধ্যমে দেশের নতুন প্রজন্ম বঙ্গমাতার সংগ্রামী জীবন, আত্মত্যাগ, সাহসিকতা, দেশপ্রেম, মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অপরিসীম অবদান এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের অজানা তথ্য জানতে পারবে। দিবসটি উপলক্ষে  জাতীয়ভাবে ক্রোড়পত্র ও পোস্টার প্রকাশ করা হবে। মহীয়সী নারী বঙ্গমাতার গৌরবময় কর্মজীবনের ওপর প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ ও স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে। 

পদক প্রদান অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। বঙ্গমাতার কর্মময় ও বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর বিশেষ আলোচনা সভা হবে। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন দ্বারা সজ্জিত করা হবে।