বাংলাদেশি পাসপোর্টে বিশ্বভ্রমণ করা এতটা সহজ না। রয়েছে ভিসা রুলস রেগুলেশন যা একটি সুইডিশ পাসপোর্ট কিংবা ফিনল্যান্ডের পাসপোর্টের দরকার হয় না। তারা যেতে পারে বিনা ভিসায়। ইউরোপিয়ানদের ভ্রমণ করা জন্য যতটা সহজ বাংলাদেশিদের জন্য ততটা সহজ না। বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলে গেলাম আফ্রিকার ছোট্ট দেশ বুরুন্ডিতে। নিজের বিশ্বভ্রমণ নিয়ে এমনটিই বলছিলেন বিশ্বপর্যটক কাজী আসমা আজমেরী।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বভ্রমণের ১৩৭তম দেশে পদচিহ্ন বুরুন্ডি ভিসা নিয়েছিলাম উগান্ডার রাজধানী কাম্পালা শহর থেকে। অনলাইনে দেখা ছিল মাত্র ৭০ ডলার কিন্তু অনলাইনে ভিসার ব্যবস্থা না থাকায় ৯০ ডলার দিয়ে ভিসা নিতে হয়েছে। ব্যাংকে জমা দিয়ে তিন দিন অপেক্ষা করে তারপরেই ভিসা পেয়েছিলাম।’
এই দেশে আসতে হলে সড়কে ১৫ ডলার দিয়ে কোভিড টেস্ট করিয়ে আসতে হয়। রুয়ান্ডার কিগালি শহর থেকে নিমাতা নামে একটি ছোট টাউনে বাসে এসে তারপর সেখান থেকে বড্ডা বড্ডা (ভাড়ায় চালানো মোটরসাইকেলকে বলে) করে বর্ডারে নামি। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে জনবসতি শূন্য বর্ডারে প্রায় ১০-১৫ জন লোক তাদের সঙ্গে এক সঙ্গে ইমিগ্রেশন পার হয়ে একটি শেয়ারে ভাড়া গাড়িতে করে বুঝুন বড়া শহরে আসি ২৪ অক্টোবর রাত সাড়ে ৯টায়, বলছিলেন আসমা আজমেরী।
রাতে অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোনো সস্তায় হোটেল না মেলায় ভিলেজ নামে একটি ইন্ডিয়ান স্বত্বাধিকারী হোটেলে উঠি ৮০ ডলারে। সারাদিন শহরের আশেপাশে ঘোরাঘুরি করি তারপর একটি সস্তায় হোটেলে উঠে যেটি বর্তমানে মাত্র ৩০ ডলার। খাওয়া-দাওয়া মোটামুটি সব কিছুই পাওয়া যায় তিন থেকে দশ ডলারের মধ্যে।
তিনি বলেন, বুরুন্ডি ছোট্ট একটি দেশ। পাশে তানযিনিয়া, রুওয়ান্ডা, কঙ্গ রয়েছে। ছোট্ট এই দেশটিতে দেখার মতো তেমন কিছু না থাকলেও মানুষের জীবনযাত্রা ও দৈনন্দিন জীবন অনেক ইন্টারেস্টিং। দেখার মতো একটি লেক আছে। এখানকার ভাষা ফ্রেঞ্চ এখানে প্রচুর ফ্রেন্ডস ইনভেস্টর দেখা যায় সাধারণত এই দেশে অধিকাংশ লোকজন ব্যবসার খাতিরে আসে বাংলাদেশের মতো। দরিদ্র দেশগুলোতে ইনভেস্টমেন্ট করার অনেক সুযোগ রয়েছে। গিয়েছিলাম এখানকার ফোন কোম্পানিতে হেড অফিসে। মালিকের সঙ্গে পরিচয় হয় রাস্তায়। তিনি একজন ভিয়েতনামি।
কাজী আসমা আজমেরী বলেন, ছোটখাটো শান্তিপ্রিয় দেশ। দু’চার দিনের বেশি থাকার মতো তেমন কিছুই নেই। এখানকার মানুষ অনেক আন্তরিক। তবে সাধারণ আফ্রিকান মানুষের ভেতর বেশ একটা ধারণা রয়েছে ট্যুরিস্ট মানেই টাকার বস্তা নিয়ে হাঁটাচলা করে। আমরা হচ্ছি ওয়ার্কিং ওয়ালেট, বিদেশিদের দেখলে ডলার চিহ্ন দেখে।
নিরাপত্তার দিক থেকে এই দেশটি অনেক ভালো। ক্রিকেট দেশগুলোতে খুব একটা লোকাল বাস খুঁজে পাওয়া যায় না তবে দরিদ্র দেশ। এখানে বেশ লোকাল বাস পাওয়া যায়। কথা হচ্ছে এখানে ব্ল্যাক মার্কেটে টাকার দাম অনেক বেশি যা সরকারি রেট থেকে অনেক ভালো। ১০০ ডলারে প্রায় তিন লাখ বরুন্ডিয়ান ফ্রাঙ্ক পাওয়া যায়, যোগ করেন তিনি।
এখানে থেকেই আসমা আজমেরী চলে যাবেন কঙ্গোতে। এর আগে তিনি ১৩৬তম দেশ হিসেবে রুয়ান্ডা ভ্রমণ করেন।