জাতীয়

‘বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় ভারত’

প্রতিবেশীদের নিয়ে ভারতের একটি পলিসি আছে জানিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির নবনিযুক্ত হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, তার দেশ বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়।

বুধবার (৩০ নভেম্বর) গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেন, প্রতিবেশীদের নিয়ে ভারতের একটা পলিসি আছে। কিন্তু এক্ষেত্রে বাংলাদেশ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি প্রায়োরিটি। যে কোনো কিছুতে বাংলাদেশের প্রায়োরিটি বেশি।

ভবিষ্যতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সব সময়ই ভালো বন্ধু। সামনেও বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এক সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, এ অঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠায়, সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ-ভারতব এক সঙ্গে কাজ করবে।

সন্ত্রাস প্রসঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ কখনোই সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেয়নি। বাংলাদেশের মাটি কখনোই ব্যবহার হবে না সন্ত্রাসী কাজে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ কখনোই সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেয় না। সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম নাই। তাদের কোনো সীমা রেখাও নাই।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে এবং ল্যান্ড বাউন্ডারি ইস্যুতে দলমত নির্বিশেষে বাংলাদেশকে সমর্থন করার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক অমীমাংসিত বিষয় আছে যেগুলো আমাদের আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। তিস্তাসহ অন্যান্য যে অমীমাংসিত বিষয় আছে সেগুলো আমরা আলোচনা করেই সমাধান করতে পারি।

বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশনারি লিডারশিপের প্রশংসা করেন ভারতীয় হাইকমিশনার। দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের কানেকটিভির ওপর জোর দেন হাইকমিশনার।

প্রণয় ভার্মা বলেন, ভারত বিদ্যুৎ-জ্বালানি সেক্টরে বাংলাদেশকে সমর্থন করবে এবং এ বিষয়ে নেপাল-ভুটানের সঙ্গেও কাজ করবে।

বাংলাদেশ-ভারত সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (সিইপিএ) নিয়েও আলোচনা হয় এ সাক্ষাতে।

বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এখানে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য ভালো সুযোগ আছে। আমরা ১০০ ইকোনমিক জোন করছি। ভারত সেখানে বিনিয়োগ করতে পারে।

চট্টগ্রাম এবং মোংলা পোর্ট দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য যে সুযোগ ও সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে তার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

ভারতীয় হাইকমিশনার গভীর শ্রদ্ধায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর যে রাজনৈতিক দর্শন ছিল সেটা সত্যিই খুব অনুসরণীয়।

এসময় শেখ হাসিনা বলেন, আমার বাবা জনগণের জন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমি তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমিও জনগণের জন্য রাজনীতি করি।

হাই কমিশনার ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পৌঁছে দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অ্যাম্ব্যাসাডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। পরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নিয়মিত সাধারণ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

সভায় ট্রাস্টের কার্যক্রম বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং এর কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন।