জাতীয়

‘বাংলাদেশের জনগণকে নিয়ে একসঙ্গে হাঁটতে প্রস্তুত ভারত’

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় বর্মা বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে মৈত্রীর ক্ষেত্রে ভারত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। সব সময় বৃহত্তর সমৃদ্ধি ও সাফল্যের পথে বাংলাদেশের জনগণকে নিয়ে একসঙ্গে হাঁটতে প্রস্তুত থাকবে।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবসের ৫১তম বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজধানীর কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে ভারতীয় হাইকমিশন মৈত্রী দিবসের ৫১তম বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে বিজয়ের ১০ দিন আগে ভারত একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও সঙ্গীতসন্ধ্যার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বীর মুক্তিযোদ্ধার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতৃত্ব, গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষাবিদ ও সুশীলসমাজের প্রতিনিধিরা এতে যোগ দেন।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে ভারতের স্বীকৃতির আগে মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সেনারা জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। ভারত সে সময় আমাদের সহায়তা করেছিল বলেই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। তা না হলে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ হতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সমস্যার সমাধান করেছেন। এখনো বিরাজমান সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান করা প্রয়োজন।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রামে প্রবাদ আছে, স্বামী-স্ত্রী বদলানো যায়, কিন্তু প্রতিবেশী কখনোই বদলানো যায় না। তাই, আমরা ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক সমমর্যাদায় এগিয়ে নিতে চাই।’

অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় বর্মা বাংলাদেশ-ভারত অংশীদারত্বের ৫১ বছরের অর্জনসমূহ এবং ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করার সুযোগ হিসেবে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বকে ১৯৭১ সালের যৌথ আত্মত্যাগের মূলে নিহিত এবং ইতিহাস, ভাষা ও সংস্কৃতির দৃঢ় বন্ধনে লালিত বলে বর্ণনা করেন।

বিগত ৫০ বছরে উভয় দেশেরই গুরুত্বপূর্ণ অর্জন রয়েছে, উল্লেখ করে ভারতীয় হাইকমিশনার দেশ দুটির ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কর্তৃক ১৯৭১ সালের ইতিহাস অনুধাবন করা ও সেই ঐতিহ্যের ধারা অক্ষুণ্ন রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

দ্বিপাক্ষিক মূল্যবোধ, সংস্কৃতি ও নীতির সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত এবং পারস্পরিক আস্থা, সম্মান ও বোঝাপড়ার ওপর ভিত্তি করে সৃষ্ট এই ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বকে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে উভয় দেশের অঙ্গীকারকে আবারও নিশ্চিত করে ভারতীয় ও বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক দলের বর্ণাঢ্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে এই আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে।

উল্লেখ্য, ৬ ডিসেম্বরকে মৈত্রী দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্তটি ২০২১ সালের মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফরকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক গৃহীত হয়।