জাতীয়

মেট্রোরেল উদ্বোধন এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত: জাপান দূতাবাস

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশে প্রথম বৈদ্যুতিক মেট্রো রেলওয়ে (এমআরটি) তার কার্যক্রম শুরু করেছে। ঢাকায় গণপরিবহন ব্যবস্থা যোগ হলো আধুনিক প্রযুক্তির। ঢাকার নতুন এমআরটির উদ্বোধন এ বছরের চূড়ান্ত ইভেন্ট হিসেবে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) ঢাকায় অবস্থিত জাপান দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শুভকামনা জানানোর পাশাপাশি এ মন্তব্য করেছে।

ঢাকার জাপান দূতাবাস জানায়, ঐতিহাসিক দিনে এই এমআরটি ট্রেনে তারাই প্রথম যাত্রী ছিলেন। এমআরটি জাপানি ওডিএর সহায়তায় নির্মিত হয়েছে। এবার উত্তরা নর্থ স্টেশন থেকে আগারগাঁও স্টেশন পর্যন্ত ৬ নম্বর লাইনের ৯টি স্টেশন উদ্বোধন করা হয়েছে।

দূতাবাস বিজ্ঞপ্তিতে জাপানি সহায়তায় ঢাকার নতুন এমআরটির উদ্বোধন এ বছরের চূড়ান্ত ইভেন্ট হিসেবে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত চিহ্নিত করে।

দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক রেলপথ বিভিন্ন জাপানি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে ঢাকায় নিরাপদ, দ্রুত, আরামদায়ক এবং সময়নিষ্ঠ গণপরিবহন পরিষেবা দেবে। ভবিষ্যতে এমআরটি লাইন ৬, লাইন ১ ও ৫ এর সঙ্গে নেটওয়ার্ক করা হবে; যেগুলো ২০২৯ সালে সম্পন্ন হওয়ার জন্য নির্ধারিত রয়েছে। এমআরটি নেটওয়ার্ক শহরে যানজট দূর করবে। বায়ু দূষণ এবং অন্যান্য পরিবেশগত প্রভাবগুলো কমাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এবছর জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী পালন করছে।

এদিকে, মেট্রোরেল উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে শুভেচ্ছা বক্তব্যে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

বক্তব্যের শুরুতে রাষ্ট্রদূত সালাম দিয়ে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান, বলেন ‘শুভ অপরাহ্ণ’। রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি বাংলাদেশে জাপানের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত। দশ দিন হলো আমি বাংলাদেশে এসেছি। জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক পুরনো। দীর্ঘ দিনের। এ সম্পর্ককে আমি আরও গভীর করতে চাই।

কিমিনোরি বলেন, নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমি কাজ করে যাব। আর বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

মেট্রোরেল প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, মেট্রোরেলের এই মুহূর্তটি জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য মাহেন্দ্রক্ষণ। দুই দেশের সম্পর্কে এটি নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। এটি বাংলাদেশের অন্যতম বড় প্রকল্প। এই দ্রুতগতির নিরাপদ পরিবহন সেবার মধ্য দিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে।

এ সময় রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি মেট্রোরেল প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত রাজধানীর গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত জাপানি নাগরিকদের কথা স্মরণ করেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, সত্তর দশকের শুরু থেকে জাপান বাংলাদেশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তার বিষয়ে নজর দেয়। বাংলাদেশ এখন এশিয়ায় দ্রুত বর্ধনশীল দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ, সেটি পূর্ণতা পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

প্রসঙ্গত, আজ সকালে ঐতিহাসিক এ ঘটনা উদযাপনের জন্য একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক, অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত আইওয়ামা কিমিনোরি এবং জাইকার প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহাইদে উপস্থিত ছিলেন।