জাতীয়

জমির নামজারি আবেদন নামঞ্জুরের কারণ জানাতে হবে

মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অধিকতর দায়িত্বশীল নাগরিক সেবা প্রদানে নিয়মিত তাগিদ দিচ্ছে ভূমি মন্ত্রণালয়। এরই অংশ হিসেবে ভূমির নামজারি চূড়ান্তভাবে নামঞ্জুরের আগে সুযোগ দেওয়া এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নামঞ্জুরের কারণ সুনির্দিষ্টভাবে জানাতে সংশ্লিষ্ট ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য আবারও তাগিদ দিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ভূমিসেবা গ্রহীতাদের সুবিধার্থে গত বছরের ১৭ জুলাই তারিখে ‘ই-নামজারি সিস্টেমে নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি করার বিষয়ে নির্দেশনা’ শীর্ষক এক পরিপত্রের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয় নামজারি নামঞ্জুরের করার পূর্বে বেশ কতগুলো পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিল। যেমন, ডিজিটাল ভূমিসেবা সিস্টেমে বা ভূমি অফিসে সংরক্ষিত নেই এমন কোন তথ্যের ঘাটতি থাকলেই আবেদন নামঞ্জুর না করে তথ্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া। অর্থাৎ, নামজারি মামলায় প্রথম আদেশে কোনও দলিলের ঘাটতি থাকলে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করে সাত কার্যদিবস বা যুক্তিসঙ্গত সময় দিয়ে আবেদনকারীকে দাখিলের জন্য অনুরোধ জানানো। ওই সময়ের মধ্যে তথ্যাদি দাখিল করতে ব্যর্থ হলেই কেবল দ্বিতীয় আদেশে নামঞ্জুর করা যাবে মর্মে নির্দেশ দিয়েছিল ভূমি মন্ত্রণালয়। 

ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক নিয়মিত পর্যালোচনায় অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ওই পরিপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী অনুপস্থিত তথ্য বা কাগজপত্র জমা দেওয়ার জন্য আবেদনকারীকে সাত কার্যদিবস বা যুক্তিসঙ্গত সময় দেওয়ার অনুরোধ করা হয়নি। তাছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যেসব কারণে আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে, তা আদেশে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি বা অস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। 

পর্যালোচনায় দেখা যায়—প্রয়োজনীয় তথ্য না থাকা, প্রয়োজনীয় দলিল বা কাগজপত্র না থাকা, ওয়ারিশান সনদ না থাকা, খতিয়ানের মূলকপি, ফটোকপি, সহি-মোহর না দেওয়া, অস্পষ্ট স্ক্যান কপি দেওয়া, জমির দাখিলা বা হাল দাখিলা প্রদান করতে ব্যর্থ হওয়া, মূল দলিল উপস্থাপন না করা, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ না করা, ডিসিআর ফি পরিশোধ না করা, বণ্টননামা দলিল সংযুক্ত না করা—ইত্যাদি কারণে অনেকক্ষেত্রেই সরাসরি নামজারি নামঞ্জুর করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ওই পরিপত্র অনুযায়ী আবেদনকারীকে যুক্তিসংগত সময় দিয়ে তথ্যাদি উপস্থাপনের জন্য সুযোগ দিতে হতো।

আবার, কিছু ক্ষেত্রে মালিকানার স্বপক্ষে দালিলিক প্রমাণ উপস্থাপনে ব্যর্থ, জমা ভাগের আবেদন নামঞ্জুর সিদ্ধান্তের মাধ্যমে, ইউএলএও এর প্রতিবেদনমতে আবেদনকারীর আবেদন সঠিক না হওয়া—ইত্যাদি কারণ দেখিয়ে সরাসরি নামজারি নামঞ্জুর করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কারণ দেখাতে হতো।

এ পরিস্থিতিতে উপরে উল্লেখ করা পরিপত্রের নির্দেশনামাতে কোনও দলিলের ঘাটতি থাকলে সাত কার্যদিবস বা যুক্তিসঙ্গত সময় দিয়ে আবেদনকারীকে দাখিলের জন্য অনুরোধ করা না করা হয়ে থাকলে এবং নামঞ্জুরের সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখসহ যথাযথভাবে আদেশ প্রদান না করা হয়ে থাকলে সে ব্যাপারে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য কালেক্টরেটে (জেলা প্রশাসন) গত ১৬ জানুয়ারি তারিখে পত্র প্রেরণ করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। একইসাথে উপযুক্ত কারণ ছাড়া কোনও কর্মকর্তা কর্তৃক আবেদন নামঞ্জুর না করার মত দায়িত্ব অবহেলা পরিলক্ষিত হলে তাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করে ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয় ওই পত্রে।