জাতীয়

দুর্নীতি বন্ধে জনসম্পৃক্ততা গুরুত্বপূর্ণ: দুদক চেয়ারম্যান 

জেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি বন্ধে জনগণকে সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্ব‌ারোপ ক‌রে জেলা প্রশাসক‌দের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জা‌নি‌য়ে‌ছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মঈনুদ্দিন আব্দুল্লাহ।

এসময় জেলা উপজেলার ভূমি অফিসসহ সব স্থানের দুর্নীতি নজর রাখতে জেলা প্রশাসকদের অনুরোধ জানিয়েছে দুদক চেয়ারম্যান।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ডিসিদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দুদক চেয়ারম্যান এ কথা জানান।

তিনি বলেন, তাদের অনুরোধ জানিয়েছি, প্রতিটি জেলাতে সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে তারা ওখানে কাজ করেন; তাদের দায়িত্ব রয়েছে, তার জেলায় কোথাও দুর্নীতির সংবাদ পেলে তাদের কাছে তথ্য পাওয়ার অনেক সোর্স আছে। খবর পাওয়ার পর সাথে সাথে আসলে পরে তারা যেন বসে না থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানান। দুর্নীতি যেন না হতে পারে, প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা যেন গ্রহণ করা হয়।

‘জনগণকে জানাতে বলেছি, দুর্নীতি দমন কমিশনকে কীভাবে অভিযোগ পাঠাতে হয়। টোল ফ্রি একটি টেলিফোন ব্যবস্থা আছে ১০৬। এখানে অবহিত যেন জনগণকে করেন, সেই অনুরোধ করেছি।’

জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ভূমি অফিস থেকে দুর্নীতির অভিযোগ থাকে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, শুধুমাত্র ভূমি অফিসে না অন্য কোথাও, জেলা পর্যায়ে কোথায় কোথায় দুর্নীতি হয়; সে বিষয়ে নজর রাখতে জেলা প্রশাসকদের বলা হয়েছে। ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে ভূমি অফিসের দুর্নীতি কমানো সম্ভব, এটা বলা হয়েছে। তারা সে দিকেই যাচ্ছে।

অনেক সময়, জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকে; এ বিষয়ে কিছু বলেছেন কিনা জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, দেখেন, দুর্নীতি করার বিষয়ে সতর্কবার্তা দেওয়ার সুযোগ তো আমার নেই। সংবিধানেই আছে, আইন হয়েছে। কমিশন গঠন করা হয়েছে। ডিসি বলে বিষয় না, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাবে, অভিযোগটা যদি অনুসন্ধানযোগ্য হয়, অবশ্যই হবে। এটা তাদের জানানো আছে, পুনরায় জানানোর প্রয়োজন নেই।

জেলা সম্মেলনে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা অংশগ্রহণ করছে। দেশে অনেকগুলো সাংবিধানিক সংস্থা বা কমিশন থাকলেও একমাত্র দুর্নীতি দমন কমিশন ডিসি সম্মেলনে অংশ নিয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্বাধীন সংস্থার অংশগ্রহণ বিষয়টি কীভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের তিনি বলেন, এই প্রশ্ন কীভাবে রেসপন্স করব আমি বুঝতেছি না। সরকারের মন্ত্রীরা এসেছে, আমরাও এসেছি। আমরা আমাদের কথা বলেছি। আমাদের তো কেউ নিয়ন্ত্রণ করে বলে নাই যে, তুমি এ কথা বইলো। অন্য কোনও কমিশনকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, সেটা আমরা জানি না।

তাহলে কি সরকারি পর্যায়ের দুর্নীতি বেড়ে গেছে, এজন্য কমিশনকে ডাকা হয়েছে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বলতে পারে। তারা আমাদের আহ্বান জানিয়েছিল। ৬৪ জন জেলা প্রশাসক ও আট জন বিভাগীয় কমিশনারকে পেয়েছি, আমি আমার বক্তব্য বলেছি। তাদের বলেছি, যেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানো হয়। দুর্নীতির কোনও ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ব্যবস্থা নিতে না পারলে যেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়, তা জানাতে বলা হয়েছে। তাদের বুঝানোর চেষ্টা করেছি, দুর্নীতিতে সঙ্গে রেখে দেশ উন্নয়ন সম্ভব না। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সে যেই হোক, তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান-তদন্ত করতে প্রস্তুত আছি।