জাতীয়

‘সড়ক নিরাপত্তা’ প্রত্যাহার কেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পিটার হাসের প্রশ্ন

সড়কে চলাচলের সময় হঠাৎ কেন পুলিশের নিরাপত্তা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে- সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের কাছে জানতে চেয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। 

বুধবার (৩১ মে) দুপুরের পরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পিটার হাস এ প্রশ্ন করেন। তা ছাড়া বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জানতে চেয়েছিলেন হঠাৎ করে কেন সড়ক নিরাপত্তা (রোড প্রোটেকশন) উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এ ব্যবস্থাটি পরিবর্তন করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ চারটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছিল। সম্প্রতি তা বাতিল করেছে সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোনও দেশ প্রয়োজন মনে করলে আনসার বাহিনীর মাধ্যমে ওই সেবা নিতে পারবে। সে জন্য আনসার সদস্যদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে আনসার গার্ড রেজিমেন্ট গড়ে তোলা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে এ বিষয়টিই আবার বলা হয়েছে। একই সঙ্গে নিশ্চিত করা হয়েছে, কূটনীতিকপাড়ায় কোনও ধরনের নিরাপত্তার ব্যাঘাত ঘটবে, এ রকম কোনও কিছু হতে দেবেন না। কূটনীতিকপাড়া ও তাদের (কূটনীতিক) চলাচল যাতে নিরাপদ থাকে, সেই ব্যবস্থা করা হবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ওনারা কিছু সময় চেয়েছিলেন (সড়কে নিরাপত্তার বিষয়ে)। তাদের বলা হয়েছে, যাদের (আনসার গার্ড রেজিমেন্ট) নিরাপত্তার জন্য দেওয়া হচ্ছে, তারা খুবই প্রশিক্ষিত। তবে এ বিষয়ে আরও বসা হবে। যদি মনে করা হয়, নিরাপত্তার জায়গায় কোনও অভাব আছে, তাহলে সেটি দেখা হবে। তবে এই নিরাপত্তার জন্য টাকা পরিশোধ করতে হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসানীতি দিয়েছে, সেই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলেন পিটার। তিনি শুরুতেই বলেন, এটা কাউকে উদ্দেশ করে দেওয়া হয়নি। একটি সুন্দর নির্বাচন যাতে হয়, সে জন্যই দেওয়া হয়েছে।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি, ভিসা যার যার দেশের নিজস্ব ব্যাপার। কাকে সেই দেশে ঢুকতে দেবে কী দেবে না, সেটি সেই দেশই জানে, সেখানে আমাদের কিছু বলার নেই। তারা ভিসা নিয়ে যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেটি তাদের নিজস্ব ব্যাপার।’

‘তবে তারা দেশে একটি সুন্দর নির্বাচন চান’ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরাও বিশ্বাস করি ষড়যন্ত্র নয়, কোনও শক্তির অভ্যুত্থান নয় কিংবা বন্দুকের নল নয়। মানুষের ম্যান্ডেটে একটি নির্বাচন হোক। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে, জনগণের ম্যান্ডেট। আপনারাও (যুক্তরাষ্ট্র) সেটির জন্য উৎসাহ প্রকাশ করেছেন। সে জন্য যে ভিসানীতি দিয়েছেন, আমরা স্বাগত জানাই।’

সুষ্ঠু ভোটের লক্ষ্যে ভিসানীতি ঘোষণা করায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এ সময় একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে গণমাধ্যমে খবর আসছে। এ বিষয়ে পিটার হাসের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়েছে কি না? জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপার। সেখান থেকে কী করবে আমার জানা নেই।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ খুব সুন্দরভাবে চলছে মন্তব্য করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত ভালোভাবে আছে। তারা আজ এই দেশকে নিয়ে গর্ব করতে পারে। এই গর্বের জায়গাটিতে প্রধানমন্ত্রী নিয়ে এসেছেন। কাজেই এই দেশ সম্পর্কে যদি কারও কিছু বলার থাকে, সেটি তাদের দেশের সিদ্ধান্ত, আমাদের কিছু না।’