জাতীয়

‘সমন্বয় ও সক্ষমতা তৈরি ছাড়া সাইবার জগতকে নিরাপদ করা যাবে না’

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন সমন্বয় ও সক্ষমতা তৈরি ছাড়া আমাদের সাইবার জগতকে নিরাপদ করা যাবে না। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে ডেটা শুধু পিপল, ডিভাইস, ওয়েব, বা অ্যাপের সঙ্গে নয় আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং ইন্টারনেট অব থিংস এর সঙ্গেও যুক্ত হয়েছে, ফলে ঝুঁকির পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) এম আই এস টি মিলনায়তনে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) এর যৌথ উদ্যোগে  Measures and Preparedness for Emerging Cyber Threats শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পলক বলেন, সারা বিশ্বে প্রায় দশ ট্রিলিয়ন ডলার সমমূল্যের সাইবার অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। আমাদের সবারই ইন্টারনেটে, ডিজিটাল ডিভাইস, বা সাইবার ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে কোনোভাবে সংযোগ আছে।

তিনি বলেন, পৃথিবীতে দুই ধরনের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী আছে, একদল জানে যে তারা সাইবার হামলার শিকার হয়েছে, আরেকদল জানেও না যে তারা সাইবার হামলার শিকার হয়েছেন। এসব ঝুঁকি থেকে বাঁচতে হলে আমাদের নিজেদের সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। যাতে এআই, মেশিন লার্নিং, ডেটা অ্যানালিটিক্সের ওপরে আমরা এতো বেশি পারদর্শী হই যাতে এইটার কোনো নেগেটিভ ইউজ আমাদের বিরুদ্ধে কেউ না করতে পারে। সেজন্য ইন্ডাস্ট্রি, অ্যাকাডেমিয়া এবং গভর্নমেন্ট একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

পলক বলেন, চারটি বিষয়ে আমাদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে; এআই, রোবোটিক্স, মাইক্রোচিপ ডিজাইনিং, এবং সাইবার সিকিউরিটি। এ বিষয়গুলোতে যদি আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দক্ষ এবং যোগ্য করে তুলতে পারি তাহলে আমরা ২০৪১ সালে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' থেকে 'স্মার্ট বাংলাদেশ'-এ রূপান্তর হচ্ছে এবং একটি উন্নত দেশ হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সেই সময় আমরা ক্রমাগত সাইবার আক্রমণের স্বীকার হচ্ছি। স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাইবার আক্রমণ বাধা হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। সম্প্রতি বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি সাইবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ অদূর ভবিষ্যতে এই ধরনের আরও হামলার সম্মুখীন হতে পারে। আমাদের অনেক সরকারী সংস্থা, সশস্ত্র বাহিনীর স্থাপনা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলিও সাইবার আক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অতএব, সাইবার আক্রমণ, সংবেদনশীল এবং গোপনীয় তথ্য চুরি বা হারানোর বিরুদ্ধে ব্যক্তি এবং সংস্থাগুলিকে রক্ষা করা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়া তিনি উদ্ভূত সাইবার হুমকি মোকাবিলায় রুটিন পরীক্ষা, ডায়াগনস্টিক পদ্ধতিগুলিকে শক্তিশালী করা, সক্রিয় পর্যবেক্ষণ, গবেষণা এবং সাইবার নিরাপত্তায় ধারাবাহিক বিনিয়োগের কথাও বলেন।

সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেজর জেনারেল সাইদুল ইসলাম। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহফুজুল করিম মজুমদার। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মেজর জেনারেল ইমদাদ-উল-বারী (অবঃ)।

এছাড়াও, সেমিনারে দেশী বিশেষজ্ঞ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বাহিনী সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ এবং রাজধানী ও পাশ্ববর্তী এলাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীসহ প্রায় ৬০০ জন অংশগ্রহণ করেন।