জাতীয়

কোটিপতিদের বিনিয়োগে বাড়ছে জমির দাম : ভূমিমন্ত্রী

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ বলেছেন, বড় বড় কোটিপতি ভূমিতে ব্যবসার জন্য বিনিয়োগ করছেন। যার জন্য জমির মূল্য বেড়ে যাচ্ছে। ফলে দ্রুত মানুষ ভূমিহীন হচ্ছে।বুধবার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনা ও জনগণের ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

গোলটেবিল আলোচনার আয়োজক সংস্থাগুলো হচ্ছে ইউএসএস(নীলফামারী), এসকেএস (গাইবান্ধা), পুয়ামদো (পাঁচবিবি, জয়পুরহাট), বিডিও ও বিএসডিও (নওগাঁ), মুক্তি-নারী (কুষ্টিয়া), ইএসএস (খুলনা), স্যাপ-বিডি (পটুয়াখালী), আভাস (বরিশাল), সুশীলন (বরগুনা), ভার্ড (সুনামগঞ্জ) এবং অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ।ভূমিমন্ত্রী বলেন, ভূমি ব্যবসায়ীদের কারণে যেভাবে জমি হস্তান্তর হচ্ছে এতে করে জমির উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে। কারণ জমির প্রকৃত মালিক যেভাবে পরিশ্রম করে ফসল উৎপাদন করেন, যারা ব্যবসার জন্য ভূমিতে বিনিয়োগ করেন তারা সেভাবে উৎপাদন করেন না।মন্ত্রী বলেন, কৃষকদের মুক্তি দিতে যা করণীয় সরকারকে তা করতে হবে। দেশের কৃষকদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করে এভাবে ভূমিহীন করা হবে এটা চলতে পারে না। সরকার এই ভূমিহীন মানুষের প্রতি অত্যন্ত যত্নবান। তাই আপনাদের প্রতি আহ্বান যারা ভূমিহীনদের প্রতি অবিচার করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। সংগঠিত করে তাদের মূল উচ্ছেদ করুন।টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সুশাসনের ঘাটতি ও ক্রমবর্ধমান দুর্নীতির কারণে ভূমি সমস্যাগুলো দেখা যায় এবং সাধারণ মানুষ দিন দিন ভূমিহীন হচ্ছে। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ, উন্নয়নের চাপ, শিল্পায়নের চাপ, ক্রমবর্ধমান আবাসন ব্যবস্থা, ভূমিদস্যু, আবাসন খাতের সাথে ক্ষমতাশীলদের যোগসাজশ্যতা, জলাশয় মালিকরা বন্দুকের নল দিয়ে ভূমি মালিকদের উচ্ছেদ, বিভিন্ন প্রভাবশালী রাজনীতিবীদ আইনের লোকের সাথে যোগসাজশ্যতা ইত্যাদি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে ৫৯ শতাংশ মানুষ ভূমি অধিকার আদায় করতে অনিয়ম ও দুর্নীতির স্বীকার হয়েছে। এর মধ্যে ভূমি জরিপ থেকে শুরু করে নামজারী করতে গিয়ে হয়রানি ও অর্থ প্রদান করতে হয়।ভূমিহীনদের অধিকার রক্ষায় কিছু পরামর্শ তুলে ধরেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক। এগুলোর মধ্যে রয়েছে জনগণের সম্পদ তাদের বিকল্প ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ করা যাবে না এমন আইন প্রয়োগ করতে হবে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তাদের যে দক্ষতা ও যোগ্যতা আছে তা যাতে ঠিকমতো প্রয়োগ করতে পারে সেদিকে নজর দিতে হবে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে তাদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে হবে, যাতে করে কোনো প্রভাবশালী মহল তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে সুশাসন থেকে দূরে না রাখতে পারে।এর আগে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ভূমিহীন প্রান্তিক কৃষক তাদের অভিমত ব্যক্ত করেন। তারা মন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।

আলোচনার সারাংশ উপস্থাপন করেন এএবির সদস্য শমশের আলী। এএবির কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবিরের সঞ্চালনায় অভিমত বর্ণনা ও বক্তব্য রাখেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, সাংসদ মো. আফতাব উদ্দিন সরকার, পঞ্চানন বিশ্বাস, শামসুল আলম দুদু, আলহাজ্ব মো. রেজাউল হক প্রমুখ।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ জুন ২০১৪/মামুন/দিলারা