জাতীয়

জমি ক্রয়ে ই-টিআইএন সনদের নিয়ম মানা হচ্ছে না

এম এ রহমান : সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভায় এক লাখ টাকার বেশী মূল্যের জমি ক্রয়ে ই-টিআইএন সনদ বাধ্যতামূলক হলেও মাঠ পর্যায়ে সে নিয়ম মানা হচ্ছে না।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) এরই মধ্যে আশুলিয়া, সাভার, জামালপুর, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, ধামরাই, হেমায়েতপুর ও রাজবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে এ সংক্রান্ত অভিযোগ আসছে। ফলে এনবিআর বিপুল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

চলতি অর্থবছরে শুরু থেকে সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা এলাকায় এক লাখ টাকার বেশী মূল্যের জমি ক্রয়ে ই-টিআইএন সনদ দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়। সে সঙ্গে এনবিআর জমি বা ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশনকালে উৎসে আয়কর আদায় হার পূণঃনির্ধারণ করে এসআরও জারি করে।

এসআরওতে উল্লেখ করা হয়েছে, আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এ একটি নতুন ধারা ৫৩ এইচ এইচ সন্নিবেশিত করে রাজধানী উন্নয়ন কতৃপক্ষ (রাউজক), চট্টগ্রাম  উন্নয়ন কতৃপক্ষ (সিডিএ), রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ), খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) ও জাতীয় গৃহায়ন কতৃপক্ষ (এনএইচএ) কর্তৃক জমি বা ফ্ল্যাটের দলিল রেজিস্ট্রেশনের সময় চার শতাংশ উৎসে আয়কর কাটতে হবে।

এছাড়া অর্থ আইন ২০১৪ তে মূলধনী সম্পত্তির সংজ্ঞা সংশোধন করায় কৃষি জমির বিক্রয় দলিল রেজিস্ট্রেশনের সময় এক শতাংশ অগ্রিম আয়কর সংগ্রহ করতে হবে।

এনবিআরের নির্দেশনায় আরো বলা আছে,সিটি করপোরেশন এবং জেলা সদরে অবস্থিত পৌরসভা এলাকার আওতাধীন ১ লাখ টাকার অধিক জমি ক্রয়ের ক্ষেত্রে ই-টিআইএন সনদ দাখিল করা বাধ্যতামূলক। চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে সংশ্লিষ্ট সকলকে এসব নিয়ম মনতে বলা হয়েছে।

কিন্তু নির্দেশনা দেওয়া হলেও মাঠ পর্যায়ে এসব নিয়ম মানা হচ্ছে না। ফলে এনবিআর বিপুল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

কর সার্কেলগুলো থেকে আসা অভিযোগ গুলোতে বলা আছে, ভূমি রেজিস্ট্রেশনের সাথে জড়িত এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তারা গোপন অর্থের বিনিময়ে ই-টিআইএন সনদ ছাড়াই জমি রেজিস্ট্রেশন করছে।এছাড়া ফ্ল্যাট ও জমি বিক্রয়ের উপর উৎসে আয়কর কর্তনের ক্ষেত্রেও অনিয়ম হচ্ছে। ভুমি রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় জমি ও ফ্ল্যাটের প্রকৃত মূল্যের তথ্য গোপন করে তারা উৎসে আয়কর ফাঁকি দিচ্ছে।

এসব বিষয়ে এনবিআরের এক কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে জানান, চলতি অর্থ বছরের বাজেটে আয়কর খাতেকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে আয়কর খাতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। কিছু ক্ষেত্রে নতুন কর সংযোজন করা হয়েছে। তবে জমি ও ফ্ল্যাটের উৎসে আয়কর আদায়ে মাঠ পর্যায়ে কিছু অনিয়মের অভিযোগ এনবিআরে এসেছে। কারণ এ বিষয়গুলোর সাথে এনবিআর সরাসরি জড়িত নয়। ভুমি মন্ত্রনালয়ের অধীনস্ত কিছু প্রতিষ্ঠান এ কর আদায়ের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।

তিনি আরো বলেন, অভিযোগ গুলো নিয়ে এনবিআর অর্থমন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে ভুমি মন্ত্রনালয়ের সাথে বসবে। মাঠ পর্যায়ে জমি বা ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশনের সময় এনবিআরের শর্তগুলো যাতে যথাযথ ভাবে মানা হয় এ বিষয়ে ভুমি মন্ত্রনালয়েরও সহযোগিতা চাওয়া হবে।

চলতি অর্থবছরে দেশের রাজস্ব আদায়ে আয়করে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। যেখানে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৫৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪জুলাই ২০১৪/এম এ রহমান/নওশের