জাতীয়

রাতে পৌঁছে উদ্ধারে অংশ নেবে কাণ্ডারি-২

নিজস্ব প্রতিবেদক, মাওয়া থেকে : পদ্মায় ডুবে যাওয়া পিনাক-৬ লঞ্চটির উদ্ধার অভিযানে অংশ নিতে উদ্ধারকারী জাহাজ ‘কাণ্ডারি-২’ বুধবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছাবে।বুধবার সন্ধ্যায় উদ্ধারকাজ পরিদর্শনকালে নৌপরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খান রাইজিংবিডিকে জানান, কাণ্ডারি-২ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রওনা দিয়েছে। জাহাজটি ঘটনাস্থলে এসে রাতেই উদ্ধার অভিযানে অংশ নেবে।     চট্টগ্রাম বন্দরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, বেলা ৩টার দিকে কাণ্ডারি-২ চাঁদপুরে ছিল। রাতেই সেটি ঘটনাস্থলে পৌঁছাবে।প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রওনা হওয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যেই বন্দরে ফিরে যায় উদ্ধারকারী জাহাজ ‘জরিপ-১০’। তবে জরিপ জাহাজটির সঙ্গে থাকা উদ্ধারকারী জাহাজ কাণ্ডারি-২ মাওয়া আসছে।জরিপ-১০  জাহাজে থাকা জাহাজ শনাক্তকরণের সব যন্ত্রপাতি কাণ্ডারি-২-এ তুলে দেওয়া হয়েছে। ডুবে যাওয়া জাহাজ শনাক্তকরণে সাইড স্ক্যান সোনার, সাব বটম প্রোপাইলার ও গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম কাণ্ডারি-২ জাহাজে আছে।  চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বন্দরে হাইডোগ্রাফি বিভাগের প্রধান কমান্ডার এম এম করিম চৌধুরীর নেতৃত্বে ১২ জনের একটি দক্ষ দল কাণ্ডারি-২ জাহাজে রয়েছেন।  বন্দর কর্মকর্তারা জানান, সাইড স্ক্যান সোনার যন্ত্রের সাহায্যে জাহাজের দুই পাশে ২০০ মিটার দূরত্বে পানির নিচে থাকা বস্তু শনাক্ত করা যায়। সাব বটম প্রোপাইলার যন্ত্রের সাহায্যে পানির তলায় বালি ও মাটির নিচের কঠিন বস্তু শনাক্ত করা যায়।

এটি পলি মাটির ৮০ ফুট নিচে পর্যন্ত বস্তুর অবস্থান শনাক্ত করতে পারে। তবে বালুর নিচে ১৮ ফুট পর্যন্ত শনাক্ত করতে সক্ষম। 

পানির নিচে বা বালি-মাটির নিচে জাহাজসহ কোনো বস্তু শনাক্ত হওয়ার পর সেই জায়গার অবস্থান নির্ধারণ করতে জিপিএস-এর সাহায্য নেওয়া হবে। মাওয়া ঘাটের উদ্দেশে কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী লঞ্চ এমএল পিনাক-৬ সোমবার বেলা ১১টার দিকে পদ্মা নদীতে প্রবল স্রোত এবং বাতাসে পড়ে ডুবে যায়। নানান প্রযুক্তি এবং প্রচেষ্টা চালিয়েও বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত লঞ্চটির অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি।বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ), বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি), নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও কোস্ট গার্ডের সদস্যরা এখনো যৌথভাবে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী জাহাজ ‘নির্ভীক’ ও ‘রুস্তম’ রয়েছে।বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান শামসুদ্দোহা খান সাংবাদিকদের বলেন, ডুবে যাওয়া লঞ্চের খোঁজে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এদিকে মাওয়া ও কাওড়াকান্দিতে চলছে স্বজনহারা ব্যক্তিদের মাতম। তারা শুধু স্বজনদের লাশ ফিরে পেতে চান বলে আহাজারি করছেন। তাদের আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠেছে সেখানকার পরিবেশ।

 

রাইজিংবিডি/মাওয়া/৬ আগস্ট ২০১৪/নাসির/বকুল/কমল কর্মকার