জাতীয়

উত্তরা আধুনিক মেডিকেলে একটি পোড়া লাশ, পরিচয় মেলেনি

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীরাই বেশি।

তবে শিক্ষার্থীদের স্বজনদের অনেকে তাদের আদরের সন্তানকে না পেয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ছুটে বেড়াচ্ছেন। অন্যদিকে, হাসপাতালগুলোতে স্বজনদের ছাড়াই আহতদের চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে, রয়েছে অজ্ঞাতনামা মরদেহও।

সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে বিমান দুর্ঘটনার পরই স্থানীয়রাসহ সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা চালায়। ঘটনাস্থল থেকে হতাহতদের দ্রুত উত্তরার স্থানীয় হাসপাতালসহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট, সিএমএইচের মতো বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। 

শুরুতে একজন নিহতের খবর পাওয়া গেলেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিহতের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান সাংবাদিকদের বিমান দুর্ঘটনায় ১৬ জনের মৃত্যুর কথা জানান।

পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল ১৯ জন নিহত হয়েছে বলে জানান। 

সর্বশেষ রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো বিবৃতিতে তালিকাসহ ২০ জন নিহত ও ১৭১ জন আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়।

তালিকা অনুযায়ী- কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে আহত আটজন, নিহত নেই; জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে আহত ৭০ জন, নিহত দুইজন; ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত তিনজন, নিহত একজন; সিএমএইচ-ঢাকা আহত ১৭ জন, নিহত ১২ জন; কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে আহত একজন, নিহত দুইজন; উত্তরার লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে আহত ১১ জন, নিহত দুইজন; উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে আহত ৬০ জন, নিহত একজন; উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতাল আহত একজন, নিহত নেই।

এর মধ্যে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে নিহত একজনের পরিচয় জানা যায়নি। শরীরের অধিকাংশ স্থান পুড়ে যাওয়া মরদেহটি সেখানে পড়ে আছে। নিখোঁজ স্কুল পড়ুয়া হতহতদের কোনো স্বজনকেও হাসপাতালে খোঁজ নিতে দেখা যায়নি।

এদিকে, আহতদের চিকিৎসার সুবিধার্থে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হাসপাতালে কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না। অন্যদের মতো হাসপাতালের সামনে থাকা সাংবাদিকদেরও ভিতরে প্রবেশাধিকার সংরক্ষণ করা হয়েছে। ফলে মরদেহের বর্ণনা, আইডি কার্ড, পোশাকসহ কোনো বিষয়েই জানা সম্ভব হয়নি।

উত্তরা আধুনিক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মো. বজলুল রহমান আদিল বলেন, “আমাদের এখানে দুটি মেজর বার্ণ হওয়া রোগী নিয়ে আসা হয়েছিল। তার মধ্যে একজন মৃত্যু ছিল। আর একজনের বিষয়ে আমরা নিশ্চিত ছিলাম না। তাই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

অজ্ঞাতনামা পোড়া মরদেহের ব্যাপারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম বলেন, “এখন উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটিমাত্র লাশ আছে। যার পরিচয় এখনো সনাক্ত করা যায়নি। কারণ লাশটির অধিকাংশ পুড়ে গেছে। সিআইডি ডিএনএ প্রোফাইল করে পরিচয় সনাক্তের চেষ্টা করবে।”

এর আগে, সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বিমান বাহিনীর একটি ‘এফ-৭ বিজেআই’ প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল শাখার ভবনে আছড়ে পড়ে এবং তাতে আগুন ধরে যায়।