জাতীয়

সম্প‌দের হিসাব চে‌য়ে এনবিআরের ১৭ কর্মকর্তা‌কে দুদকের নো‌টিশ

ঘুষ, দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ১৭ কর্মকর্তাকে সম্পদের হিসাব চেয়ে নো‌টিশ দি‌য়ে‌ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এন‌বিআ‌রের ১৭ কর্মকর্তা হলেন- কর কমিশনার (কর অঞ্চল-৩) এমএম ফজলুল হক, কর আপিল ট্রাইব্যুনালের কমিশনার লোকমান আহমেদ, আয়কর গোয়েন্দা ইউনিটের অতিরিক্ত কর কমিশনার সাহেলা সিদ্দিক, অতিরিক্ত কর কমিশনার মো. মামুন মিয়া, ভ্যাট গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার হাছান তারিক রিকাবদার, যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা সাহরিন সুস্মিতা, কর অ্যাকাডেমির যুগ্ম-কর কমিশনার মো. মোরশেদ উদ্দিন খান, কর অঞ্চল ৮-এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, কর অঞ্চল ১৬-এর উপকর কমিশনার মো. শিহাবুল ইসলাম, অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশিদ মিয়া, রেলওয়ে কাস্টমসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট পূর্বাঞ্চলের কমিশনার কাজী মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন, কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু, এনবিআরের যুগ্ম কমিশনার মো. তারিক হাছান, এনবিআরের সিআইসির সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আলমগীর হোসেন, এনবিআরের সদস্য মো. লুৎফুল আজিম ও সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সেগুন বা‌গিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ক‌মিশ‌নের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এ তথ্য জানান। 

তি‌নি বলেন, ‘‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিধির আলোকে নির্ধারিত ছক অনুযায়ী তাদের সম্পদ ও দায়-দেনার হিসাব বিবরণী দাখিলের আদেশ জারির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিগত কয়েক বছর তারা বিভিন্ন স্টেশনে চাকরির সময় একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শুল্ক, ভ্যাট ও ক্ষেত্র বিশেষে আয়কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে নিজেরা লাভবান হয়ে রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত  করার মাধ্যমে দুর্নীত, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।’’

এর আ‌গে এন‌বিআর কর্মকর্তা‌দের বির‌দ্ধে ঘুষ দুর্নী‌তির অ‌ভি‌যো‌গে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

দুদক জানায়, এন‌বিআরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য নির্ধারিত পরিমাণ কর আদায় না করে তাদের করের পরিমাণ কমিয়ে দিতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে প্রতি বছর সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। 

কিছু ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মালিককে হয়রানি করেন। অনেক করদাতা আগাম কর দেন। আবার কেউ কেউ বেশি কর দেন। নিয়ম হচ্ছে এই কর হিসাবনিকাশ করে বেশি দেওয়া হলে তা করদাতাকে ফেরত দিতে হয়। কিন্তু তথ্যউপাত্ত বিশ্লেষণ এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ থেকে জানা যায় করের বাড়তি টাকা ফেরত পেতে ঘুষ বা উপহার দিতে হয়।