জাতীয়

শতাধিক মস‌জিদ, মাদ্রাসা ও মাজারে হামলা হয়েছে: আহলে সূন্নাত

অন্তর্বর্তী সরকা‌রের এ সম‌য়ে শতাধিক মস‌জিদ, মাদ্রাসা ও মাজারে হামলা-ভাঙচুর হয়েছে ব‌লে দা‌বি ক‌রে‌ছেন আহলে সূন্নাত ওয়াল জামাআতের নেতারা।

শ‌নিবার (২৩ আগস্ট) তিন‌ আহ‌লে সুন্না‌তের এক‌টি ক‌মি‌টি গঠনের ল‌ক্ষ্যে রমনায় ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় কাউন্সিলে তারা এই দা‌বি ক‌রেন।

সু‌ফি ঘারানার বৃহত্তর অরাজ‌নৈ‌তিক সংগঠ‌নটির নেতারা ব‌লেন, ‘দেশে জ্যামিতিকহারে বেড়েই চলেছে সন্ত্রাস, লুটতরাজ, মব জাস্টিজ, চাঁদাবাজির মতো ইত্যাকার অবাঞ্ছিত কর্মকাণ্ড। থামছেই না মসজিদ, মাদ্রাসা, মাজার ও মন্দিরসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা, ভাঙচুর তথা অগ্নিসংযোগের মতো গর্হিত অপরাধ প্রবণতা। ৫ আগস্ট পরবর্তী এক বছরে প্রায় শতাধিক মাজারে হামলা-ভাঙচুর হয়েছে। যা ৫৫ বছরের এদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে ম্লান করে দিয়েছে।’

পীরে তরিকত আলহাজ সাঈফুদ্দীন আহমদ আল-হাসানী ওয়াল হুসাইনী মাইজভাণ্ডারী্র সভাপতিত্বে কাউন্সিল উদ্বোধন ক‌রেন পীরে তরিকত শেখ আল্লামা সিরাজ নগরী।

খাজা আরিফুর রহমান তাহেরী, আবুল কাশেম ফযলুল হক, মাওলান আ ন ম মাসুদ হোসাইন আল-কাদেরী ও গোলাম মাহমুদ ভূইয়া মানিকের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ মুজাদ্দেদী, আল্লামা এম এ মতিন, শাইখুল হাদীস কাজী মোহাম্মদ মুঈন উদ্দীন আশরাফী, ড. শাহ আব্দুল্লাহ আল মারুফ শাহ, পীর সৈয়দ মসিহুদ্দৌলা, পীর আল্লামা আবুল কাশেম নুরী, অধ্যক্ষ আবুল ফারাহ মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন, শাইখ মুফতি শফিউল আলম নিজামী, অধ্যক্ষ স উ ম আবদুস সামাদ, অধ্যক্ষ জয়নুল আবেদীন জুবায়ের, শাইখ আবু সুফিয়ান আবেদী খান আলকাদেরী, অধ্যক্ষ আল্লামা জসিম উদ্দিন আল আজহারী, অধ্যক্ষ এস এম ফরিদ উদ্দীন, অধ্যক্ষ ইবরাহীম আখতারী, স ম হামেদ হোসাইন, এইচ এম মুজিবুল হক শাকুর, ড. ইসমাইল নোমানী, পীর গোলামুর রহমান আশরাফ শাহ, মুফতি নাজিরুল আমিন রেজভী, শেখ শিব্বির আহমদ সিরাজনগরী, ড. মুহাম্মদ আব্দুল অদুদ, মাওলানা মোশাররফ হোসেন হেলালী, এম সোলায়মান ফরিদ, পীরে তরিকত এয়ার মোহাম্মদ পেয়ারু, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব খলিলুর রহমান নিজামী, পীর হারুনুর রশিদ রেজভী, অধ্যক্ষ আবু জাফর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মুফতি মাহমুদুল হাসান আল কাদেরী।

ইসলামের সঠিক পথ ও মতের নাম আহলে সূন্নাত ওয়াল জামাআত উল্লেখ ক‌রে সংগঠন‌টির নেতারা ব‌লেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র। তবুও এদেশে মুসলিম বিদ্বেষী অপশক্তির আধিপত্য দৃশ্যমান হয় অত্যন্ত কদর্যভাবে। সর্বত্র  ইসলামবিরোধী চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র অব্যাহত থাকলেও এক্ষেত্রে রাষ্ট্রযন্ত্র নির্বাক ও উদাসীন। জাতীয় নীতি-নির্ধারণসহ রাষ্ট্রীয় যেকোনো বিষয়ে বাতিল অপশক্তির সক্রিয় অংশগ্রহণ পরিলক্ষিত হলেও সূফিবাদী ঘরানার আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত উপেক্ষিত। অথচ দে‌শের বৃহত্তর মুস‌লিম জন‌গোষ্ঠী সু‌ফিবা‌দে বিশ্বাসী। তা‌দের ভো‌টে সরকার গঠন হয়।’

তারা ব‌লেন, ‘একটি মহল ইসলামী খোলসে মুসলমানদের মধ্যে অবাঞ্ছিত বিভাজন তৈরি করছে। ইসলাম নাম ব্যবহার করে মুসলমানদের পবিত্র ম্যান্ডেট ছিনতাই করার পাঁয়তারা করছে। এছাড়া সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি, অর্থপাচার রোধ এবং পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার দাবি জানানোসহ কাউন্সিলে ২৩ দফা দাবি সম্বলিত একটি ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়।’

কাউন্সিলে তিন আহ‌লে সুন্নাত মি‌লে শাইখুল হাদীস আল্লামা কাজী মুহাম্মদ মুঈন উদ্দীন আশরাফী‌কে চেয়ারম্যান, পীর আল্লামা নুরীকে নির্বাহী চেয়ারম্যান, ড. আব্দুল্লাহ আল মারুফ শাহকে মহাসচিব করে এক‌টি কমিটি ঘোষণা করা হয়। মিলাদ, কিয়াম ও মোনাজাতের মাধ্যমে কাউন্সিল সমাপ্ত হয়।

উপ‌স্থিত ছি‌লেন পীর আব্দর রহমান আলকাদেরী, অ্যাডভোকেট ইকবাল হাসান, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোখতার আহমদ সিদ্দিকী, মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরী, এম মহিউল আলম চৌধুরী হালিম, মুহাম্মদ ইবরাহীম, এম ওয়াহেদ মুরাদ, এস এম তারেক হোসাইন, মোহাম্মদ আব্দুল মতিন, ফিরোজ আলম খোকন, মাহমুদুল হাসান আনছারী, এস এম তারেক হোসাইন, মুহাম্মদ আখতার হোসেন চৌধুরী, আবু নাসের মোহাম্মদ মুসা, মুহাম্মদ অলিউর রহমান, মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ফরিদ উদ্দীন চৌধুরী ও শাহেদুল আলম প্রমুখ।