জাতীয়

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শান্তিপূর্ণ’ ছাত্র সংসদ ভোটে বিজয়ী যারা

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচন করে দেখাল গণ বিশ্ববিদ্যালয়। নির্বাচন ঘিরে উৎসবের আবহের সঙ্গে ছিল উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা; তবে পুরো নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে।

এ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (গকসু) সহসভাপতি (ভিপি) পদে বিজয়ী হয়েছেন বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াছিন আল মৃদুল দেওয়ান। আর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে জয় নিশ্চিত করেছেন ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের মো. রায়হান খান।

নানা অব্যবস্থাপনার জন্য সমালোচিত ডাকসু-জাকুর পর দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম সুষ্ঠুভাবে ছাত্র সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করে দেখাল প্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত গণ বিশ্ববিদ্যালয়। উচ্চশিক্ষায় সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রবেশ বাড়ানোর লক্ষ্যে তুলনামূলক কম ব্যয়ের গণ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে গেছেন ‘গণমানুষের বন্ধু’ খ্যাত জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

শুক্রবার রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গকসু নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল আলম। এ সময় কমিশনের অপর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

গকসুর ভিপি পদে ৬৯২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন মৃদুল দেওয়ান। এই পদে তার সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছেন মো. আব্দুল মাজেদ সালাফী, যিনি ৬৭৭ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন।

জিএস পদে রায়হান খান বিজয়ী হয়েছেন। শিবির-সমর্থিত এই প্রার্থী পেয়েছেন ১১২১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. অন্তু দেওয়ান ৮১০ ভোট পেয়েছেন। 

এজিএস পদে ১৪০০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন শিবির-সমর্থিত প্রার্থী সামিউল হাসান শোভন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিফাতুর রহমান শিশির ১২৩৯ ভোট পেয়েছেন। 

কোষাধ্যক্ষ পদে বিজয়ী হয়েছেন খন্দকার আব্দুর রহিম, তিনি পেয়েছেন ১৪৫০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পরাজিত প্রার্থী সালাউদ্দিন পেয়েছেন ৯৫৩ ভোট।

ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১৪৭৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন ফয়সাল আহমেদ। সহ-ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১৩০৭ ভোট পেয়ে আব্দুল্লাহ আল নোমান বিজয়ী হয়েছেন।

সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ২৩৯৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন মো. মারুফ।

সহ-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ২১৯৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন লীশা চাকমা।

দপ্তর সম্পাদক পদে শারমিন আক্তার বিজয়ী হয়েছেন ১১০৮ ভোট পেয়ে। প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ১৮৭৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন মো. জান্নাতুল ফেরদৌস।

সমাজকল্যাণ ও ক্যান্টিন সম্পাদক পদে ১১৪৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন মো. মনোয়ার হোসেন অন্তর।

কৃষি অনুষদে বিজয়ী হয়েছেন মহিউল আলম দোলন, ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদে জয় পেয়েছেন মো. হুমায়ুন কবির।

কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে চারজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন: শাকিল আহমেদ, মো. সেলিম আহমেদ অলি, মো. মেহেদি হাসান, মিনতুজ আক্তার মিম। 

বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদে দুজন নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন: মেহেরুন খিলজি মিতু, মো. ইমদাদুল হক মিলন।

স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদে দুজন বিজয়ী হয়েছেন। তারা হলেন: নাশরুন সেঁজুতি অরণি ও পার্থ সরকার।

সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত চলে গকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে টানা ভোট গণনার পর ফল ঘোষণা করা হয়। 

গকসুতে এবার ভোটার ৪৬৭২ জন, যাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।

২০১৩ সালে গকসুর প্রথম নির্বাচন হয়েছিল। সবশেষ ২০১৮ সালে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচন হয়। এর প্রায় সাত বছর পর চতুর্থবারের মতো গকসু নির্বাচন হলো। 

ভোটগ্রহণ, গণণা ও ফলাফল সবই শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় চারশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।

অবশ্য ভোটগণনার সময় প্রার্থী ও প্রার্থীদের এজেন্টের না রাখায় অসন্তোষ তৈরি হয়। গণনাকক্ষে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করায়, তা নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়।