জাতীয়

আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তারে সম্পাদক পরিষদের নিন্দা, মামলা প্রত্যাহার দাবি

সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে ডিবি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে আটকে রাখার পরদিন সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তার দেখানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ।

এই আচরণকে অতীতের স্বৈরাচারী শাসনামলে সাংবাদিকদের প্রতি রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের স্মৃতির সঙ্গে তুলনা করেছে সংগঠনটি।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নূরুল কবীর ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ এই নিন্দা জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, ১৪ ডিসেম্বর (রবিবার) কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে ডিবি কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। তাকে সেখানে আটকে রেখে পরদিন তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয় এবং গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

রবিবার সন্ধ্যার পর সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছিল। তিনি জানিয়েছিলেন, তাকে ধানমন্ডি এলাকার একটি জিম (ব্যায়ামাগার) থেকে রাত ৮টার দিকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয় এবং ডিবিপ্রধান তার সঙ্গে কথা বলবেন বলে তাকে জানানো হয়।

সোমবার বেলা ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে ডিবিপ্রধান মো. শফিকুল ইসলাম নিশ্চিত করেন যে, সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পরে জানা যায়, ‘জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স’ নামের একটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংগঠক আরিয়ান আহমেদ রবিবার রাত ২টার দিকে উত্তরা পশ্চিম থানায় এই মামলাটি করেন। এই মামলায় সাংবাদিক আনিস আলমগীর, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ মোট পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।

সম্পাদক পরিষদ তাদের বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে বলেছে, কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তা অবশ্যই প্রচলিত আইন ও ন্যায়বিচারসম্মত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে। অভিযোগ ছাড়াই ডিবি কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া, আটকে রাখা কিংবা সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের চর্চা তারা অতীতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েও দেখেছে, যখন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হয়রানি ও নির্বিচার গ্রেপ্তার ছিল নিয়মিত ঘটনা। বর্তমান ঘটনা সেই দুঃখজনক বাস্তবতারই পুনরাবৃত্তি বলে তারা মনে করে।

বিবৃতিতে সম্পাদক পরিষদ বলেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে বহু সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলা করা হয়েছে এবং অনেকেই এখনো কারাগারে আছেন। সম্পাদক পরিষদ এ ধরনের আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং সব ভিত্তিহীন মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে।

মিথ্যা মামলা ও হয়রানির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও এখনো মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হয়নি বলে তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই ধরনের আচরণ অতীতের স্বৈরাচারী শাসনামলের সাংবাদিক নিপীড়নের স্মৃতিই মনে করিয়ে দেয়।