জাতীয় ক্রিকেট লিগ ২০১৯-২০

‘আমার কাছে প্রতিটা উইকেট স্পেশাল’

২০০১-০২ মৌসুমে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক আব্দুর রাজ্জাক রাজের।  খুলনার হয়ে মাঠে নেমেছিলেন সিলেট বিভাগের বিপক্ষে।  সাদা পোশাকে প্রথম দিনের শেষ বিকেলে বোলিংয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন গুটি কয়েক ওভার।  সাফল্য আসেনি।  কিন্তু পরের দিন সিলেটের ব্যাটিং অর্ডার গুড়িয়ে দেন এ স্পিনার।

সিলেটের ব্যাটসম্যান রাজিন সালেহকে আউট করে উইকেটের খাতা খুলেন।  এরপর তার পকেটে যায় আরও চারটি।  প্রথম ইনিংসেই তার শিকার পাঁচ।  উইকেটের সেই খাতা এখনও স্রোতের শৈবালের মতো ভেসে বেড়াচ্ছে।  বাঁহাতি স্পিনার এখন নতুন মাইলফলকের সামনে।  বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ছয়শ উইকেটের সামনে দাঁড়িয়ে।  আর মাত্র ছয় উইকেট। তাহলেই ইতিহাস।  কিন্তু বড় অর্জনের সামনে দাঁড়িয়েও রাজ্জাকের তেমন উচ্ছ্বাস নেই,‘এখন আপনি বলার পর মনে পড়ল যে আমার ছয়’শ উইকেট হতে চলছে! খবরটা অবশ্যই ভালো খবর। ’

শনিবার ওয়ালটন জাতীয় ক্রিকেট লিগের চতুর্থ রাউন্ড শুরু হবে। নিজেদের ঝালিয়ে নিতে শুক্রবার দুপুরে একাডেমি মাঠে অনুশীলন করেছে খুলনা বিভাগের ক্রিকেটাররা।  অনুশীলনে নামার আগে রাজ্জাককে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল ৫৯৪ উইকেটের মধ্যে কোনটা তার স্পেশাল? খুলনার অধিনায়কের সাফ কথা,‘প্রতিটা উইকেটের জন্য কষ্ট করতে হয়েছে। তাই আলাদা করার ভাবনা কখনো হয়নি।  আমার কাছে প্রতিটা উইকেট স্পেশাল। সেটা ব্যাটসম্যান হোক বা বোলারের উইকেট হোক।’

উইকেট সংখ্যায় রাজ্জাকের ধারের কাছেও নেই কেউ।  একক আধিপত্য দেখিয়ে রাজ্জাক একের পর এক মাইলফলক ছুঁয়ে যাচ্ছেন। নিজেকে নিয়ে যাচ্ছেন নতুন উচ্চতায়।  কোথায় থামতে চান রাজ্জাক? সেই উত্তর নেই তার কাছে,‘বলতে পারছি না।  দেখি কতোদিন কি অবস্থায় থাকি। জানি না…আসলে ফিটনেসের ওপর নির্ভর করে এবং মনের ইচ্ছার ওপর। মনের ইচ্ছা এখনও আছে। ফিটনেসে চেষ্টা করছি ঠিক করে ধরে রাখার। ’

বয়স ৩৭ ছাড়িয়েছে।  রাজ্জাকের সমবয়সী অনেকেই গিয়েছেন কোচিংয়ে, অনেকেই খেলা ছেড়ে গিয়েছেন ভিন্ন পথে। সেখানে রাজ্জাক এখনও ২২ গজের চিরচেনা সৈনিক।  কথোপকথনের শেষ পর্যায়ে নিজের অনুপ্রেরণার কথা জানালেন দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে,‘খেলা থেকেই আমি প্রেরণা পাই।  মাঠে নামলে নিজেকে নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ থাকে না।  খেলা ছাড়া আমাদের আর কোনো প্রেরণা নেই।  অনেকেই বলে জাতীয় দলের কথা…আমি সেভাবে চিন্তা করি না।  আমি খুলনায় খেলছি। এটা অনেক বড়। আরও কতো ক্রিকেটার সুযোগের অপেক্ষায় আছে। এটাই প্রেরণা।  এর থেকে বেশি কিছু না।’ ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল