আমিনুল ইসলাম : রুবেল হোসেন। বিশ্বকাপে যিনি দারুণ বোলিং করেছিলেন। বিশেষ করে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। তার অসাধারণ বোলিং নৈপূণ্যে বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল টাইগাররা। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে বিতর্কিতভাবে হেরে যায় বাংলাদেশ।
ওই ম্যাচে রুবেল হোসেনের একটি বলে রোহিত শর্মা আউট হলেও কোমরের উপরে বল ছিল অভিযোগ এনে আউটটি বাতিল করে দেন দুই আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড ও আলিম দার। পরবর্তীতে এই আউট নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বাংলাদেশে মানববন্ধন থেকে শুরু করে দুই আম্পায়ারের কুশপুতুল দাহ পর্যন্ত করা হয়।
বিশ্বকাপ থেকে দেশে ফেরার পর রুবেলকে নিয়ে ৪১ সেকেন্ডের একটি বিজ্ঞাপন বানায় দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় মোবাইল অপারেটর ‘রবি’। ওই বিজ্ঞাপনটির থিম ছিল ভারতের বিপক্ষে বিতর্কিত কোয়ার্টার ফাইনালটি। বিশেষ করে রুবেলের বলটি। বিজ্ঞাপনে রুবেলের একটি আঞ্চলিক ভাষার ডায়লগ ছিল এরকম, ‘এরপর আর কেউ বাঁচাইতে পারব না, ডাইরেক্ট ভাইঙ্গে দেব।’
ওই বিজ্ঞাপন করার পর রুবেল হোসেন পাকিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছেন। উইকেট পেয়েছেন ৬টি। কিন্তু কোনো ম্যাচেই তিনি কাউকে বোল্ড আউট করতে পারেননি। অবশেষে তিনি সেটি করতে পেরেছেন।
এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ছিলেন না তিনি। প্রথম ওয়ানডেতেও তাকে সেরা একাদশে রাখা হয়নি। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সেরা একাদশে স্থান পান রুবেল হোসেন। ইনিংসের ১৩তম ওভারের প্রথম বলেই তিনি বোল্ড আউট করেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক হাশিম আমলাকে।
রুবেল হোসেনের বলটি আমলা রক্ষণাত্মক ঢংয়ে খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাটে-বলে সংযোগ হয়নি। বল গিয়ে অফ স্ট্যাম্পে আঘাত হেনে উপরে ফেলে। বলটি এতো জোরে আঘাত করে যে স্ট্যাম্প ঘূর্ণিপাক খেয়ে বেশ কয়েক ফুট দূরে গিয়ে পরে। এরপর অবশ্য রুবেল আরো একটি উইকেট পান। ৩৬তম ওভারের তৃতীয় বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ক্রিস মরিসকে।বিশ্বকাপের পর রুবেলের যতো উইকেট :পাকিস্তান সিরিজ :
প্রথম ওয়ানডেতে রুবেল ৮ ওভার বল করে ১ মেডেনসহ ৪৫ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন। রুবেলের বলে নাসিরের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ রেজওয়ান (৬৭)।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৭ ওভার বল করে ২ মেডেনসহ ২৭ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন। তার বলে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন সরফরাজ আহমেদ (৭)।
তৃতীয় ওয়ানডেতে ৬ ওভার বল করে ৪৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। রুবেলের বলে কট আউট হন সাদ নাসিম (২২) ও ওয়াহাব রিয়াজ (৭)।
ভারত সিরিজ:
ভারতের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ৬ ওভার বল করে ৩৬ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থাকেন। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৭ ওভার বল করে ২৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। তার বলে কট আউট হন আম্বাতি রাইডু (০) ও ভুবনেশ্বর কুমার (৩)। তৃতীয় ওয়ানডেতে ৯ ওভার বল করে ৭৫ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থাকেন তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ :
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সেরা একাদশে ছিলেন না। ছিলেন না প্রথম ওয়ানডেতেও। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নেমে ৯ ওভার বল করে ২ মেডেনসহ ৩৪ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। হাশিম আমলাকে বোল্ড করেন ও ক্রিস মরিসকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন।
এখন দেখার বিষয় তৃতীয় ওয়ানডেতে বল হাতে কেমন কী করেন রুবেল হোসেন। আমলাকে বোল্ড করার ভিডিও লিঙ্ক :
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ জুলাই ২০১৫/আমিনুল/টিপু