সাতসতেরো

ভূবন বিখ্যাত রাজপ্রাসাদ : পর্ব ১

সৃষ্টি ঘটক : এক যে ছিল রাজা। রাজার ছিল রানি আর মস্ত এক প্রাসাদ...। প্রায় প্রতিটি রূপকথার শুরু এভাবেই হয়। রূপকথায় রাজার মস্ত প্রাসাদের কথা শুনে কল্পনার ঘোরে ‘আমরা সবাই রাজা’ বনে  যাই । তবে রাজপ্রাসাদ নিয়ে রূপকথার জন্ম হলেও আমরা বিশ্বের এমন কিছু রাজপ্রাসাদের গল্প বলব, যেগুলোর অস্তিত্ব এখনো রয়েছে। ভূবন বিখ্যাত সব রাজপ্রাসাদ নিয়ে আজ পড়ুন প্রথম পর্ব।

 

ডলমাবাহসে প্রাসাদডলমাবাহসে প্রাসাদ তুরস্কের প্রাক্তন রাজধানী ইস্তাম্বুলের প্রশাসনিক জেলা বেসিকতাসে অবস্থিত। বোসফোরাস প্রণালির ইউরোপীয় তীরে তুরস্কে এর অবস্থান। ১৮৫৬ থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্ত অটোম্যান সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল এটি।

 

প্রাসাদটি ১৮৫৬ সালে সম্রাট সুলতান আবদুল মেসিদের  আদেশে নির্মাণ করা হয়। এর স্থপতি ছিলেন গ্যারাবেট বাল্যান। এর নির্মাণ কাজে তৎকালীন ৫ মিলিয়ন অটোম্যান মেসিডিই স্বর্ণমুদ্রা ব্যয় হয়, যা  বর্তমানে ৩৫ টন স্বর্ণের মূল্যের সমান।

 

১ লাখ ১০ হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে নির্মিত প্রাসাদটি তিনটি প্রধান অংশে বিভক্ত, যার মধ্যে একটি অংশ পুরুষদের জন্য সংরক্ষিত, একটি বাণিজ্যিক হল এবং শেষটি হেরেম। এই হেরেমটি সুলতানের পরিবারিক বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করা হতো। মূল প্রাসাদের আয়তন ৪৫ হাজার বর্গ মিটার (১১.২ একর)। প্রাসাদে মোট ২৮৫টি কক্ষ, ৪৬টি হলরুম, ছয়টি রাজকীয় হামামখানা (স্নানাগার) এবং ৪৮টি শৌচাগার রয়েছে।

   

ডলমাবাহসে প্রাসাদটি দেখতে গেলে প্রথমেই ‘মেধল হল’ চোখে পড়ে। এই হল সমুদ্রতীরের সম্মুখভাগে অবস্থিত। এটি অটোম্যান রাজ্যের সভাকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

 

মেধল হলের পরেই ডান দিকে তৎকালীন রাজ্যের হিসাবরক্ষকদের হল অবস্থিত। এই হলে প্রাসাদের সর্বাধিক সংখ্যক দেয়ালচিত্র আছে।

 

স্বাধীন তুরস্কের স্থপতি ও প্রথম রাষ্ট্রপতি মুস্তফা কামাল আতাতুর্ক চিকিৎসার জন্য জীবনের শেষ সময়গুলো ডলমাবাহসে প্রাসাদে কাটান। তিনি ১৯৩৮ সালের ১০ নভেম্বর সকাল ৯টা ৫মিনিটে এ প্রাসাদেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কামাল আতাতুর্কের মৃত্যুর মুহূতে পুরো প্রাসাদের সব ঘড়ি ৯টা ৫ মিনিটে বন্ধ করে দেওয়া হয়, যা আর চালু করা হয়নি। পুরোনো ঘড়িগুলোর পাশাপাশি পরে নতুন ঘড়ি লাগানো হয়, তবে এখনো পর্যন্ত পুরোনোগুলোর কাটা ৯টা ৫মিনিটেই স্তব্ধ হয়ে আছে।

 

মহীশূর রাজপ্রাসাদতাজমহলের পর মহীশূর রাজপ্রাসাদ ভারতের অন্যতম দর্শনীয় স্থান। শেরে মহীশূর টিপু সুলতানের স্মৃতিবিজড়িত এই শহর দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটকে অবস্থিত। শহরটিতে সাতটি প্রাসাদ থাকায় মহীশূরকে প্রাসাদের শহর বলা হয়। প্রতিবছর ৬ লাখের বেশি দর্শনার্থী প্রাসাদটি দেখতে আসে।

 

শরৎকালে এই প্রাসাদে বিখ্যাত ‘মহীশূর দশরা উৎসব’ উদযাপিত হয়, যা মহীশূরের সবচেয়ে ব্যয়বহুল উৎসব। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, মহাদেবী দুর্গা ত্রিশুল দিয়ে মহিষাসুরকে বধ করেন। উৎসবের দশম দিনকে মহাবিজয়া দশমী বলা হয়। দশরা উৎসবে প্রাসাদে ২ মাস ধরে ৯৬ হাজারেরও বেশি প্রদীপ জ্বালানো হয়। মহীশূর প্রাসাদে ১৭৯৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এই উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে।

 

প্রাসাদটি  ইন্দো-ইসলামিক স্থাপত্যকলার নিদর্শন। এর অম্বভিলাসা হল রাজা তার ঘনিষ্ঠ প্রজাদের আর্জি শোনা এবং মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ব্যবহার করতেন। ঐশ্বর্যমণ্ডিত এই হলটি স্বর্ণের তৈরি স্তম্ভ, ক্ষোদাই করা ছাদ এবং ইস্পাতের নকশা করা গ্রিল দিয়ে সুসজ্জিত।

   

প্রাসাদটির একটি কক্ষে উনিশ ও বিশ শতকের বহু ঐতিহ্যবাহী পুতুল এবং ভারত ও ইউরোপের অনেক ভাষ্কর্য সংরক্ষিত আছে। একই কক্ষে একটি কাঠের তৈরি হাতির মূর্তি আছে, যার সজ্জায় ৮৪ কিলোগ্রাম স্বর্ণ ব্যবহার করা হয়েছে।

 

মহীশূর প্রাসাদে ১২টি হিন্দু মন্দির আছে, যার মধ্যে প্রাচীনতমটি ১৪ শতকে এবং সর্বশেষটি ১৯৫৩ সালে স্থাপিত হয়।

 

প্রসাদটির তিনটি প্রবেশদ্বার রয়েছে। এর মধ্যে পূর্ব গেট এবং পশ্চিম গেট শুধু দশরা উৎসবের সময়ে খোলা হয়। আর দক্ষিণ ফটক সাধারণ জনগণের জন্য খোলা থাকে। প্রধান ফটকের (পূর্ব গেট) গায়ে লেখা আছে ‘কখনো ত্রস্ত নই’।

 

জগ মন্দির প্রাসাদজগ মন্দির প্রাসাদকে লেকগার্ডেন প্যালেসও বলা হয়। এটি ভারতের রাজস্থানের উদাইপুরে পিচোলা হ্রদের মধ্যে অবস্থিত। সত্যিই এই প্রাসাদ যারা দেখেছেন বা ছবি দেখেছেন, তাদের মধ্যে প্রাসাদবিলাস চড়াও হতে পারে। চারপাশে জলরাশি আর ছোট্ট একটি দ্বীপের পুরো জায়গাটুকু কাজে লাগিয়ে তৈরি হয়েছে দৃষ্টিনন্দন প্রাসাদ।

   

মেওয়ার রাজত্বকালে সিসোদিয়া রাজপুতের তিনজন মহারাজার অবদানে এই প্রাসাদ নির্মিত হয়। ১৫৫১ সালে মহারাজা অমর সিং এই প্রাসাদের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। পরে মহারাজা করন সিং(১৬২০-১৬২৮) এবং মহারাজা জগৎ সিং (১৬২৮-১৬৫২) এর নির্মাণ কাজ শেষ করেন। মহারাজা জগৎ সিংয়ের নামেই প্রাসাদের নামকরণ করা হয়। গ্রীষ্মকালে এই প্রাসাদে থাকত রাজপরিবার। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান করতে ব্যবহার প্রাসাদটি ব্যবহার করা হতো।

 

১৫৫১ সালে মহারাজা অমর সিং তৈরি করেন প্রথম গুল মহল। এই গুল মহলে মুঘল সম্রাট খুরাম ওরফে শাহজাহানের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। মহারাজা জগৎ সিং খুরামের জন্য গুল মহলটি সংস্কার করান। পরে প্রধান প্রাসাদ জগ মন্দিরকে গুল মহলের সঙ্গে একত্রিত করা হয়। প্রাসাদের কোণে আট কোণাকৃতির টাওয়ার আছে, যার শীর্ষে আছে গম্বুজ। প্রাসাদে প্রবেশের আগে  দুই দিকে চারটি করে শ্বেতপাথরের হাতির মূর্তি চোখে পড়বে। প্রাসাদের আঙিনার বাগানে রয়েছে নানা প্রজাতির ফুলগাছ। প্রাসাদের উত্তরে মারবেল পাথরের তৈরি বিশ্রামাগার বর্তমানে রেস্টুরেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

 

পেনা জাতীয় প্রাসাদপেনা জাতীয় প্রাসাদ পর্তুগালের সপ্তাশ্চার্যের একটি। এটি সিনত্রা শহরের  কাছে সাও পেদ্রো এলাকায় একটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। রৌদ্রজ্জ্বল দিনে এই প্রাসাদটি লিসবন এবং শহরের অন্যান্য স্থান থেকে সহজেই দেখা যায়। এটি একটি জাতীয় স্থাপনা এবং ইউনেসকোর তালিকাভুক্ত বিশ্ব ঐতিহ্য। প্রাসাদটি পর্তুগিজ রিপাবলিকের রাষ্ট্রপতির সরকারি অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য সরকারি অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহৃত হয়। রোমান্টিক যুগের সূচনালগ্নে ইউরোপের সবচেয়ে সুন্দর স্থাপনা বিবেচনা করা হয় পেনা প্রাসাদকে।

 

মধ্যযুগে ‘আওয়ার লেডি অফ পেনা’-কে উৎসর্গ করে পাহাড়ের চূড়ায় একটি চ্যাপেল নির্মাণের মাধ্যমে প্রাসাদটির ইতিহাস শুরু হয়।  বলা হয়ে থাকে, পেনায় হঠাৎ মা মেরির আগমন ঘটে। তার স্মৃতি অম্লান করে রাখতে পেনায় চ্যাপেল নির্মাণ করা হয়। এর দীর্ঘদিন পর চ্যাপেলকে ঘিরে তৈরি হয় বিশাল প্রাসাদ।

 

১৪৯৩ সালে রাজা দ্বিতীয় জন তার স্ত্রী রানি লিওনকে সঙ্গে নিয়ে পেনার চ্যাপেল পরিদর্শনে যান। সেখান গিয়ে রানি প্রতিজ্ঞা করেন চ্যাপেলকে কেন্দ্র করে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করা হবে। সেই প্রতিজ্ঞা পূরণ করতে এই প্রাসাদটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন রাজা দ্বিতীয় জন। এই পবিত্র স্থানটি তার উত্তরাধিকার রাজা ম্যানুয়েলের খুব প্রিয় ছিল। তারপর আবার জেরমো নামের এক সন্যাসী তাকে আদেশ করেন সেখানে একটি আশ্রম তৈরি করতে। এই আদেশের পর ম্যানুয়েল অনেক অর্থ দেন আশ্রম তৈরির কাজে।

   

১৬ শতকে পেনার আশ্রম অনেক ছোট ছিল এবং সর্বোচ্চ ১৮ জন সন্যাসী সেখানে থাকতে পারতেন। এটি ছিল ধ্যানের জন্য উপযুক্ত স্থান। কিন্তু ১৮ শতকে আশ্রমটি ভূমিকম্পে এবং বজ্রপাতে প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। ১৮৩৮ সালে যুবরাজ ফারদিনান্দ রাজা হওয়ার পর আশ্রমটি  সংস্কার করার সিদ্ধান্ত নেন এবং সেই মোতাবেক ১৮৪৩ থেকে ১৮৫৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সংস্কার কাজ চলে। ১৮৮৯ সালে পর্তুগিজ সরকার স্থাপনাটি কিনে নেয়।

 

এই প্রাসাদে পর্তুগালের সবশেষ রানি অ্যামেলীয়া তার অন্তিম দিনগুলো কাটান। তার স্মৃতিগুলো জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা লাল ও হলুদের দ্যূতি ছড়ানো প্রাসাদটি যে কাউকেই সম্মোহিত করে ফেলে।

 

১৯১০ সালের স্বাধীনতা আন্দোলনের পর সরকার এই স্থাপনাকে জাতীয় স্থাপনার স্বীকৃতি দেয় এবং একই সঙ্গে এটিকে জাদুঘরে পরিণত করা হয়।

 

সিটি প্যালেসসিটি প্যালেস ভারতের রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরে অবস্থিত। চন্দ্রা মহল, মুবারক মহলসহ আরো কয়েকটি দালান নিয়ে প্রাসাদটি গঠিত। মহারাজা সাওয়াই জয়সিংহ প্রাসাদটি নির্মাণ করেন। এটি রাজস্থানি এবং মুঘল স্থাপত্যবিদ্যার সংমিশ্রণে তৈরি। প্রাসাদটি প্রশস্ত চত্বর, বাগান এবং মন্দির দিয়ে ঘেরা।

 

সিটি প্যালেসের একটি অংশ বর্তমানে জাদুঘর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। জাদুঘরের নাম মহারাজা সাওয়াই জয়সিংহ জাদুঘর। এখানে পশমি ও সিল্কের আকর্ষণীয় রাজকীয় পোশাক সংরক্ষিত আছে।

   

বিশেষ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য রাজা ব্যবহার করতে প্রাসাদের মার্বেল পাথরের তৈরি দিওয়ান-ই-খাস মহল। ধারণা করা হয়, এই মহলের বৃহদাকার রূপার পাত্র দুটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রূপার পাত্র। প্রত্যেকটি পাত্রের উচ্চতা ৫.২ ফুট। এবং একেকটি পাত্রে ৪ হাজার লিটার করে পানি রাখা যায়। এই পাত্র দুটি গঙ্গাজল দিয়ে পূর্ণ থাকত, যা রাজার গোসল এবং রান্না ও পবিত্র কাজে ব্যবহার করা হতো।

 

‘গণদরবার হল’ নামে পরিচিত দিওয়ান-ই-আম হলটির ছাদ বহু রঙ, মূল্যবান পাথর এবং বিশাল ক্রিস্টাল ঝাড়বাতি দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।  চারপাশে হাতে লেখা ছোট ভগবত গীতা এবং অন্যান্য পবিত্র হিন্দু ধর্মগ্রন্থ সংরক্ষিত আছে।

 

লক্ষ্মী বিলাসলক্ষ্মী বিলাস প্রাসাদ ভারতের গুজরাট রাজ্যের বদোদরায় অবস্থিত। মূলত অনেকগুলো প্রাসাদের সমন্বয় ঘটিয়ে একটি বিশাল প্রাসাদ নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বাকিংহাম প্রাসাদের চেয়ে লক্ষ্মী বিলাস প্রাসাদ চার গুন বড়।

 

লক্ষ্মী বিলাস প্রাসাদের দরবার হলে মাঝে মধ্যে সংগীতানুষ্ঠানসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। হলটির মেঝেতে আয়নার মতো মুখ দেখা যায়। জানালাগুলো বেলজিয়াম কাঁচের তৈরি এবং দেয়ালগুলো মোজাইকের কারুকাজ করা। দরবার হলের বাইরে একটি মনমুগ্ধকর পানির ফোয়ারা আছে। প্রাসাদে অনেক প্রাচীন অস্ত্র এবং ফেলিসির তৈরি ব্রোঞ্জ, মার্বেল এবং টেরাকোটার মূর্তি সংরক্ষিত আছে। প্রাসাদটি ৭০০ একর জমির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এটি অনেকগুলো দালান নিয়ে গঠিত। যার মধ্যে মতিবাগ প্রাসাদ এবং মহারাজা ফতেহ সিং জাদুঘর অন্যতম। জাদুঘরের কক্ষটি মহারাজার সন্তানদের বিদ্যালয় তৈরির জন্য নির্মিত হয়েছিল। এতে বহু রাজকীয় পরিবারের ব্যবহৃত শিল্পকর্ম আছে, যার মধ্যে রাজা রবি বর্মার চিত্রকর্ম অন্যতম। প্রাসাদ প্রাঙ্গণে অসংখ্য লেঙ্গুর (এক প্রজাতির বানর) এবং ময়ূর দেখা যায়।

   

প্রাসাদের বর্ধিত অংশে একটি ছোট চিড়িয়াখানা আছে। এখানে কুমিরভর্তি একটি ছোট পুকুর রয়েছে।

 

সোমবার এবং সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রাসাদটি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকে।

 

লুক্সেমবার্গ প্রাসাদপ্রথমে বলা ভালো, লুক্সেমবার্গ প্রাসাদটি ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অবস্থিত, লুক্সেমবার্গে নয়। বিখ্যাত ফরাসি স্থপতি সালোমন ডি ব্রোসি এই প্রাসাদের নকশা তৈরি করেন। ফ্রান্সের ত্রোদশ রাজা লুইসের মা মেরি ডি মেডিসিসের জন্য প্রাসাদটি তৈরি করা হয়। ১৬১৫ থেকে ১৬৪৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে প্রাসাদটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়।

 

১৭৯৯ থেকে ১৮০৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে জিন চালগ্রিন প্রাসাদটি সংস্কার করান এবং আইন প্রণয়নকারীদের ভবন হিসেবে ঘোষণা দেন। তিনি প্রাসাদের দ্বিতীয় তলার সিনেট চেম্বার সরিয়ে সেখানে সিঁড়ি তৈরি করেন। প্রাসাদের অভ্যন্তরে একটি চ্যাপেল ধ্বংস করেন  এবং পার্শ্ববর্তী সব ছাদ বন্ধ করে দিয়ে সেখানে পাঠাগার স্থাপন করেন।

 

অ্যালফোনসি ডি গিসোর্স ১৮৩৫ থেকে ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রাসাদটির নতুন নকশা করেন। তিনি সদর দরজার নকশা পরিবর্তন করেন এবং একটি সমান্তরাল বাগান তৈরি করেন। ফলে ১৭ শতকের প্রাসাদটি দেখে প্রথমে অচেনা মনে হয়।

 

১৯৪৬ সালে লুক্সেমবার্গ প্রাসাদে প্যারিস শান্তি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৫৮ সালে পঞ্চম রিপাবলিকের ফরাসি সিনেট হিসেবে প্রাসাদটি ব্যবহার করা হয়।

 

লেখক : শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫/রাসেল পারভেজ