নির্বাচন

নরসিংদীতে প্রথম নারী মেয়র প্রার্থী

নরসিংদী প্রতিনিধি : প্রতিষ্ঠার ৪৩ বছরের মধ্যে এই প্রথম নরসিংদী পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ফারজানা আক্তার নামের এক নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পেশায় তিনি একজন গৃহিণী। ন্যাশনাল পিপলস পাটির (এনপিপি) থেকে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি নারী ও শিশুদের নিয়ে কাজ করতেই পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন তিনি।নারী ভোটারসহ জেলা পর্যায়ের নারী নেত্রীরা মনে করছেন, ফারজানা মেয়র পদে নির্বাচন করছেন, এটি দেখে নারীরা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আরো সাহসী হয়ে উঠবেন।পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, শিল্পসমৃদ্ধ জেলা বলে খ্যাত ১ হাজার ১৩৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তন নিয়ে তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ মহকুমা থেকে ১৯৮৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি গঠিত হয় নরসিংদী জেলা। এ জেলার সর্ব প্রথম ঘোষিত পৌরসভার নাম নরসিংদী। ১৯৭২ সালে ১০.৩২ বর্গ কি. মি. আয়তন বিশিষ্ট ৩৩টি মহল্ল¬া নিয়ে গঠিত হয় পৌরসভাটি। পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এ পর্যন্ত মেয়র পদে এই পৌরসভায় কোনো নারীর দায়িত্ব পালন তো দূরের কথা, কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করেননি। এবারই প্রথম ফারজানা আক্তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, এ নির্বাচনে নরসিংদী পৌরসভায় মেয়র পদে ফারজানা আক্তার ছাড়া আরো ৪ জন প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. কামরুজ্জামার কামরুল, বিএনপির প্রার্থী মো. সাইফুল ইসলাম সোহেল, স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম কাইয়ূম ও জাতীয় পার্টির (জেপি) মো. সাদেকুর রহমান সাদেক।এ পৌরসভায় মোট ভোটার রয়েছে ৮৭ হাজার ২৩ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৪৩ হাজার ৩৭৮ জন ও নারী ভোটার ৪৩ হাজার ৬৪৫ জন।ফারজানা জানান, ১৯৯০ সালে মাধ্যমিক পাস করে তিনি নরসিংদী সরকারি কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৯৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক ও ১৯৯৬ সালে বিএ পাস করেন। ২০১০ সালে যশোরের সেনাবাহিনীর সৈনিক জিল্লুর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তার স্বামী সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে বর্তমানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ২০১৪ সালের জুন মাসে ন্যাশনাল পিপলস পার্টিতে যোগ দিয়েই জেলা কমিটির নারী বিষয়ক সম্পাদকের পদ পান। স্থানীয়ভাবে নারী ও শিশু নির্যাতন নিয়ে কাজ করছেন দীর্ঘ দিন ধরে।ফারজানা আক্তারের হলফনামায় দেখা যায়, গৃহিণী হিসেবে তার নিজের কোনো আয় নেই। তবে স্বামীর চাকরি থেকে আয় দেখিয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। প্রার্থীর পরিবারের কোনো দায়দেনা নেই। অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে রয়েছে ২০ হাজার টাকা, ব্যাংকে পাঁচ হাজার টাকা, পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকারসহ ঘরের আসবাব। স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে বাবার বাড়ি থেকে পাওয়া ৩ শতাংশ জমির ওপর তিন কক্ষের একটি টিনশেড ভবন।ফারজানা আক্তার বলেন, ‘আমি যে তরোয়া মহল্লায় বাস করি, সেখানে নিম্ন আয়ের লোকজনের বাস। তাদের মধ্যে শিক্ষা ও আধুনিক পরিবেশের যথেষ্ট অভাব। আর এসব কারণে তারা বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এই বোধ থেকেই একজন জনপ্রতিনিধি হওয়ার ইচ্ছা আমার।’ফারজানার নির্বাচনী প্রতীক আম। এ প্রতীকে ভোটারদের ভোট ও সহযোগিতা কমনা করে মাঠে আছেন।

 

রাইজিংবিডি/নরসিংদী/১৯ ডিসেম্বর ২০১৫/গাজী হানিফ মাহমুদ/সাইফুল