সারা বাংলা

শিস দেওয়ার কৌশল

আফরিনা ফেরদৌস : আনন্দ প্রকাশের জন্য অনেকেই শিস দিয়ে থাকেন। মুখে আঙুল দিয়ে এবং আঙুল ছাড়া- দুইভাবে শিস দেওয়া হয়ে থাকে।

 

কোনো অনুষ্ঠানে কারো পারফরম্যান্সে খুশি হয়ে তাকে সাধুবাদ জানাতে অনেকে মুখে আঙুল দিয়ে শিস দিয়ে থাকে। অন্যদিকে আঙুল ছাড়া শিস হচ্ছে সর্বাধিক ব্যবহৃত শিস। এ ধরনের শিসে বাশির সুরের মতো বিভিন্ন সুরও তোলা যায়।

 

শিস সহজেই আপনার মনোযোগকে কেড়ে নিতে পারে, আপনার ব্যস্ততার মধ্যে থেকেও। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন, কিছু মানুষ কীভাবে এতো সুন্দর করে স্পষ্ট শিস দিতে পারে। আবার অপর পক্ষে অনেকেই ঠিকভাবে শব্দও তৈরি করতে পারেন না।

 

শিস দেওয়া কিন্তু খুব কঠিন কাজ নয়। আপনি যদি এতে পারদর্শী হতে চান তাহলে আপনাকে এটি বার বার চর্চা করতে হবে এবং মেনে চলতে হবে কিছু কৌশল।

 

জিহ্বার সাহায্যে যেভাবে শিস দেওয়া যায়

যখন আপনি প্রথমবারের মত জিহ্বার সাহায্যে শিস বাজানোর চেষ্টা করবেন তখন তো অনেক ভুলই হবে। আঙুলের সাহায্য ছাড়া শিস বাজানো সম্পূর্ণভাবে শিখে উঠবার আগে আপনাকে এরকম অনেক ভুল স্বীকার করতে হবে। আসুন দেখে নেয়া যাক কীভাবে আঙুলের সাহায্য ছাড়া শিস বাজানো যায়।

 

* একটু পানি পান করুন যাতে আপনার মুখে হালকা ভেজা ভাব থাকে।

* আপনার ঠোঁটগুলো দ্বারা ‘0’ আকৃতি তৈরি করুন।

* ঠোঁটের আকৃতিটি আধা ইঞ্চির মত বড় করুন।

* মুখের কোণে এমন একটি চিত্র ধারণ করুন যাতে আপনার ঠোঁট স্বতন্ত্রভাবে মুখের সামনে ও পিছনে নড়াচড়া করতে পারে।

* আপনার জিহ্বাকে অবশ্যই আপনার সামনের দাঁতের নিচে যে শক্ত স্তর রয়েছে সেটি স্পর্শ করতে হবে।

* আপনার জিহ্বাকে বাতাস মুখে ভরে নিয়ে শক্ত করে টেনে সমান্তরাল অবস্থায় রাখুন। আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যেন আপনার জিহ্বা মুখের ভেতরে আর কোনো বাতাস ঢুকতে না দেয়।

 

এবার আস্তে করে ভেতরের বাতাসগুলোকে জিহ্বার সাহায্যে দুই ঠোঁটের মাঝখান দিয়ে বের করে দিন। এটি আপনাকে সুর তৈরি করতে সাহায্য করবে। 

 

এই ধাপ গুলো অনুসরণ করে আপনি মুখের সাহায্যে শিস বাজাতে পারেন। তবে আপনাকে অনেক চর্চা করতে হবে। আপনি শব্দের গতি কম বেশি করার জন্য মুখে সামান্য পরিবর্তন করতে পারেন। যেমন:

 

* শব্দের জোর বা গতি পরিবর্তন করতে আপনি জিহ্বার অগ্রভাগের সরু অংশ ব্যবহার করতে পারেন।

* আপনি শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমেও শব্দের গতি বাড়াতে বা কমাতে পারেন।

* সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য আপনি আপনার ঠোঁটের আকৃতি বদলাতে পারেন।

 

মুখ দিয়ে শিস বাজানোর ব্যাপারে আরেকটি বড় ব্যাপার হলো মুখে বাতাস যাতে ঠিকঠাক ভাবে বের করতে পারে। একটা লম্বা সুর তৈরি করার জন্য আপনার যে পরিমাণ বাতাস মুখে দরকার তা একবারে নিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। তাই আপনাকে এটিও চর্চা করতে হবে যে কীভাবে একটি সুর তৈরির সময় কোনো প্রকার ব্যাঘাত না ঘটিয়ে বাতাস মুখে আনা নেওয়া করা যায়।

 

কয়েকটি ভিন্ন ধরনের সুর

আপনি যখন মুখ দিয়ে শিস বাজানোর মূল মন্ত্রটি জেনে যাবেন তখন আপনি নিয়েই এই মুখের সাহায্যে আরো কয়েক ধরনের সুর তৈরিতে সক্ষম হবেন। যেমন:

 

ভাইব্রেটো

এই পদ্ধতিটি আপনার সুরকে আরো গভীর এবং উষ্ণ করে তুলতে পারে যা আর কোনো সুর পারে না। তবে সাবধান থাকতে হবে তা না হলে যেকোনো মুহূর্তে আপনার সুর বদলে ও অনির্দিষ্ট হয়ে যেতে পারে।

* ভেতর অথবা বাহির পাশ দিয়ে শিস বাজাতে শুরু করুন।

* ধীরে ধীরে আপনার জিহ্বার মধ্যভাগকে গালের ভেতরের ওপরের অংশে লাগানোর চেষ্টা করুন।

* ধীরভাবেই বাতাসকে বাইরে ঠেলতে থাকুন। আর আপনার জিহ্বাকে ওপরে এবং নিচে করতে থাকুন। এটি আপনার সুরের মাঝখানে একটি ভাইব্রেশন তৈরি করবে।

 

দুই আঙুলের সাহায্যে শিস দেওয়া

আঙুলের সাহায্যে শিস বাজানোর জন্য সাধারণত বৃদ্ধা এবং তর্জনী আঙুল ব্যবহার করা হয়।

* বৃদ্ধা এবং তর্জনী আঙুল দুইটি এক অপরের মাথা স্পর্শ করে রাখবে।

* আপনার ওপরের ঠোঁটকে এমনভাবে বাকান যেন মনে হয় এটি আপনার ওপরে দাঁতকে ঢেকে রেখেছে।

* দুই আঙুলের বন্ধনিটি নিচের ঠোঁটের ওপর রাখুন এবং তা জিহ্বার যে অংশটি ধাক্কা দেয় তাকে যেন স্পর্শ করে।

* আঙুল দুইটিকে ‘V’ আকৃতি করে ঠোঁটের ওপর রাখুন। যার মধ্যভাগ দিয়ে বাতাস প্রবাহিত করবেন।

* ভেতর থেকে বাতাস বাইরের দিকে চাপ দিতে থাকুন। দেখবেন সুর তৈরি হতে শুরু করেছে।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ জুলাই ২০১৬/ফিরোজ