খেলাধুলা

বিরাট কোহলির সাক্ষাৎকার : পর্ব-২

মো. নুরুল আমিন : উপমহাদেশ বড়ই বিচিত্র জায়গা। আবেগপ্রবণ উপমহাদেশের মানুষের আবেগ যেন মাত্রা ছাড়িয়ে যায় পছন্দের তারকাকে চোখের সামনে পেলে। ধরুন ইংল্যান্ডের রাস্তায় ঘুরতে বের হয়েছেন জো রুট কিংবা অ্যালিস্টার কুক। ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকলে দু’চারজন হয়তো তাদের চিনতে পারে। চিনতে পারলে বড়জোর তা হাই-হ্যালো পর্যন্ত গড়ায়।

 

কিন্তু বিরাট কোহলির মতো উপমহাদেশীয় তারকার বেলায় ব্যাপারটা সম্পূর্ণ আলাদা। উন্মুক্ত রাস্তায় হাঁটতে বের হওয়া তো দূরের কথা কোন স্থানীয় রেস্টুরেন্টে ডিনারে যাওয়াটাও রীতিমত যুদ্ধযাত্রার মতো ব্যাপার। চাইলেই করতে পারেন না অনেক কিছু। যেখানেই যান ভক্তদের ভীড়।

 

মাঠের খেলার বাইরের এই জগতটাকে কিভাবে সামলান ভিরাট কোহলি? সম্প্রতি ব্রিটিশ দৈনিক ‘দ্যা টেলিগ্রাফ’কে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাতকারে মাঠ ও মাঠের বাইরের এমন অনেক কিছু নিয়েই কথা বলেছেন ভারতীয় টেস্ট অধিনায়ক। সেই সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ রাইজিংবিডির পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল। আজ প্রকাশিত হল দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব:

 

প্রশ্ন: দলে কি ধরনের উন্নতি চান?

কোহলি : দেশের বাইরে আরো বেশি বেশি সিরিজ জিততে চাই, শুধু একটি দুটি দেশে নয় সব জায়গায় আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে চাই।

 

প্রশ্ন: আপনার প্রথম ক্রিকেট ব্যাটের কথা মনে আছে?

কোহলি : হ্যাঁ, আরএনএস লারসন্স এর একটি ব্যাট, ১ হাজার রূপি দিয়ে কেনা। সে সময় মানসম্মত জিনিস পাওয়া খুব কঠিন ছিল। সাথে আর্থিক টানাপোড়েন তো ছিলই।

 

প্রশ্ন: আপনি সবসময় বলে এসেছেন শচীন টেন্ডুলকার আপনার আদর্শ। তার সম্বন্ধে কিছু বলুন।

কোহলি : আমার ছোটবেলা কেটেছে শচীনকে ব্যাট করতে দেখে। যাকে দেখে এই খেলার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়েছে তার সঙ্গে ড্রেসিং রুম শেয়ার করার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। মানুষ আমাকে তার সাথে তুলনা দিচ্ছে এটিও অনেক গর্বের। ২০১৪ সালে ইংল্যান্ড খুব বাজে একটি সফর কাটানোর পর শচীন ব্যক্তিগতভাবে আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন যা পরবর্তীতে কাজেও দিয়েছে বেশ ভালোভাবে।

 

প্রশ্ন: সাম্প্রতিক সময়ে আপনাকে বিভিন্ন ব্যক্তিগত মাইলস্টোন যেমন সেঞ্চুরি, হাফসেঞ্চুরি ইত্যাদি উদযাপনে অনেকটাই সংযত দেখা যায় তার কারণ কী?

কোহলি : আমি ভাবি, আমাকে কেন বাছাই করা হয়েছে? আমাকে তো এগুলো করার জন্যই দলে রাখা হয়েছে। এসব করাই তো আমার কাজ। একটি সেঞ্চুরি করতে পারা মানে আমি আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পূরন করলাম। সুতরাং এতো উত্তেজনার কী দরকার আছে!

 

প্রশ্ন: নিজের কোন দিকটি উন্নতি করতে চান?

কোহলি : আমি ব্যক্তিগতভাবে একদমই চাপা স্বভাবের নই। মাঠে কোন বিষয়ে উত্তেজিত হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে হতাশা কোন অভিব্যক্তিই আমি লুকাতে পারি না। এর থেকে বেরিয়ে আসতে চাই।

 

প্রশ্ন : আইপিএলকে কিভাবে দেখেন?

কোহলি : খেলার কথা বাদ দিলেও আইপিএল অপেক্ষাকৃত তরুণদের জন্য একটি বড় প্লাটফর্ম। আইপিএলে দেশি-বিদেশি বড় তারকাদের সাথে ড্রেসিং রুম শেয়ার করতে করতে আপনি খুব সহজেই আপনার আন্তর্জাতিক মঞ্চের ভীতি কাটিয়ে উঠতে পারেন। সেলফি তোলা, হাসি তামাশার মাধ্যমে এ ধরনের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়াটাকে আইপিএল আরো সহজ করে দিয়েছে।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ জানুয়ারি ২০১৭/মো. নুরুল আমিন/আমিনুল