লেখাপড়ার পাশাপাশি কাজ করেন খেতে-খামারে। বাবা পুতুল চন্দ্র সরকার আগে রংপুর শহরে ভাড়ায় রিকশা চালাতেন। তিন বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে এখন বাবা শয্যাশায়ী। মা মালতী রানী অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনো মতে সংসার চালান। এত দরিদ্র সংসারেও তার পড়ালেখার স্বপ্ন সুদূরপ্রসারী। এই স্বপ্নবাজ ছেলেটি হলেন রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার রহিমাপুর খিয়ারপাড়া গ্রামের তাপস সরকার।
পারিবারিক দৈন্যদশা ও দারিদ্রতা জয় করে এবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে 'সি' ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ২৯তম স্থান অধিকার করেন তাপস। কিন্তু ভর্তির সুযোগ পেলেও কপালে চিন্তার ভাঁজ। আগামী ৫ জানুয়ারির মধ্যে ভর্তিপ্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। কিন্তু টাকার অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেন কিনা, সে বিষয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন তাপস ও তাঁর পরিবার।
'সুযোগ পেয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় তাপস' এই শিরোনামে সংবাদটি একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর রংপুর জেলা পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকারের নজরে আসে। তিনি মানবিক দিক বিবেচনায় তাপসের ভর্তি ও পড়াশোনার সকল দায়িত্ব নেয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রংপুর জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ভর্তি বাবদ তাপস সরকারকে নগদ ১৫ হাজার টাকা প্রদান করেন পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার। এছাড়াও তিনি তার পড়াশোনার সকল দায়িত্ব নেন।
পুলিশ সুপার বিপ্লব সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাপস বলেন, ‘আমার পরিবারের সামর্থ্য ছিলো না আমাকে ভর্তি করানোর। আমি অনেক খুশি।’
তাপস সরকার তারাগঞ্জ উপজেলার ঘনিরামপুর বড়গোলা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০১৬ সালে বিজ্ঞান বিভাগে মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৪.৮৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর ২০১৮ সালে তারাগঞ্জ ও/এ ডিগ্রি কলেজের বাণিজ্য বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পান জিপিএ-৪.৮৩। এনএসইউ/হাকিম মাহি