খেলাধুলা

দুবাই থেকে সিঙ্গাপুর

আমিনুল ইসলামঢাকা, ২ ফেব্রুয়ারি : সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে সিঙ্গপুরের দুরত্ব ৫ হাজার ৮৩৬ কিলোমিটার। মরুর দেশ দুবাই থেকে শান্তির দেশ সিঙ্গপুরের দুরত্ব যেমন ক্রমশ বেড়েছে তেমনি ক্রিকেটের তিন মোড়ল (ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড) এবং তাদের বিরোধিতাকারীদের মধ্যকার দূরত্বও বেড়েই চলছে।ক্রিকেটীয় সম্পর্কের মাধ্যমে সে দুরত্ব ঘোচানোর চেষ্টা ইতিমধ্যে অনেকাংশেই ব্যর্থ হয়েছে। এবার দুরত্ব ঘোচানোর জন্য কূটনৈতিক সম্পর্কের আশ্রয় নেয়া হচ্ছে। ঘুচবে কি দুরত্ব? আইসিসি যে ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর একটি যৌথ পরিবার, সেটা টিকে থাকবে তো? নাকি ভাঙনের স্রোতে ভেঙে যাবে? গঠিত হবে এক বা একাধিক পরিবার? এমন হাজারো প্রশ্ন নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুরে বসবে আইসিসির বর্ধিত বোর্ড সভা। সেই সভা থেকেই বোঝা যাবে আসলে কি হতে যাচ্ছে। তার আগে নজর দেয়া যাক কি আলোচনা বাকি রয়েছে সিঙ্গাপুরের জন্য। জানুয়ারির ২৮ এবং ২৯ তারিখ তিন মোড়লের দেয়া ২১ পৃষ্ঠার খড়সা প্রস্তাবের বেশকিছু বিষয় সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। বেশকিছু বিষয় পরিবর্তন করে উপস্থাপন করা হয়েছে পজিশন পেপার। আর সেই পরিবর্তিত পজিশন পেপার নিয়ে তিন মোড়লের বিরোধিতাকারীরা দেশে ফিরে গেছেন।নিজ দেশের ক্রিকেট বোর্ডের অন্যান্য সদস্য এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিবর্তিত প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট নিয়েই সিঙ্গপুর যাবেন বোর্ড কর্মকর্তারা। সেখানেই জানানো হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। আর বৈঠক শেষেই জানা যাবে প্রস্তাবগুলোর ভাগ্যে কি জুটেছে।এদিকে শোনা যাচ্ছে তিন মোড়ল ইতিমধ্যে সাতটি দেশকে নিজেদের বগলদাবা করতে পেরেছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি জাকা আশরাফের অভিযোগ বাংলাদেশও ভারতের চাপের মুখে গোপনে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন দেশে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন ভারত তার উপর কোনো চাপ প্রয়োগ করেনি। জাকা আশরাফ বলেন, ‘তারা (বাংলাদেশ) তাদের স্বার্থ দেখেছে। কিন্তু আমাদেরকে দেখতে হবে এটা আসলে স্বল্প মেয়াদি স্বার্থ নাকি দীর্ঘমেয়াদি। আমরা আসলে সেটাই দেখব যেটা আমাদের বোর্ড এবং দেশের জন্য ভালো।’বাংলাদেশ দ্বিস্তর বিশিষ্ট টেস্ট পদ্ধতি চালুর বিরুদ্ধে তাদের শক্ত অবস্থানের কথা জানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু পাস না হওয়া বাকি প্রস্তাবগুলোর বিপক্ষে বাংলাদেশের অবস্থান এখনো পরিস্কার নয়। আর সে কারণেই তিন মোড়লের বিরোধিতাকারী বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে কিছুটা মনোমালিন্য সৃষ্টি হতে পারে।তবে সিঙ্গাপুরের বোর্ড সভার ভাগ্যে যাই জুটুক না কেন বাংলাদেশের ভাগ্যে টেস্ট খেলার সুযোগ জুটেছে। কিন্তু সেই ভাগ্য কতদিন বাংলাদেশের সঙ্গী হয়ে থাকবে সেটাই এখন বিরাট এক ঝুলন্ত প্রশ্নচিহ্ন।তিন মোড়ল দুবাইতে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় আইসিসির অর্থনৈতিক এবং প্রশাসনিক দায়িত্বগুলো হাতিয়ে নিয়েছে। আর সে কারণে আইসিসির প্রায় সব ধরণের ক্ষমতাই তিন মোড়লের কাছে কুক্ষিগত হতে যাচ্ছে। সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে তিন মোড়লের হাতে তুলে দেয়ার অনুষ্ঠান হিসেবেই গণ্য করা যায় সিঙ্গাপুরের সভাকে।

সেখানে হয়তো দশ পরিবার নিয়ে গঠিত আইসিসি নামক যৌথ পরিবার ভেঙ্গ যেতে পারে। কারণ ভাঙনের সুর ইতিমধ্যে যে বেজে উঠেছে।

 

রাইজিংবিডি / আমিনুল