খেলাধুলা

কলকাতায় ‘ময়না’র সুযোগ কতটুকু?

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) শুরু থেকেই কী সাকিব আল হাসানকে দেখা যাবে কলকাতা নাইট রাইডার্সের একাদশে? সাকিব কী হতে পারবেন চার বিদেশী ক্রিকেটারদের একজন! কলকাতার বিদেশী সংগ্রহ বেশ শক্তিশালী। সাকিব তাদের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু সাকিবের সেরা চারে থাকার সুযোগ এবং সম্ভাবনা কতোটুকু?

তিন মৌসুম পর সাকিব আল হাসানকে পেয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সের টুইট, ‘আমাদের ময়না ঘরে ফিরে আসছে।’ নিলাম থেকে বাংলাদেশের সুপারস্টারকে ৩ কোটি ২০ লাখ রুপিতে কিনে নেয় শাহরুখ খানের কলকাতা। এ দলের হয়ে ২০১২ এবং ২০১৪ সালে দুইবার শিরোপাও জিতেছিলেন সাকিব।

সাকিবের সঙ্গে কলকাতার সম্পর্ক বেশ পুরোনো। এই দলটির সঙ্গে ২০১১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত শাহরুখ খানের দলে ছিলেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার। এই সাত আসরের মধ্যে ছয়টিতে খেলেছিলেন। সাত মৌসুম পর ২০১৭ সালে সাকিব আল হাসানকে ছেড়ে দিয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। ২০১৮ সালে বাংলাদেশের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার খেলেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদে। দুই বছর পর আবারও আইপিএলে ফিরছেন তিনি। ফিরছেন কলকাতার জার্সিতে।

কোয়ারেন্টাইন এবং আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শেষে সাকিব রোববার থেকে অনুশীলন শুরু করেছে। চেন্নাইয়ে সাকিবদের প্রথম ম্যাচ সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে। সকল জল্পনা-কল্পনা ঘিরে প্রথম ম্যাচ। সাকিব কী শুরু থেকেই থাকবেন?

সাকিবসহ কলকাতায় বিদেশী ক্রিকেটার রয়েছেন এউয়ন মরগ্যান, আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারিন, প্যাট কামিন্স, বেন কাটিং, লোকি ফার্গুসন, টিম সাইফার্ট। এই আটজনের যে কোনো চারজন খেলবেন একাদশে। আনন্দবাজারের খরব, শুরুর দিকে কলকাতার চার বিদেশী নিশ্চিত। অধিনায়ক মরগ্যান, প্যাট কামিন্স ও আন্দ্রে রাসেলের বিকল্প দেখেন না তারা। থাকবেন সুনীল নারিনও । যদি এরকমই একাদশ হয় তাহলে শুরুর দিকে সাকিবকে দেখা যাবে না একাদশে।

নারিনের সঙ্গে সাকিবের মূল প্রতিযোগিতা। নারিন মূলত স্পিনার হলেও ওপেনিংয়ে নেমে পিঞ্চ হিটিংয়ে বেশ চমক দেখিয়েছেন। যদিও গত আসরে তার ব্যাটিং-বোলিং কোনটাই ভালো ছিল না। ব্যাটিংয়ে মাত্র ১২১ রান। বল হাতে ৫ উইকেট। তবুও তাকে ধরে রেখেছে কেকেআর। কেকেআরে দশ বছর কাটিয়ে দেওয়া ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারে পূর্ণ আস্থা থাকলেও সাকিবের দিকে নজর রয়েছে দলটির।

নিলাম থেকে সাকিবকে কেন নিয়েছিল দল। তা জানিয়েছেন কলকাতার পারফরম্যান্স এবং স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিস্ট এআর শ্রীকান্ত। তার ভাষ্য, ‘আমরা যখন নিলাম নিয়ে আলোচনা শুরু করি এবং নিলামে কোন খেলোয়াড়কে নেবো কিংবা বিকল্প চিন্তা করে রাখবো সেখানে একটি নাম বারবার এসেছে, সাকিব আল হাসান। দলে তার প্রভাব বলার বাইরে। সে ব্যাটিং করতে পারে, বোলিং করতে পারে এবং তার নেতৃত্বগুণও রয়েছে। বিশেষ করে আমাদের তিনজন প্রথম সারির খেলোয়াড়ের বিকল্প সে। যেমন সুনীল, আন্দ্রে রাসেল ও মরগ্যান।’

হয়তো শুরু থেকে সাকিবকে সাইডবেঞ্চে থাকতে হতে পারে। কিন্তু সাকিব সুযোগ পাবেন না এটা বলা কঠিন। ক্রিক ইনফোর মতে, কলকাতার প্রথম তিন ম্যাচ চেন্নাইয়ে। সেখানে দুই বিশেষজ্ঞ স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী এবং সাকিব আল হাসান কলকাতার জন্য বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে নারিনের পরিবর্তে বিশেষজ্ঞ কোনো ওপেনার পাঠিয়ে কলকাতা সাকিবকে নিয়েই মাঠে নামতে পারে।    

তবে অনুশীলন পর্ব দেখে এমনটা মনে করছেন না অনেকেই। কারণ নাইটদের নেটে কিন্তু ক্যারিবিয়ান স্পিনারকে ব্যাট হাতে ছক্কা মারার অনুশীলন করতে দেখা গিয়েছে। সেটা একদম অনুশীলনের শুরুতেই। মূল পরিকল্পনায় না থাকলে এরকমটা হয় সামান্যই। নারিনের ‘পিঞ্চহিটিং’ ফটকা ফের কাজে দেয় কি না তা দেখার।

ভোটাভুটিতে সাকিব কিন্তু আবার এগিয়েই আছেন। ক্রিক ইনফো জানতে চেয়েছিল, স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে কে হতে পারে কলকাতার প্রথম পছন্দ। সাধারণ দর্শকদের ৭৫ শতাংশ ভোট পড়েছে সাকিবের পক্ষে ২৫ শতাংশ পেয়েছেন নারিন।

সাকিব যেবার শেষ আইপিএল খেলেছেন সেবার ম্যাচ খেলেছেন মাত্র ৩টি। দলের বাইরেই বেশি সময় থাকতে হয়েছে তার। তবে সেই সময়টায় নিজেকে দারুণভাবে গড়েছেন ২০১৯ বিশ্বকাপের জন্য। এবারও সাকিব একাদশে না থাকলেও নিশ্চিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেবেন।