বিনোদন

‘উত্তম কুমার মেয়েদের দেখলেই খেয়ে ফেলতেন না’

বাংলা চলচ্চিত্রের ‘মহানায়ক’ খ্যাত অভিনেতা উত্তম কুমার। কিংবদন্তি এই অভিনেতা অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য সফল চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন। তার সঙ্গে জুটি বেঁধে অনেকে পেয়েছে তারকা খ্যাতি। ব্যক্তিগত জীবনে উত্তম কুমারের নাম জড়িয়েছে অনেক জনপ্রিয় নায়িকার সঙ্গে। এসব বিষয় নিয়ে নানা মুখরোচক কথা প্রচলিত রয়েছে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। আরো পড়ুন:  উত্তম কুমারের প্রেমে সংসার বিবাগী সাবিত্রী উত্তম কুমারকে পাইনি বলে বিয়ে করিনি তা নয় : সাবিত্রী

ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শকুন্তলা বড়ুয়া। ১৯৭৯ সালে ‘সুনয়নী’ সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেন। এ সিনেমায় তার নায়ক ছিলেন উত্তম কুমার। এরপর অনেক চলচ্চিত্রে একসঙ্গে কাজ করেছেন তারা। উত্তম কুমারের নানা বিষয় নিয়ে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমে কথা বলেছেন ‘সুনয়নী’ খ্যাত অভিনেত্রী শকুন্তলা বড়ুয়া।

তার দৃষ্টিতে উত্তম কুমার ছিলেন হিমালয়। শকুন্তলা বলেন—‘আমার চলচ্চিত্র জীবনের প্রথম নায়ক উত্তম কুমার। তারপর প্রচুর নায়কের সঙ্গে কাজ করেছি। কিন্তু দ্বিতীয় কাউকে বলতে পারব না যিনি উত্তমকুমারের ধারেকাছে এসেছেন। উত্তম কুমারের গাম্ভীর্য, হাঁটাচলা, মেপে মেপে কথা বলা। এখনকার হিরোরা তো সবাই চিৎকার করে কথা বলেন। আজকাল গাড়ি থেকে নেমেই আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে ‘হাই’ বলে একটা লাফ দেয়। যদি প্রশ্ন করা হয়, কেন চিৎকার করে কথা বললে আর লাফ দিলে? যাতে তোমাকে মিডিয়া দেখতে পায় এই তো! আর উত্তম কুমার ছিলেন হিমালয়। উনি সবসময় গাড়ি থেকে নেমে নিচের দিকে তাকিয়ে হেঁটে যেতেন। কারণ উনি ছিলেন উপরের মানুষ। উনাকে সবাই মাথা উঁচু করে দেখতো। এ কারণেই উত্তম কুমারের বিকল্প আজও এলো না আসবেও না।’

উত্তম কুমারের সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে কখনো প্রেমে পড়েননি? এমন প্রশ্নের উত্তরে শকুন্তলা বলেন—‘আমি যখন যে চরিত্রে অভিনয় করেছি, তখন তার মধ্যেই থাকতাম। ওই সময়ে আমি মিসেস বড়ুয়া নই। ‘রাজনন্দিনী’ সিনেমায় উত্তম কুমারের সঙ্গে কাজ করছি, তখন আমি বাইজি। তখন উনি আমার প্রেমিক। মনপ্রাণ দিয়ে সেটুকুই করেছি। আমি উত্তম কুমারকে দাদা বলে ডাকতাম। আমার প্রথম সিনেমায় উনি দাদা ছিলেন। সেই দাদা-বোনের সম্পর্কটা জীবনের শেষদিন পর্যন্ত একই ছিল। এটা সত্যি উনার জন্য মেয়েরা পাগল হয়ে যেত। আমি নিজের চোখে দেখেছি। শুট করছি। আমি আর উত্তমদা খাটে পাশাপাশি বসে আছি। সামনে অনেক ক্যামেরা। একটি মেয়ে দৌড়ে এসে পেছন দিয়ে খাটে উঠে আমাদের দুজনের মাঝখানে মুখটা গলিয়ে দিল। দাদার ঘাড়ের পাশে মেয়েটির মুখ। ওই যে আমাদের ছবি তোলা হচ্ছে ওরও ছবিটা উঠে গেল। আমি তখন বুঝতে পেরেছি দাদার ইমেজ নিয়ে কেন রটনা রটে।’ 

উত্তম কুমারকে নিয়ে যত রটনা শোনা যায় তার জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দায়ী মেয়েরা। বিষয়টি উল্লেখ করে শকুন্তলা বলেন—‘আসলে উত্তম কুমার মেয়েদের দেখলেই খেয়ে ফেলতেন না। মেয়েরাই ওনাকে উত্যক্ত করত, নিজেদের সস্তা করত। আমার নিজের চোখে দেখা। আর উনি নির্বিকার থাকতেন বা জোর গলায় বলতেন, একটু সরে যান। আর অন্যদিক দিয়ে ভাবতে হলে যদি কোনো মেয়েকে কিছু করে থাকেন রটনা রটে সেটা সেই মেয়েটার দোষ। সেও সুযোগ নিয়েছে। তুমি যদি ঘাড়ে গিয়ে পড় সে যদি সুযোগ পায় কতক্ষণ দুর্বলতা ঢেকে রাখা সম্ভব! সে কেন সুযোগ নেবে না? আমার চোখে উনি একজন আইডিয়াল মানুষ। আর আমি যখন ইন্ডাস্ট্রিতে আসি তখন অনেক বেশি সুন্দরী ছিলাম। কই উত্তম কুমার তো আমার থেকে কোনো সুযোগ নেয়নি। নেভার! বরং আগলে রেখেছেন।’