জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবল একজন অবিসংবাদিত রাজনীতিবিদই ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন অনন্যসাধারণ রাষ্ট্রনায়ক। তার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পররাষ্ট্রনীতি বহির্বিশ্বে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তৈরিতে অতুলনীয় ভূমিকা রেখেছে। ‘সকলের প্রতি বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বিদ্বেষ নয়’- এই নীতি এখনো বাংলাদেশের জন্য সমানভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে আছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) বিলিয়া প্রাঙ্গনে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধনকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিলিয়া চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন বিলিয়া পরিচালক ড. মিজানুর রহমান। বিলিয়া প্রাঙ্গনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যোগদান করেন মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. জমির, আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আরিফুজ্জামান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. ক্রিস্টিন রিচার্ডসন, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আরও বলেন, পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক গবেষণার জন্য তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিজীবীদের যুক্ত করে প্রতিষ্ঠা করেন দেশের প্রথম থিংকট্যাংক প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স (বিলিয়া)’। এই বিলিয়াতেই ১৯৭৩ সালের ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট-এর খসড়া প্রণিত হয়েছিল, যা পরবর্তীতে আইন আকারে পাস হয়ে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের পথ সুগম হয়েছিল। এখানেই ১৯৭৪ সালে তৃতীয় ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল ল’ কনফারেন্সের মাধ্যমে ১৯৯৮ সালের রোম স্ট্যাটিউট প্রণয়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ খসড়া প্রণিত হয়েছিল, যার ভিত্তিতে ২০০২ সালে হেগে প্রতিষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। বিলিয়ার মতো থিংকট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের নীতি প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিলিয়া পরিকল্পিত বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে এই কর্নার স্থাপন করা হয়। এছাড়া আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বক্তৃতামালা, বঙ্গবন্ধুর আইন-দর্শন ও পররাষ্ট্র-নীতি বিষয়ে বিভিন্ন গবেষণা-প্রকল্প হাতে নিয়েছে বিলিয়া। আগামী শনিবার (২৬ জুন) অনুষ্ঠিতব্য ‘বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক বক্তৃতা করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার।